শিবলী আহম্মেদ সুজন
বাংলাদেশের বড় নদীগুলোর তালিকায় পশুর নদীর নাম প্রথমের দিকে না থাকলেও দেশের একটি অতি পরিচিত নদী। আর আরো বেশি পরিচিতি পেয়েছে দেশের অন্যতম বন সুন্দরবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এ নদী। অন্যদিকে দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর এই নদীকে ঘিরে অনেকখানি জড়িত।
এই পশুর নদীর উৎপত্তি খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার আমিরপুর ইউনিয়নে প্রবহমান ভৈরব নদী হতে পশুর নদীটি হয়েছে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পশুর নদীটি খুব পরিচিত একটি নদী।খুলনা ও বাগেরহাট জেলার মাঝে পশুর নদী অবস্থিত।এই নদীর দৈর্ঘ ১৪২কিলোমিটার, প্রস্থ ৪৬০মিটার।
বৃহত্তর সুন্দরবনের এবং খুলনা জেলার অন্যতম নদী পশুর।এই নদীটির তীরে বিখ্যাত মোংলা বন্দর রয়েছে।পশুর নদীটর মধ্যদিয়ে সকল প্রকার নৌযান চলাচল করে থাকে। এই নদীটি মূলত জোয়ার ভাটার পানি বহন করে থাকে।পশুর বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য গভীরতম নদীগুলোর মধ্য একটি।
পশুর নদীর দক্ষিণে শিবসা এবং উওরে শেখের খাল রয়েছে।এই নদীটি শিবসা নদীর সাথে এসে মিলিত হয়েছে। ঐতিহাসিকদের অনুমানে , এইখানেই রাজা প্রতাপাদিত্য তাঁর শিবসা দুর্গ ও কালিকামন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার চিহ্ন আজও বর্তমান। কোনকোন মন্দির তো আজও বনের আড়ালে মাথা উঁচু করে আছে।
এক সময় সমুদ্রের জোয়ার ভাটার জলরাশি খেলত এই নদীতে। এই নদীর জলধারা একই জেলার দাকোপ উপজেলার খুলনা রেঞ্জ ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিলিত হয়েছে। যে নদীর মায়ায় পড়েছিলেন একুশে পদক বিজয়ী কবিয়াল বিজয় সরকার। নদীটি নিয়ে লিখেছিলেন বিখ্যাত একটি গান- “পশুর নদীর ভাটির শেষে আসিয়াছি এই জংলা দেশে।”
বর্তমানে পশুর নদীটি অনেকটাই ভরাট হয়ে গেছে।সরকার নদী খননের কাজে পদক্ষেপ নিলেও বাস্তবে তা কার্যকর হচ্ছে না। মোংলা বন্দরের সাথে যোগাযোগ সচল রাখতে হলে পশুর নদী গভীরভাবে খনন করা খুব প্রয়োজন।কারণ সুন্দরবনের মধ্যদিয়ে মংলা বন্দরে যোগাযোগ স্থাপনের অন্যতম একটি মাধ্যম এটি। মংলা বন্দরের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে হলে সরকারকে দ্রততম সময়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। তাছাড়া নৌযান চলাচল পথ বাধাগ্রস্থ হবে।
Leave a Reply