সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন সংস্কারপন্থী মাসুদ পেজেশকিয়ান”
ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সংস্কারপন্থী মাসুদ পেজেশকিয়ান। দ্বিতীয় দফায় অনুষ্ঠিত ভোটে কট্টরপন্থী সাইদ জালিলিকে হারিয়েছেন তিনি। আজ শনিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, তিন কোটির বেশি ভোট গণনা হয়েছে। এর মধ্যে মাসুদ পেজেশকিয়ান পেয়েছেন ১ কোটি ৭০ লাখের বেশি ভোট। আর সাইদ জালিলি পেয়েছেন ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি ভোট।
ইরানে আগামী বছরের জুনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট হওয়ার কথা ছিল। অর্থাৎ ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের চার বছরের মেয়াদ শেষে ভোট অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু গত ১৯ মে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হলে প্রেসিডেন্ট পদটি শূন্য হয়ে পড়ে। ফলে আগাম নির্বাচনের বিকল্প ছিল না। সংবিধান অনুযায়ী, ৫০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
গত ২৮ জুন প্রথম দফার নির্বাচনে কোনো প্রার্থীই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী গতকাল দ্বিতীয় দফার ভোট হয়। প্রথম দফার ভোটে প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা মাসুদ পেজেশকিয়ান ও সাইদ জালিলি এই দফায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। প্রথম দফায় ৪২ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে ছিলেন সংস্কারপন্থী পেজেশকিয়ান। আর ৩৯ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন কট্টরপন্থী সাইদ জালিলি।
প্রথম দফার নির্বাচনে ইরানের ৬ কোটি ১০ লাখ ভোটারের মধ্যে মাত্র ৪০ শতাংশ ভোট দিয়েছিলেন। ১৯৭৯ সাল থেকে ইরানে যত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছে, তার মধ্যে এটিই সবচেয়ে কম ভোটার উপস্থিতির ঘটনা।
ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দ্বিতীয় দফায় ৪৯ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি ছিল।
প্রথম দফায় পেজেশকিয়ান ও জালিলি ছাড়া আরও দুজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তাঁরা হলেন কট্টরপন্থী পার্লামেন্ট স্পিকার মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফ এবং কট্টরপন্থী মোস্তফা পুরমোহাম্মদি। গালিবাফ ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছিলেন। আর পুরমোহাম্মদি পেয়েছিলেন ১ শতাংশের কম ভোট।
মাসুদ পেজেশকিয়ানের বয়স ৬৯ বছর। তিনি হৃদ্রোগবিষয়ক সার্জন। ইরানের পার্লামেন্টে ২০০৮ সাল থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় তাবরিজ শহরের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি। ইরানের প্রধান সংস্কারপন্থী জোট তাঁকে সমর্থন দিয়েছে। সাবেক দুই সংস্কারপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামি ও হাসান রুহানিরও সমর্থন পেয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে ৫৮ বছর বয়সী জালিলি পশ্চিমাবিরোধী অবস্থানে অনড়। তিনি কট্টরপন্থী সমর্থকদের যথেষ্ট সমর্থন ধরে রেখেছেন। অন্য রক্ষণশীল নেতাদের কাছ থেকেও সমর্থন পেয়েছেন তিনি।
ইত্তেফাক এর একটি শিরোনাম “কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে আজ সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল”
সরকারি চাকরিতে কোটাপ্রথা বাতিল করে জারি করা ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল রাখার দাবিতে আজ শনিবার বেলা ৩টায় সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করবে।
শুক্রবার অনলাইন ও অফলাইনে এই কর্মসূচির পক্ষে প্রচারণা চালায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনে সমর্থন দিচ্ছে বলে সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, দাবি আদায় করে আমরা ঘরে ফিরব।
এছাড়া আগামীকাল রবিবার সকল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ছাত্র ধর্মঘটের ঘোষণাও দিয়েছে আন্দোলনকারীরা।
অন্যদিকে নতুন সর্বজনীন পেনশন স্কিম ‘প্রত্যয়’ প্রত্যাহারের দাবিতে আগামীকাল রবিবার থেকে আবারও সর্বাত্মক কর্মসূচি শুরু হবে। কোনো ক্লাস ও পরীক্ষা হবে না।
সর্বজনীন পেনশন ‘প্রত্যয়’ স্কিমকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে এটি প্রত্যাহারের দাবিতে গত সোমবার থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কর্মবিরতির ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কার্যত অচল হয়ে পড়ে।
যুগান্তরের একটি শিরোনাম “বাংলাদেশিসহ ১৯১ বন্দিকে নিজ দেশে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া”
বিভিন্ন সময় আটক হওয়া বাংলাদেশিসহ ১৯১ বন্দিকে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া। সাজা শেষ হওয়ার পর তাদের দেশে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির জোহর রাজ্যের অভিবাসন বিভাগ।
রাজ্যের অভিবাসন বিভাগ ৫ জুলাই এক বিবৃতিতে জানায়, পেকান নেনাস অভিবাসন বিভাগের বন্দিশিবির থেকে ২ এবং ৪ জুলাই পর্যন্ত সরাসরি কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কেএলআইএ-১, এবং স্টুলাং লাউট ফেরি টার্মিনালের মাধ্যমে, ৯৫ জন ইন্দোনেশিয়ান, ৮৪ জন মিয়ানমারের এবং ১২ বাংলাদেশি বন্দিকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
মালয়েশিয়ার অভিবাসন আইন ১৯৫৯/৬৩ এবং অভিবাসন প্রবিধান ১৯৬৩-এর পাশাপাশি অন্যান্য এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি আইনের অধীনে বিভিন্ন অপরাধের জন্য সাজা শেষে তাদের নিজ নিজ জাতীয় দূতাবাস থেকে নাগরিকত্ব যাচাই পাস পাওয়ারপর আকাশ ও স্থল পথে নিজ খরচে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
সেই সঙ্গে তারা যেন ফের মালয়েশিয়ায়া প্রবেশে করতে না পারে সেজন্য তাদেরকে করা হয় ‘কালো তালিকাভুক্ত’।
বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “দেশী বিনিয়োগে ভাটা শীর্ষ আগ্রহীরাও বিনিয়োগ করেনি”
দেশে বিদ্যুৎ খাতে সক্ষমতা বাড়াতে বেসরকারিভাবে নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে ৪৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ পরিকল্পনা করেছিল আনলিমা মেঘনাঘাট পাওয়ার প্লান্ট লিমিটেড। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে ২৬ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ডে (বিডা) নিবন্ধন করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। এটি ছিল বিডায় ২০২১-২২ অর্থবছরে নিবন্ধিত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিনিয়োগের ঘোষণা। ওই ঘোষণার পর সময় পেরিয়েছে তিন বছর। এখনো ভূমি উন্নয়নসংক্রান্ত কাজ ছাড়া প্রকল্পের আর কোনো কাজ সেভাবে এগিয়ে নিতে পারেনি আনলিমা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালানোর জন্য পর্যাপ্ত গ্যাসের সংস্থান না থাকা, যন্ত্রপাতি আমদানিতে ডলারের সংকট এবং বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের বিপরীতে উচ্চ সুদের কারণে প্রকল্পটি নিয়ে ‘ধীরে চলো নীতি’তে চলছে কোম্পানিটি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনলিমার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সোহাগ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘অর্থনৈতিক নানা সংকটের কারণে কাজের গতি এখন কম। এ অবস্থায় আমরা ভাবছি, বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে আগে গ্যাস প্রাপ্তির জন্য প্রয়োজনীয় চুক্তি হলে তারপর যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খোলার উদ্যোগ নেয়া হবে। এ কারণে প্রকল্পের গতি এখন ধীর।’
দেশে গত তিন অর্থবছরে (২০২১-২২ থেকে ২০২৩-২৪ পর্যন্ত) নতুন বিনিয়োগ প্রস্তাব নিবন্ধনের পরিমাণ কমেছে ব্যাপক মাত্রায়। এমনকি এ সময় শীর্ষ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকেও নতুন বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি তেমন একটা আসেনি। এ বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের ভাষ্য হলো ডলার সংকট, উচ্চ সুদহার ও বিনিয়োগ পরিবেশে বিদ্যমান অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা তাদের ঘোষিত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের পথে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন নতুন বিনিয়োগ নিয়েও তারা এগিয়ে আসতে পারছেন না।
বিডার তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ব্যক্তি খাতের স্থানীয় বিভিন্ন শিল্পে মোট ২ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের ঘোষণা এসেছে। এর অধিকাংশই এসেছে ২০২১-২২ অর্থবছরে, যার পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২৫ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা। এরপর ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিনিয়োগের ঘোষণা এসেছে ৮৩ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে বিনিয়োগ নিবন্ধিত হয়েছে ৩৮ হাজার ৮২২ কোটি টাকার। এ অনুযায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিনিয়োগ কমেছে ৩৩ শতাংশের বেশি। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আট মাসে বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে আগের অর্থবছরের মোট নিবন্ধিত প্রস্তাবের অর্ধেকেরও কম।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকের তারল্য সংকট ও উচ্চ সুদহার বিনিয়োগকারীদের জন্য অর্থায়ন প্রক্রিয়াকে চাপে ফেলেছে। আবার ডলার সংকটে শিল্প খাতে মেশিনারিজ ও কাঁচামাল আমদানিতে প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রারও সংস্থান করা মুশকিল হয়ে পড়েছে। এর ধারাবাহিকতায় বিদেশীর মতো স্থানীয় বিনিয়োগ আকর্ষণও এখন দিন দিন আরো কঠিন হয়ে পড়ছে।
বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর হলে দেশে বিনিয়োগের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বাড়বে বলে আশাবাদী ব্যবসায়ী নেতারা। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বিনিয়োগ পরিবেশ আরো বিনিয়োগবান্ধব করতে হবে। এজন্য অর্থনৈতিক অঞ্চলে গ্যাস ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হবে। ওয়ান স্টপ সার্ভিস নিশ্চিত করতে হবে। আর সুদহারের প্রতি নজর দিতে হবে।’
২০২০ সালের এপ্রিলে দেশে ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার নির্ধারণ করে দেয়া হয় ৯ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের শুরুতে সর্বোচ্চ সুদের এ সীমা তুলে নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তার পর থেকে প্রতি মাসেই সুদহার বেড়েছে। এপ্রিলে এসে ঋণের সুদহার ১৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত উঠে যায়। এরপর সুদহার পুরোপুরি বাজারভিত্তিক করে ফেলে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের অনেক ব্যাংকে ঋণের সুদহার এখন ১৬-১৭ শতাংশ।
এছাড়া দুর্নীতি, ঘুস ও জ্বালানি সংকটের মতো বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলোও দেশে বিনিয়োগ পরিবেশকে আরো সংকটপূর্ণ করে তুলছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘১০ বছর ধরে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ ২৩-২৪ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। এখন এক বছরের মধ্যে তা ২৭ শতাংশের ওপরে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব। কারণ এখন সরকার ব্যাংক থেকে সব টাকা নিয়ে যাচ্ছে। ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে দুর্নীতি-ঘুস বাড়ছে। বড় বড় প্রকল্পের অবকাঠামোয় বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এমন নেতিবাচক পরিস্থিতিতে কীভাবে বিনিয়োগ বাড়বে?’
বিডায় ২০২১-২২ অর্থবছরে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ নিবন্ধনটি ছিল বসুন্ধরা গ্রুপের। ওই ঘোষণা অনুযায়ী, বসুন্ধরা গোল্ড রিফাইনারি লিমিটেডে গ্রুপটির ৭৫ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার কথা। গত তিন অর্থবছরে এটিই ছিল সবচেয়ে বড় বিনিয়োগের ঘোষণা। এছাড়া গ্রুপটি বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্স লিমিটেডে ১২ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছিল। দুটি প্রকল্পে বসুন্ধরা গ্রুপের ৮৮ হাজার ৬১৭ কোটি টাকার বিনিয়োগ নিবন্ধিত রয়েছে। প্রকল্পের অগ্রগতি ও উৎপাদন শুরুর সম্ভাব্য সময় নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারেননি প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।
দেশে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের জন্য ১০ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছিল সামিট গ্রুপ। দৈনিক ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট সরবরাহ সক্ষমতার এ টার্মিনালের বিনিয়োগ প্রস্তাব বিডায় নিবন্ধিত হয় ২০২১-২২ অর্থবছরে। টার্মিনালটি নির্মাণ হওয়ার কথা কক্সবাজারের মহেশখালীতে। এ নিয়ে সরকারের সঙ্গে সামিটের চুক্তিও হয়েছে। এখনো প্রকল্পটির মাঠ পর্যায়ে কোনো কাজ শুরু হয়নি বলে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে।
ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগের আওতায় ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিল ল্যাবএইড গ্রুপ। এ হাসপাতাল নির্মাণে কোম্পানিটি মোট ৭৩৫ কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে ঢাকায় একটি ক্যান্সার হাসপাতালে ৫০০ কোটি টাকা এবং দেশের ছয়টি বিভাগে ক্যান্সার সেন্টার স্থাপনে বাকি অর্থ বিনিয়োগের পরিকল্পনা ছিল গ্রুপটির।
ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্যান্সার হাসপাতালের জন্য ভবন নির্মাণে ২০০ কোটি টাকা এবং যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য ১৮০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। হাসপাতালের জন্য আরো প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানির প্রয়োজন থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি এখন ডলার সংকট ও এলসি জটিলতায় বাকি ১২০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে পারছে না। ব্যাংক থেকে টাকা পেতে জটিলতা তৈরি হওয়ায় ঢাকার বাইরে বিভাগীয় সেন্টার স্থাপন করা যাবে কিনা তা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে ল্যাবএইডের।
জানতে চাইলে ল্যাবএইড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ এম শামীম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ক্যান্সার হাসপাতালের জন্য যখন বিনিয়োগ করেছি, তখন দেশে ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান ছিল ৮৫ টাকা। ব্যাংকের সুদহারও ছিল এখনকার চেয়ে অনেক কম। সরকার এখন ব্যাংক থেকে টাকা নিচ্ছে বেশি। তাই ব্যাংক আমাদের অর্থ দিতে পারছে না। ক্যান্সার হাসপাতালে বাকি ১২০ কোটি টাকা বিনিয়োগে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। বিভাগীয় সেন্টারগুলো হয়তো এখন করা যাবে না। কারণ থেরাপি দেয়ার জন্য একটি লিনেট মেশিন আনতে ৩০-৪০ কোটি টাকা প্রয়োজন হয়। কিন্তু ব্যাংক এলসি করতে পারছে না।’
বিডার আওতায় বিনিয়োগের শীর্ষ তালিকায় ২০২১-২২ অর্থবছরে তৃতীয় শীর্ষ প্রস্তাব এসেছিল ঢাকা ফ্লাই এয়ারলাইনস লিমিটেডের। তাদের বিনিয়োগ ঘোষণা ছিল ১৭ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা। এছাড়া শীর্ষ তালিকার অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে উনবা পেপার ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড ৯ হাজার ৯৪১ কোটি টাকা, বেস্ট সার্ভিসেস লিমিটেড ৯ হাজার ১৭৩ কোটি, হেলথ কেয়ার ফর্মুলেশন লিমিটেড ৮ হাজার ৪১৩ কোটি ও ইকরাম ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড ৮ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব দিয়েছিল। এ তালিকার আরেক প্রতিষ্ঠান রিমার্ক এইচবি লিমিটেডের বিনিয়োগ প্রস্তাব ছিল ১১ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকার। যদিও প্রতিষ্ঠানটি এ বিনিয়োগ করতে পারেনি।
জানতে চাইলে রিমার্ক এইচবি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল আম্বিয়া বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন, এলসি জটিলতায় মূলধনি যন্ত্রপাতি সেভাবে আমদানি করা যায়নি। ফলে সামগ্রিকভাবে বিনিয়োগের গতি শ্লথ হয়ে গেছে।’
দেশে শিল্প প্রতিষ্ঠার জন্য বেসরকারি কোম্পানিগুলো ব্যাংকগুলোর ওপর নির্ভরশীল। এজন্য তারা ব্যাংক থেকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ নিয়ে থাকে। বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের অনেকেই এখন এসব ঋণ পরিশোধেও ব্যর্থ হচ্ছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২১ সালে দেশের বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংক থেকে মেয়াদি ঋণের অর্থায়ন পেয়েছিল ৫৪ হাজার ৬২৫ কোটি টাকার। আর ২০২২ সালে তা কিছুটা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৫৬ হাজার ৩৩ কোটি টাকা। একইভাবে এ দুই বছরে এসব ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ছিল ৪৬ হাজার ৪১৩ কোটি এবং ৪৯ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা। যদিও গ্রহীতারা ঠিক সময়ে ঋণ পরিশোধ না করায় মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের পরিমাণও ঊর্ধ্বমুখী। ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত মোট টার্ম লোনের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের পরিমাণ ছিল ৫০ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা, যা ২০২৩ সালের জুনে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৯ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা। অর্থাৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর নেয়া ঋণের একটি বড় অংশ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাচ্ছে।
অর্থ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সদ্য বিদায় নেয়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল জিডিপির ২৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। যা আগের অর্থবছর ছিল ২৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তা বাড়িয়ে জিডিপির ২৭ দশমিক ৩৪ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। আর গত অর্থবছরের সাময়িক হিসেবে চলতি মূল্যে জিডিপির আকার ছিল ৫০ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা। সেই হিসাব বিবেচনায় নিলে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ বাড়াতে চলতি অর্থবছরে অতিরিক্ত আরো ১ লাখ ৯৩ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থের প্রয়োজন পড়বে।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে অনেক ঝড়-ঝাঁপটা গেছে”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা ভেবেছিল তাদের সহায়তা ছাড়া বাংলাদেশ চলতেই পারবে না, সেই ধারণাটা বদলে গেছে। সেই ধারণা আর নেই। আগে যারা কথায় কথায় খবরদারি করতো, পদ্মা সেতু নির্মাণের পর তাদের মানসিকতা বদলে গেছে। পদ্মা সেতুর জন্য আজ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। বাংলাদেশের অহংকার, গর্বের অর্জন পদ্মা বহুমুখী সেতুর সমাপনী অনুষ্ঠানের সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
গতকাল মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের গ্যাস অন্য দেশের কাছে বিক্রি করতে রাজি হই নাই বলেই সেবার সরকার গঠন করতে পারি নাই। বাংলাদেশের সম্পদ বেঁচে ক্ষমতায় আসতে হবে, শেখ মুজিবের মেয়ে এটা কখনও চাই নাই। বক্তব্যের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। বলেন, সাধারণত কোনো প্রকল্প সমাপ্ত হলে, কোনো অনুষ্ঠান হয় না। কিন্তু পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে অনেক ঝড়-ঝাঁপটা গেছে।
যার জন্য পদ্মা সেতু সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাতেই আজকের এই আয়োজন। সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এছাড়াও সমাবেশে অংশ নেন কূটনীতিক, রাজনীতিবিদ ও আমলাসহ দেড় হাজারের বেশি অতিথি। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার বাবা কারও কাছে মাথানত করেননি, আমিও করি না। বাংলাদেশের সম্পদ বিক্রি না করায় যদি ক্ষমতায় না আসি, তাতে আমার কিছু যায়-আসে না। কিন্তু দেশের সম্পদ বিক্রি করে নয়। তিনি আরও বলেন, আমার একটা দোষের কারণে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারেনি। আমি গ্যাস বিক্রি করার মুচলেকা দিইনি। আমার সময় আন্তর্জাতিক টেন্ডার দিয়ে গ্যাস বিভিন্ন আমেরিকান কোম্পানিকে দেয়া হয়েছিল, তখন তারা উত্তোলন করছিল। সেই গ্যাস উত্তোলন করে তারা বিক্রি করবে ভারতের কাছে, আমি সেখানে বাদ সাধলাম। এই গ্যাস আমার দেশের মানুষের চাহিদা পূরণ করবে। আমার ৫০ বছরের উদ্বৃত্ত থাকবে। তারপর আমি গ্যাস বিক্রি করবো। সরকারপ্রধান বলেন, বড় বড় দেশের এ ধরনের দাবি না মানলে যেটা হয়, আমার ভাগ্যেও তাই হলো। আমি ২০০১ এর সরকার গঠন করতে পারলাম না। ভোট আমরা পেয়েছিলাম বেশি, সিট পেলাম না, তাই সরকার গঠন করতে পারলাম না। তাতে আমার কোনো আফসোস ছিল না। খালেদা জিয়া রাজি হলেন, ক্ষমতায় এলেন। আমি শুধু এইটুকু বলেছিলাম যে, আল্লাহ্তায়ালা জন বুঝে ধন দেয়। কিছু কিছু মানুষ আত্মান্বেষী থাকে, এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্য। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরকে হত্যার পর রক্তাক্তভাবে চলতে থাকলো বাংলাদেশ। যে জাতি রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করলো সেই জাতি কেন মাথা নিচু করে চলবে? অকুতোভয় জাতিকে একেবারে মর্যাদাহীন করে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। আমাদের উপর খবরদারি বেশি চলতো। ২১ বছর পর সরকারে আসি।
শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতা ছিল না বিদেশে গেছি, তখন বাংলাদেশের নামটা শুনলে কেউ জিজ্ঞাসা করতো, এটা কি ভারতের কোনো অংশ? জিজ্ঞেস করতো, এদেশে তো শুধু ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, দুর্ভিক্ষ লেগে থাকে। মিসকিন হিসেবে আমাদেরকে হিসাব করা হতো। যেটা আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টের ও ব্যথার ছিল। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। আর সেই স্বাধীন জাতি হিসেবে আমাদের মর্যাদা থাকবে না, আমরা মাথা তুলে কথা বলতে পারবো না, আমাদের আত্মমর্যাদাবোধ থাকবে না- এটা কী ধরনের বাংলাদেশ? আগে যারা কথায় কথায় আমাদের ওপর খবরদারি করতো, আর ভাবখানা এমন ছিল যে, তারা ছাড়া বাংলাদেশ চলতেই পারবে না। তাদের সেই মানসিকতাটা বদলে গেছে।
এখন বাংলাদেশ শুনলে সমীহ করে আন্তর্জাতিকভাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আয় দিয়ে পদ্মা সেতুকে বিচার করবো না। এটা আমাদের গর্বের সেতু, টাকার অংক দিয়ে বিচারের নয়। এই একটা সিদ্ধান্ত, বাংলাদেশকে সেই মর্যাদা দিয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ একটা মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়নি, সফল হয়েছে। আমরা এখন আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ হিসেবে গড়ে তুলবো। পদ্মা সেতু হওয়ার সুফল বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘পদ্মাপাড়ের মানুষ আমরা সবসময় কষ্ট ভোগ করতাম, আসতে-যেতে। প্রথমে ১৯৫২ সালে দাদার সঙ্গে আমরা ঢাকায় যেতে নৌকায় পার হই এই পদ্মা। চারদিন চার রাত লেগেছিল। তখন আব্বা (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) জেলে। এই যাতায়াতে কত মানুষের জীবন গেছে। বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আজকে আর কোনো সেবাবঞ্চিত হয় না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুতে বিনিয়োগ করার জন্য এডিবি, বিশ্বব্যাংকের মতো বিদেশি অনেক সংস্থাই এগিয়ে এসেছিল। কিন্তু একটি ব্যাংকের এমডি (ব্যবস্থাপনা পরিচালক) পদের জন্য বিদেশি বিনিয়োগ আটকে যায়। এই পদ নিয়েই যত জটিলতা যত সমস্যা। ব্যাংকের আইন অনুযায়ী একজন ২০ বছর পর্যন্ত এমডি থাকতে পারবে। ইতিমধ্যে তার বয়স ৭০ হয়ে গেছে। অতিরিক্ত সময় থেকে ফেলেছেন। তাহলে সে আর ব্যাংকের এমডি পদে থাকেন কীভাবে। একজন নোবেল বিজয়ী সামান্য এমডি’র জন্য এত লালায়িত কেন? এই প্রশ্নের উত্তর কখনো পেলাম না।
তিনি বলেন, এই পদের জন্য বড় বড় দেশের অ্যাম্বাসেডর আমার অফিসে এসে আমার অফিসারদের সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলে। তাদেরকে বলে এমডি’র পদ না থাকলে বিদেশি অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যাবে। এমডি’র পদের জন্য হিলারি ক্লিনটন, শেরি ব্লেয়ার আমাকে ফোন করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা এলো। আমি শুধু তাদেরকে বলেছি এই এমডি পদে কী মধু আছে? প্রধানমন্ত্রী বলেন, ড. ইউনূসকে নিয়ে কোনো মার্কিনির কথা শুনবো না, দেখাও করবো না; বলে দিয়েছিলাম তাদের। এমডি পদে থাকতে পারলো না বলে হিলারি ক্লিনটনের মাধ্যমে সেতুর টাকা বন্ধ করলো। মালয়েশিয়া সরকার পদ্মা সেতুতে টাকা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেদের টাকায় করেছি এটা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন- সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মনজুর হোসেন। প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের শুরুতেই পদ্মা সেতুর থিমসং প্রচার করা হয়। এছাড়া পদ্মা সেতুর ওপর একটি প্রামাণ্য চিত্র দেখানো হয়। সুধী সমাবেশে সেতুমন্ত্রীর ও সেতু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলামসহ সেতু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
নেত্রীর পাশের চেয়ারে বসেই অনেকে পাগল বলেছে: ওবায়দুল কাদের
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, নেত্রী যখন নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করার ঘোষণা দিলেন, তখন সবার মধ্যেই শোরগোল, কেউ কেউ বলছেন পাগল নাকি! বিশ্ব ব্যাংক ছাড়া পদ্মা সেতু সম্ভব নাকি! তখন আমি পাশেই ছিলাম। আমাকে উদ্দেশ্য করেও কতজন কত কথা বলেছেন। আজকে আমরা পদ্মা সেতুর সমস্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি। সেতুমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক আমাদের হতাশ করে চলে গেল। পদ্মা সেতু থেকে অপবাদ নিয়ে সরে গেল। ২০১২ সালের জুলাই মাসে জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ঘোষণা দিলেন, আমরা আমাদের টাকায় পদ্মা সেতু করবো। তখন আমাদের আশপাশে প্রথম ও দ্বিতীয় সারিতে অনেকে বসা ছিলেন। তারাও এটা নিয়ে নানান কথা বলেছেন। কিন্তু আমরা করে দেখিয়ে দিয়েছি। ওবায়দুল কাদের বলেন, পদ্মা এলাকায় ঘন কুয়াশা। আমরা যখন পিলারের উপর প্রথম স্প্যান বসাই, প্রধানমন্ত্রী তখন দেশের বাইরে। আমরা চেয়েছিলাম প্রধানমন্ত্রী এলেই স্প্যান বসাতে। তখন যোগাযোগ করা হলে প্রধানমন্ত্রী বললেন, পদ্মা সেতুর কাজ আমার জন্য এক সেকেন্ডও থেমে থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী মুখ থেকে শোনা এই একটা কথাই আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর নাম শেখ হাসিনার নামে করতে চেয়েছিলাম। সংসদসহ সারা বাংলাদেশে দাবি উঠেছিল। শেখ রেহানাও একই সুরে কথা বলেছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বলেছেন পদ্মা সেতু হবে পদ্মা নদীর নামে। আমার নাম এখানে ব্যবহার করা যাবে না। যতদিন পদ্মার ওপর পদ্মা সেতু থাকবে ততদিন শেখ হাসিনার নাম উচ্চারিত হবে স্ব-গৌরবে। তিনি আরও বলেন, ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক অর্জন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। বাঙালি জাতির ইতিহাসে আরেকটি অর্জন নিজের টাকায় পদ্মা সেতু। ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ সৈয়দ আবুল হোসেন নেই। নামটা ভুলে গেলে চলে না। কারণ সূচনালগ্নে আবুল হোসেন ছিলেন, আজ তিনি পরলোকে। আমি তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।
Leave a Reply