পিয়ের পল দারাক ও ভেলাম ভান সেন্দেল
অনুবাদ : ফওজুল করিম
নীল বীজ বপনের জন্য বালুমিশ্রিত মাটির একটি ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে তিন থেকে ভার বার কর্ষণ যথেষ্ঠ। যে লাঙ্গল দিয়ে ক্ষেত চাষ করা হয় তা অবিশ্বাস্য রকম রোকে দন্ডসহ লাঙ্গলের ওজন ২৫ থেকে ৩০ পাউন্ডের বেশি হবে না। বাঁকানো একটি কাঠ থেকে এটি বানানো। দন্ডের যে দিকটা মাটির মধ্যে অনুপ্রবেশ করে তাতে লাগানো আছে লাঙ্গলের ফলা। ওজন হবে তিন চার পাউন্ড। কোনো ফাল নাই লাঙ্গলের মাটির খুব গভীরে যায় না ফলা, আবার হলরেখাও সমান গভীর নয়। লাঙ্গল দিয়ে চাষ করলে উপরের মাটি নিচে যায় না, মাটি শুধু সরে যায় দু’দিকে, তাও আবার অসমানভাবে।
লাঙ্গলটি টানে এক জোড়া বলদ। বাংলার বলদ বেশ কর্মপটু, ইউরোপীয় বলদের চাইতে অবশ্যই বেশি তৎপর। চলে এরা ঘোড়ার মত দ্রুত, আর সামনে কোনো বাধা পড়লে উল্টে যায় লাঙ্গল। মাটির ঢেলাগুলো ভেঙে ক্ষেতের জমি চাষের উপযুক্ত করতে কয়েক দিন থেকে বেশ কয়েক বার লাঙ্গল দিতে হয় ক্ষেতে।
লাঙ্গল
ক্ষেতের মাটি বালিযুক্ত হলে প্রথম বার বিঘাপ্রতি লাঙ্গল দিতে হয় আড়াই বার, দ্বিতীয় বার দুবার লাঙ্গল দিলেই চলে আর তৃতীয় বার দেড় বার লাঙ্গল দিলেই চলে। প্রতি বার (অথবা প্রতিদিন) লাঙ্গল দিতে লাগে দু’আনা (৩০ সেন্টাইমস)। এই হিসাবে বালুময় জমিতে লাঙ্গল দেয়ার খরচ আট আনা। ক্ষেতমজুররা ক্ষেতে কাজ করে ভোর ছয়টা থেকে দুপুর বেলা পর্যন্ত। দুপুরের দিকে কৃষক লাঙ্গল থেকে বলদ দু’টিকে খুলে ফেলে। তারপর বদল দুটি চরে খায় দিনভর। অবশ্য বঙ্গদেশের কিছু এলাকার বলদকে জাব খাওয়ায়, অবশ্য সে রকম এলাকা খুবই কম।
Leave a Reply