বর্তমানে সুন্দরবনে বাঘ তেমন একটা দেখা যায় না। সুন্দরবনের বাঘ প্রায় বিলুপ্তির পথে। কিন্তু একটি সময় ছিল যখন সুন্দরবনে প্রচুর পরিমাণে বাঘ ছিল। ঐ সময় বাঘের পরিমাণ বেশি থাকায় কিছু কিছু বাঘ গবাদি পশু এমনকি মানুষও খেয়ে ফেলত। আর তখন এই বাঘগুলোর নাম দেওয়া হয়েছিল মানুষ খেকো বাঘ। সেই সব বাঘ শিকারের কাহিনী গুলো আজও রোমাঞ্চকর। বাংলাদেশে মানুষ খেকো বাঘ শিকার করে যিনি সবচেয়ে বিখ্যাত হয়ে ছিলেন তার নাম পচাব্দী গাজী। তারা কয়েক পুরুষ ধরেই ছিলেন এ ধরনের বাঘ শিকারি। পচাব্দী গাজী নিজেই বলেছিলেন তার এবং তার পিতা মেহের গাজীর ভয়ংকর সব বাঘ শিকারের কাহিনী । এমনই কিছু ভয়ংকর বাঘ শিকারের কাহিনী সারাক্ষণে প্রকাশ করা হলো।
হুমায়ুন খান
সাত দিনের দিন সকালে যখন আমি প্রায় স্থিরই করে ফেলেছিলাম যে, বোট রায়মঙ্গলের আরো মাইলখানেক ভাটিতে, অর্থাৎ আরো সাগরের দিকে নিয়ে যাব, ঠিক তখনি বনে হরিণের ভয়ার্ত ‘টাই। টাই!’, ডাক শোনলাম। সেই ডাক একটা সম্ভাবনার লক্ষণ ভেবে বোট আর সরালাম না, ডিঙি করে পাঁচজনে তালপাটি খাল ধরে প্রায় সিকি মাইল গিয়ে দুইজন বনমাঝিকে ডিঙিতে রেখে বাকী তিনজন বনে ঢুকলাম। আমার এবং আরেকজনের হাতে ছিল বন্দুক, অপরজনের হাতে রাইফেল। হাত তিরিশেক দূরে দূরে আমরা তিনজন তিন গাছে উঠে বসলমি-আমি বসলাম এক বড় গাছের দোডালায়।
গাছে বসার মিনিট বিশেক পরেই একবার এবং তারপরে আরো অন্ততঃ দেড়ঘন্টা পরে দ্বিতীয়বার হরিণের ডাক শোনলাম, শ তিনেক হাত দূরে খালের পাড়ে, যদিও হরিণ দেখতে পেলাম না। দুই ঘন্টা পরে সঙ্গী শিকারীকে ডেকে গাছ থেকে নামিয়ে আবার ডিঙিতেই ফিরলাম এবং হরিণের ডাক লক্ষ্য করে সামনে এগুতে থাকলাম। মাত্র দুইশ হাত এগুতেই খালের পাড়ে একেবারে তাজা পারা পেলাম, মানুষখেকো বাঘের পারা, এক ঘন্টারও কম সময় আগে হবে এখানে খাল পার হয়েছে এবং হরিণ যেদিকে ডাকছিল ঠিক সেদিকে গেছে।
পাড়ে উঠলাম না, ডিঙির দুই মাথায় দুইজন বনমাঝি এবং মাঝখানে আমরা তিনজন শিকারী বসে অপেক্ষা করতে লাগলাম। খালের পানি থেকে পাড় সেখানে এক হাতের বেশী উঁচু নয়, নৌকাতে বসেই সামান্য মাথা উঁচু করে আমরা জঙ্গলের ভিতরটা দেখতে পাচ্ছিলাম। এটা প্রায় নিশ্চিত ছিল যে বাঘ আমাদের দেখেনি, আর গেছে সাগরের দিকে, অর্থাৎ হরিণের পাল যেদিকে গেছে, সেদিকে । অনেক ও সন্ধানের পরে অবশেষে বাঘের ঠিকানা পেয়ে বেলা বারোটায় আমরা দ্রুত বোটে ফিরলাম।
এক ঘন্টার মধ্যে ভাত খেয়ে তিনজন বনমাঝি ও রাইফেল হাতে একজন বনবিভাগের শিকারীকে সঙ্গে নিয়ে, আমার বন্দুকে নতুন দুইটি কার্তুজ ভরে, আরো যথেষ্ট কার্তুজ পকেটে নিয়ে গিয়ে সাবুদ হয়ে ডিঙিতে বসলাম। তিন বনমাঝি ডিঙির গলুই ও পাছায় বসে সতর্কতার সঙ্গে যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি ডিঙি বাইতে লাগল। ছৈ-এর দুইপাশে বসলাম আমরা দুই শিকারী, আমি সামনে।
রায়মঙ্গল নদী ধরে ভাটির দিকে যেতে থাকলাম। নদী এখানে একেবারে সোজা উত্তর থেকে দক্ষিণে গেছে, আমরা পশ্চিম পাড় ধরে চলতে লাগলাম। বোট থেকে প্রায় এক মাইল পর্যন্ত যেতে নদীর এ পাড়ে কেবল গভীর বন পড়ল, তারপরে পড়ল হঠাৎ এক বালুচর, পরিষ্কার খোলা চর। সেই চরের মাঝামাঝি পর্যন্ত বেয়ে যেতেই প্রায় তিনশ হাত দক্ষিণে, চরের শেষ প্রান্তে, আমি প্রথম বাঘ দেখতে পেলাম।
এই চর ছিল প্রায় ছয় শ হাত লম্বা। মাঝে মাঝে ঘাস এবং কয়েকটা চারাগাছ ছাড়া সমগ্র চরটা ছিল একেবারে খোলা ও পরিষ্কার। চরের রেখা যেখানে শেষ হয়েছিল সেখান ধরে আবার বন, কোথাও গভীর, কোথাও হালকা। আমরা যেখানে গিয়ে বাঘ দেখতে পেলাম চর সেখানে প্রায় আড়াই শ হাত প্রশস্ত। একেবারে দক্ষিণ প্রান্তে বনের দেখতে ভিতর থেকে কেবল মাথা বের করে বাঘ কতক্ষণ আমাদের দিকে চেয়ে রইল, পরিষ্কারই বুঝলাম যে আমাদের প্রতি লক্ষ্য স্থির করেছে; তারপর চর এবং বনের প্রান্তসীমা ধরে দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকে এগুতে লাগল।
নৌকা যেখানে ছিল সেখানেই রাখতে বললাম। আমার বন্দুকের দুই নলই ভরা, সঙ্গের শিকারীর রাইফেলও তৈরী, আমরা বাঘের প্রতি গজ চলা লক্ষ্য করতে লাগলাম। একবারও না থেমে ঘন ঘন নৌকার দিকে তাকাতে তাকাতে বাঘ একেবারে ঠিক নৌকা বরাবর এসে দাঁড়াল। একটা গাছের গোড়ায় পিছনের দুই পায়ের উপরে খাড়া হয়ে সামনের পা কাণ্ডের উপরে তুলে দিয়ে, গাছে ভর করে, একটা সরু ডাল দাঁত দিয়ে কামত্ত্বে ভেঙে ফেলল; তারপর আবার মাটির উপর চারপায়ে দাঁড়াল এবং সজোরে গা ঝাড়া দিল।
থেকে রাইফেল দিয়ে গুলি করা যেত কিন্তু আমার সঙ্গী শিকারীর উপরে জারি আরসা করতে পারলাম না: আর মারা দিবে ছিড়া হাত দূরে গুলি পুরা ছবিতে আহত করা সম্ভব ছিল, কিন্তু নিশ্চিত মারা সম্ভব ছিল না। অথচ আজকের এই সুযোগ আমরা হয়ত আর কখনো নাও পেতে পারি।
আমরা যদি চরের যে কোন এক প্রান্তে যাই তাহলে ক্ষুধার্ত মানুষখেকো অবশ্যই আমাদের কাছাকাছি যাবে এবং সুযোগমত যে-কোন একজনকে আক্রমণ করতে চেষ্টা নিলাম। বনমাঝিদের উল্টা দিকে অর্থাৎ আমরা যেদিক করবে, এটা প্রায় নিশ্চিতই ধরে নিলাম। মোরে এসেছি সেই উত্তর দিকে নৌকা বাইতে বললাম আর আমি ছৈ-এর সঙ্গে গা ঠেকিয়ে বন্দুক হাতে দাঁড়ালাম। প্রায় আয়নার মত সমতল চরের শেষ কিনারা ধরে স্বাধও আমাদের সমান্তরালে এগুতে লাগল, কিন্তু এখন আর হেঁটে নয়, বুকের উপরে হামাগুড়ি দিয়ে। বনমাঝিদের দ্রুত বাইতে বললাম, নৌকা চরের একেবারে উত্তর প্রান্তে। এলে তখন কিনারে লাগাতে বললাম।
চর সেখানে প্রায় যাট হাত প্রশস্ত এবং জঙ্গল অর্ধবৃত্তাকার হয়ে এসে নদীর সঙ্গে মিশেছে। তিনজন বোটম্যান নৌকার দুইপাশে লগি ঠেকিয়ে ঢেউয়ের ঝাঁকুনি থেকে যথাসম্ভব স্থির করে নৌকা ধরল। ছৈ-এর দুই পাশে দাঁড়ানো আমরা দুইজন শিকারী, আমার দোনলা বেলজিয়াম শটগানের দুই ঘোড়াই টানা। চরের প্রান্তে বাঘের হুলুদ রঙ একবার দেখলাম, কিন্তু পরমুহূর্তেই আবার অদৃশ্য হয়ে গেল, সম্ভবতঃ গভীর জঙ্গলে চলে গেল। কতকটা বিভ্রান্ত হয়ে গেলাম, কিন্তু মানুষখেকোর ক্ষেত্রে তো এটা ঘটতে পারে না, বাঘ অবশ্যই আক্রমণের চেষ্টা করবে।
এক মিনিট পরেই দেখলাম বাঘ হামাগুড়ি দিয়ে, একেবারে পেটের উপর ভর দিয়ে, মাটির সঙ্গে মিশে, সন্তর্পণে এগিয়ে আসছে। যেখান থেকে অদৃশ্য হয়েছিল সেখান থেকে আরো হাত আটেক ঘাসের ভিতরে এগিয়ে এসে মাটিতে পড়ে রইল। আমার থেকে বাঘের দূরত্ব তখন ছিল প্রায় পঞ্চাশ হাত, চোখে চোখ পড়তে ধূর্ত বাঘ মুখ একেবারে মাটিতে মিশিয়ে রাখল।
বাঘ তখন খুবই রেঞ্জের ভিতরে, কিন্তু গাছ ও ঘাস-পাতার ভিতরে এমন সুকৌশলে আত্মগোপন করে ছিল যে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে যেতে পারত। জ্বলজ্বলে চোখে বার বার দাঁত বের করে বাঘ আমাদের দিকে যেন ‘ভেংচি’ কাটতে লাগল। বনমাঝি তিনজন প্রাণভয়ে নৌকা ছেড়ে দিতে চাইল, কারণ পরিষ্কারই বুঝা যাচ্ছিল যে বাঘ আক্রমণ করবে। রাইফেল হাতে দাঁড়ানো শিকারী আনিসুর রহমান সাহেবও কিছু স্থির করতে পারলেন না। পঞ্চাশ হাত দূরত্ব অতিক্রম করতে বাঘের যদিও মাত্র কয়েক সেকেণ্ড সময় লাগবে তবু সেই বিদ্যুৎগতির মাঝেও আমি একটা গুলি অবশ্যই করতে পারব ভেবে বনমাঝিদের মজবুত করে কিনারায় নৌকা ধরতে বললাম। তারা ধরল নৌকা, কিন্তু তবু কিছুটা দুলতে লাগল; তখন আমার একমাত্র উপায় রইল পাড়ে নেমে গুলি করা, যদিও তা ছিল অত্যন্ত বিপজ্জনক কাজ।
প্রায় দশ মিনিট পর্যন্ত বাঘ একই অবস্থায় থেকে কেবল ‘ভেংচি’ কাটতে লাগল, সামনে এগুল না বা একটু পিছনে সরে গেল না। দেখলাম যে আদৌ গুলি করতে হলে আমাকে ঝুঁকি নিতেই হবে, তখন বনমাঝিদের বললাম, আমি পাড় থেকে গুলি করে নৌকায় লাফ দিয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা যেন নৌকা ভাসিয়ে দেয়। তারা সেভাবেই তৈরী হলে তখন বন্দুক নিশানা করে আমি এক পা নৌকায় রেখে আরেক পা মাটিতে রাখলাম। কোনরকম গর্জন বা আওয়াজ না করে বাঘ এতক্ষণ ক্রমাগত ভেংচি কেটেই যাচ্ছিল, আমি মাটিতে পা দেওয়ামাত্র মুখ সিঁটকে মাথাটা মাটি থেকে প্রায় দেড় হাত উপরে তুলল। ট্রিগার টিপে সঙ্গে সঙ্গেই পিছনে ছিটকে আমি নৌকার তক্তার উপরে পড়ে গেলাম, আর বনমাঝিদের এক ধাক্কায় নৌকাটা অন্ততঃ দশ হাত নদীতে ভেসে গেল।
অ্যালফাম্যাক্স-এর একটিই গুলি করেছিলাম বাঘের মাথা লক্ষ্য করে, শিকারী আনিসুর রহমান সাঃহব স্বয়ং এবং তিনজন বনমাঝিই বললেন, যে গুলি লেগেছে, বাঘ পিছনে ছিটকে যে পড়েছে তা তাঁরা দেখেছেন। কিন্তু আমি সঠিক কিছু বলতে পারলাম না। কেবল মনে হল যে গুলি করার পরে ‘হৌক।’ করে একটা শব্দ যেন শুনেছিলাম।
বন্দুকের উপরে ভর করে নৌকায় উঠে বসলাম। গুলি লেগেছে কি না, অন্ততঃ বাঘ আহত হয়েছে কি না, সঠিকভাবে না দেখে আমি যেতে পারি না, তাই একজন বনমাঝিকে সঙ্গে নিয়ে আবার পাড়ে নেমে এক পা এক পা করে সামনে এগুতে লাগলাম, আর দুইজন বনমাঝিসহ উদ্যত রাইফেল হাতে শিকারী আনিসুর রহমান সাহেব রইলেন নৌকায়। বালুচর দিয়ে অতি সতর্কতার সঙ্গে অগ্রসর হয়ে বাঘ যেখানে ছিল সেখানে গেলাম।
বাঘ নেই, মাটিতে ও গাছের গুড়িতে কিছু রক্ত ছিটকে আছে আর একটা ছররা মাটিতে যে ঢুকে গেছে তার চিহ্ন পেলাম। বাঘ আহত হয়েছে, কিন্তু জঙ্গলে ঢুকে গেছে আর জঙ্গল সেখানে গভীর। এখন বাঘকে অনুসরণ করতেই হবে কিন্তু সেই মুহূর্তে আর তা করা সম্ভব হল না, জঙ্গলে ঢোকার মত যথেষ্ট বেলা ছিল না। অগত্যা সম্পূর্ণ অনিশ্চয়তার মধ্যে আমরা বোটে ফিরে এলাম সারারাত অঘুমায় কাটালাম। পরদিন সকালে পাঁচজনেই আবার ডিঙি নৌকা নিয়ে
চরে গেলাম। একজন বনমাঝি শুধু নৌকাতে রইল আর চারজন আমরা বাঘের অনুসরণে চললাম। যেখানে গুলি করেছিলাম তার পাশেই ছিল একটা ঘন ঝোপ, সেটা পার হতে হালকা জঙ্গল পড়ল। হাত পনের সেই হালকা জঙ্গল পার হতেই এক ঘন ঝোপের ভিতরে ঢুকে সামনে বাঘের হলুদ রঙ দেখতে পেলাম। আন্দাজ হাত দশেক কাছে যেতে মাহির ভণ ভণ আওয়াজ কানে এল, প্রায় নিশ্চিতই তা মরা বাঘের লক্ষণ, কিন্তু ভয়াবহ মানুষখেকোর ক্ষেত্রে আমি বেশী আত্মবিশ্বাসী হতে পারলাম না, বাঘের মাথা আমাদের দিকে ছিল, মাথায় গুলি করলাম; বাঘ আর নড়ল না
চারজনে একসঙ্গে ডাক দিলাম ‘আল্লা। আল্লা। আল্লা। আল্লা! আল্লাহ!’ নৌকা থেকে শুধু বোটম্যান একা এসে যোগ দিল, কাছেধারে কেন সমগ্র তালপাটিতে সেদিন সম্ভবতঃ বিশ-ত্রিশজনের বেশী লোক ছিল না, কে আর উল্লাসধ্বনি করতে আসবে। পাঁচজনে বাঘ নৌকায় এনে তোললাম, মেপে দেখলাম, সাড়ে দশ ফুট লম্বা বাঘ। দাঁত অনেকগুলো পড়ে গেছে, গোঁফও অর্ধেক ঝরে গেছে, আর লাফ দিয়ে গাছের উপরে, ডালের, শূলার উপরে যে পড়েছে চামড়া এখানে ওখানে ছিলে গেছে। কালকের প্রথম গুলি বাঘের মাথার ঠিক মাঝখানে লেগেছিল, আজকের গুলিও মাথায় লেগে মাথা ও মুখ ছিন্নবিছিন্ন হয়ে গেছে। তালপাটির বিভীষিকার মৃতদেহের উপর দিয়ে চারজন বন্ধু শ্রদ্ধা ও বিস্ময়মিশ্রিত দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালেন।
মহা উৎসাহে তিন বনমাঝি নৌকা ভাসাল, ছৈ-এর সামনে গলুইয়ের দিকে তৎকালীন ৫০০ টাকা পুরস্কারের মানুষখেকো বাঘ রেখে ছৈ-এর গায়ে ঠেস দিয়ে দাঁড়ালাম। আমি ক্ষুদ্র মানুষ, কিন্তু নিশ্চয়ই আল্লাহ একটা বড় কাজ আমাকে দিয়ে করিয়েছেন। তাঁর কাছে অশেষ শুকরিয়া জানিয়ে মোনাজাতের মত করে দুই হাতে আমি মুখ ঢাকলাম। রায়মঙ্গল গাঙে তখন জোয়ার এসেছে, বাতাসের সঙ্গে সঙ্গে দুই পাড়ে কল বল করে ছোট ঢেউ ছুটেছে উজানের দিকে। হঠাৎ আমার মনে হল, সীমাহীন সুন্দরবনের সব জেলে-জোংড়াখুটা-বাওয়ালী-মৌয়ালীরা যেন এসে রায়মঙ্গলের দুই কিনারে সারি বেঁধে দাঁড়িয়েছে, আর বাপের বুকের সামনে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে হাজার শিশু কচিহাতে করতালি দিয়ে বাম তাকারী আচাব্দী গাজীকে অভিনন্দন হাজার ছেছোট্ট ছোট্ট জোয়ারের ঢেউ ছোট্ট করতালির আওয়াজ বয়ে নিয়ে যাদের সুন্দরবনের কিনারা থেকে কিনারায়।
দরবনেনে পড়ে রইল সম্পদ ও সৌন্দর্য ভরা তালপাটির দ্বীপ। আমার দায়িত্ব এখানে শেষ হয়েছে, এখন আবার আমি আমার প্রতিদিনের ক্ষুদ্রতায় ফিরে চললাম।
Leave a Reply