হাইতির নীল শিল্পের বিলুপ্তি
হাইতির নীল শিল্পের ক্রমাবনতি হয়েছিল ধীরে ধীরে, কিন্তু হাইতির নীলের ধ্বংস নেমে এল অকস্মাৎ। সপ্তদশ শতাব্দীর শেষের দিকে হাইতির (সেন্ট ডোমিঙ্গো) ফরাসী উদ্যোক্তারা তামাক চাষ করা থেকে নীল চাষের দিকে ঝুঁকলো। অবশ্যই এতে লাভ হত বেশি কিন্তু সে হল বড় চাষীদের ক্ষেত্রে। শীঘ্রই হাইতির অর্থনীতি হয়ে পড়ল নীল নির্ভর। ১৬৯৪ সালের দিকে সব “বিদেশী নীলের” রফতানী নিষিদ্ধ করে দিল সরকার।
ফরাসী বাজারে হাইতির নীল যাতে প্রবেশ করতে পারে সেজন্যেই এই ব্যবস্থা। ফ্রান্সের হাইতির যে নীল আমদানী করা হত তার কম করে অর্দ্ধেক নীল আবার রফতানী করা হত ইউরোপের বাজারে (নেদারল্যান্ড ও জার্মেনী)।২৯ ১৭৩০ খ্রীঃ হাইতির উপনিবেশে নীলকরের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩ হাজার। এ সংখ্যা অবশ্য ওঠানামা করত।”
ফ্রান্সের সফল রফতানী বাণিজ্যে হঠাৎ নেমে এল সঙ্কট। বিশ্ব বাজারে আন্তর্জাতিক পণ্য দ্রব্য কফি নিয়ে শুরু হল তীব্র প্রতিযোগিতা। তবে কফি বাণিজ্যে চরম আঘাত নেমে এল ক্রীতদাস কফি চাষীদের বিদ্রোহের ফলে এবং এই বিদ্রোহের ফলেই ফ্রান্সের কাছে থেকে পরাধীনতার নাগপাশ ছিন্ন করে হাইতি স্বাধীনতা অর্জন করে ১৮০৪ সালে। এই সব বিদ্রোহের ফলে রফতানী বাণিজ্যের ভিত্তিভূমি একেবারে ধ্বসে পরে।
ফরাসী উদ্যোক্তাদের (কলোনস) ব্যবসা দাঁড়িয়ে ছিল ক্রীতদাস ও কেনা গোলামদের উপর। নীলের ফরাসী বাণিজ্য হঠাৎ এই যে বন্ধ হয়ে গেল সে একেবারে চিরদিনের মত। ফ্রান্স আর কখনো তা পুনরুদ্ধার করতে পারেনি। তখন থেকে তার সাবেক উপনিবেশের বাইরের দেশগুলোর উপর ফ্রান্স নির্ভর করত নীলের জন্যে।
Leave a Reply