নিজস্ব প্রতিবেদক
বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, হরিজন সম্প্রদায় বৃটিশ আমল থেকে সব চেয়ে বড় স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছে। এখানে প্রায় ৫ থেকে ৭ হাজার মানুষ বাস করছে। এখানে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। সিটি কর্পোরেশনে তারা পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে কাজ করছে। এটা লক্ষ টাকার বিনিময়েও অনেকেই করতে পারবে না। এরা সব চেয়ে বেশি নিগৃহিত ও নিপিড়িত এবং অসহায়।
দেশ-রাষ্ট্র-সরকার তো তাদের পাশে থাকার কথা। দুঃখের সাথে লক্ষ করছি এই সরকার দলীয় সরকার। এই সরকার দলীয় লোকদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য কাজ করছে। তারা উন্নয়নের নামে ব্যক্তি ও দলের উন্নয়ন করছে। দেশের উন্নয়ন হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষের উন্নয়ন। এই মানুষগুলোকে রাস্তায় ঠেলে দিলে, তারা কোথায় যাবে? এ নিয়ে সরকারের কোন ভাবনা নেই। এই মানুষগুলোকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। ৫ থেকে ৬ হাজার মানুষকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে কিসের উন্নয়ন? কিছু মানুষ হয়তো দোকান-পাট করে বা ইজারা নিয়ে লাভবান হবে। দেশ এখন আওয়ামী লীগের দেশ হয়ে গেছে।
তারা সাধারণ মানুষকে মানুষ মনে করে না। তাদের সুবিধামত দেশ পরিচালনা করছে। দেশের মালিক এখন আর জনগণ নেই, তারা সরকার পরিবর্তন করতে পারে না। জনগণের কথায় সরকার কোন সিদ্ধান্ত নেয় না। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক, এই জন্যই আমরা গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করে যাচ্ছি। মানুষের প্রয়োজন যেন মেটাতে হবে, তাদের পাওনা বুঝিয়ে দিতে হবে। এ বিষয়ে আমরা গতকাল সংসদে কথা বলেছি।
আমরা বুঝতে পারছিনা সরকার আমাদের কথা রাখবে কিনা। কাল নাকি এটা ভেঙে দেয়া হবে, কথা না শুনলে চাকরিচ্যুত করা হবে। এই মানুষগুলো অত্যন্ত অসহায়। তারা দোকান দিতে পারে না, তাদের হাতে কিছু খেতে চায় না… অথচ তাদের সার্ভিস ছাড়া আমাদের জীবন অচল। মানবিক দৃষ্টি দিয়ে বিষয়টি দেখা উচিত। যেকোন ভাবে এটা ঠেকাতে আমরা চেষ্টা করবো। এটা আওয়ামী লীগের সরকার। আওয়ামী লীগের সরকার জনগণের সরকার নয়। এই সরকার আওয়ামী লীগ দ্বারা গঠিত, আওয়ামী লীগের স্বার্থ দেখার জন্য কাজ করছে। জনগণের দাবি তারা কেয়ার করছে না। উন্নয়ণের নামে বিল্ডিং করে নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করা অন্যায়।
আজ হরিজনদের পাশে থাকার লোক নেই, এদের দিয়ে ব্যবসা করা বা ভালো থাকার লোকের অভাব নেই। এটা দেশের জন্য ও সরকারের জন্য দুর্ভগ্যজনক। এই গরীর মানুষদের উচ্ছেদ করে বিল্ডিং করে ভাগ বাটোয়ারা করলে তা হবে সব চেয়ে অন্যায় এবং লজ্জার। হরিজনদের উচ্ছেদ করা হবে সবচেয়ে বড় ডাকাতি। এটা যেকোন মূল্যে বন্ধ করতে হবে।
সরকার এখন অনেক শক্তিশালী, তাদের সাথে প্রশাসন, আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে। তাদের পেশিশক্তি, অর্থশক্তি ও মাস্তানদের সামনে সাধারণ মানুষ অসহায়। সাধারণ মানুষ সংখ্যায় বেশি হলেও দানবীয় শক্তির কাছে পরাজিত হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। হরিজনদের জন্য জায়গা করে দেয়া সরকারের দায়িত্ব। শুনলাম এদের জন্য দুটি বিল্ডিং করা হয়েছে। অথচ, এখানে ৫ থেকে ৭ শো পরিবার আছে। তাদের পূনর্বাসন করতে হবে। মানুষের অধিকার দিতে হবে, না দিলে মানুষ এটা জোর করে আদায় করবে। এই অন্যায় চির দিন চলতে পারে না। সংসদে কথা বলাই সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। জোর করে এই সরকারকে বাধ্য করার মত রাজনৈতিক শক্তি আমাদের তৈরী হয়নি। আমরা প্রয়োজনে আইনগত ভাবেও সহায়তা দিয়েও সাধারণ মানুষের পাশে থাকবো।
এসময় বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদের সভাপতি কৃষ্ণলাল, পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি কৃষ্ণচরণ কুঞ্জমাল, হরিজন নেতা বায়জুলাল, জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক নির্মল দাস, জাতীয় পার্টি নেতা সাধন কুমার মিশ্র, হুমায়ুন কবির কালা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply