পিয়ের পল দারাক ও ভেলাম ভান সেন্দেল
অনুবাদ : ফওজুল করিম
নীলচাষের দ্বিতীয় মওশুম হল শীতের পর। ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে শুরু হয়ে মে’র মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রসারিত এই মওশুম। বন্যার সময় যে সব ক্ষেত নিমজ্জিত হয়েছে সামান্য অথবা একেবারেই নিমজ্জিত হয়নি সেই সব উঁচু জমিতে বীজ বপন করতে হবে। কর্দমাক্ত জমি বা মেটেল ক্ষেতেও এই সময় বীজ বপন করতে হয়। যে সব ক্ষেতে উল্লিখিত দ্বিতীয় মওশুমে বীজ বপন করা হয়েছে সেগুলোতে নভেম্বরে শীত পড়ার আগেই কর্ষণ করতে হবে। শীতকালে এগুলো অনাবাদী থাকবে। ফেব্রুয়ারির শেষাশেষি কিংবা মার্চের শুরুতে দক্ষিণা বায়ু প্রবাহ শুরু হলেই এসব ক্ষেত্রে পরপর পুতিনবার কর্ষণ করতে হবে। ক্ষেতে আগাছা বাড়তে থাকলে বীজ বপন শুরু হবার আগে আবার ভর্ষণ করতে হবে ক্ষেত। ফেব্রুয়ারির শেষ দিক থেকে নিয়ে মে’র মাতামাতি পর্যন্ত বীজ বপন চলতে পারে। তবে মে’র শেষে সীজ বুনতে পারলে সব ভাল।
থেকে এই মওশুমে বীজ বপনের দু’টি পদ্ধতি। প্রথম পদ্ধতি হচ্ছে আগে থেকে তৈরি ক্ষেতে বীজ ছড়িয়ে দিয়ে মই দেয়া। দ্বিতীয় পদ্ধতি হচ্ছে ক্ষেত তৈরি না করেই আগে জাজ ছিটিয়ে দিয়ে তারপর মই দেয়া কিন্তু দ্বিতীয় পদ্ধতিতে ওই বীজ দিয়ে পুরো ক্ষেতের কাজ নাও হতে পারে। এর কারণ হচ্ছে মাটির ঢেলাগুলো হয়ত ভাল করে ভাঙেনি, তাই বীজ মাটির ভেতরে যায়নি। আসলে এ অবস্থায় ভাল করে মই দেয়া ছায়ানি তাই পুরো জমিতে ভাল করে বীজ পৌঁছেনি। এজন্যে সাধারণতঃ যে পরিমাণ বীজ দেয়া হয় বিঘা প্রতি তার চেয়ে এক পাউন্ড করে বেশি বীজ দেয়া।
জমিতে মই দেয়া
এক বিঘায় কতটা বীজ লাগবে তা নির্ভর করে একদিকে যেমন বীজের গুণগতমানের উপর কোন পদ্ধতিতে বীজ বপন করা হবে তার উপর। উত্তর ভারতের বীজ হলে সাধারণতঃ লাগে সাড়ে তিন সের (সাত পাউন্ড) আর বঙ্গদেশের নীল বীজ হলে লাগে তিন সের (ছয় পাউন্ড)। কিন্তু কেউ যদি কর্ষণ না করে শুধুমাত্র মই দিয়ে ক্ষেতে বীজ লাগান তাহলে বিঘা প্রতি আধা পাউন্ড করে বেশি বীজ লাগবে। আর যদি কেউ “ছিটানি” পদ্ধতিতে বীজ লাগান তাহলে চার থেকে পাঁচ সের করে বীজ লাগতে পারে কেননা ছিটানো পদ্ধতিতে নষ্ট হয় অনেক বীজ।
Leave a Reply