নীল চাষের মওশুমে ধান আবাদের কাজ থাকত না। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত আমেরিকায় নীলচাষ অব্যাহত থাকে। নীল উৎপাদনকারীরা তখন বৃটিশ সরকারের আর্থিক সাহায্য পেত। উত্তর আমেরিকার নীলের মান মধ্য আমেরিকায় উৎপন্ন নীলের সমকক্ষ ছিল না, আর উৎপাদনও ছিল কম। আমেরিকায় উৎপন্ন নীল রফতানী করা হত বৃটেনে। এ ছাড়াও উত্তর আমেরিকার উপনিবেশে বাড়ছিল নীলের চাহিদা।
আমেরিকায় বৃটিশ আধিপত্যের (১৭৭০ সালের আমেরিকার বিপ্লব) তাৎপর্য হল এই যে বৃটেন আমেরিকার নীল সরবরাহের উপর তার কর্তৃত্ব হারাল। এর কিছুদিন পর বিভিন্ন কারণে উত্তর আমেরিকায় নীলের উৎপাদন ক্রমশঃ হ্রাস পেল। উত্তর আমেরিকার নীলচাষ যে সব কারণে হ্রাস পায় সেগুলো হলঃ ক্রীতদাসের উচ্চ মূল্য, জমির উর্বরতা হ্রাস ও ক্ষেতে পোকার আক্রমণ, মধ্য আমেরিকার নীলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা।
এছাড়াও উৎপাদন হ্রাসের কারণ হচ্ছে- সূতা, চিনি ও তামাকের মত অর্থকরী ফসলের আবির্ভাব। ১৮০০ সাল নাগাদ অর্থকরী রফতানী পণ্য হিসাবে উত্তর আমেরিকায় নীল হয় বিলুপ্ত।
বৃটেনের নিজের নীল
১৮০০ সালের দিকে নীলের বিশ্ব-বাজার এক সংকটে পড়ে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদনকারীরা নীলের চাষ ছেড়ে দিতে থাকে। হাইতি ও গুয়াতেমালাও অনুসরণ করে আমেরিকাকে। মার্কিন কৃষকরা অধিক লাভজনক ফসলের দিকে ঝুঁকে পড়ে। যে শ্রম ব্যবস্থার উপর হাইতির নীলচাষ দাড়িয়ে ছিল তা একেবারে ভেঙে পড়ে।
তা ছাড়া গুয়াতেমালার নীলের মান একবারে নেমে গেলে সেখানে উৎকৃষ্ট জাতের নীল উৎপাদন আর সম্ভব হয়নি। আমেরিকা ও পাশ্ববর্তী অঞ্চলের নীল সরবরাহের উপর বৃটেন নির্ভর করত বলেও ওইসব অঞ্চলের নীলের দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে বৃটেনের নীল ব্যবহারকারীরা মহা এক মুশকিলে পড়ে।
Leave a Reply