মনজু বিজয় চৌধুরী, মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজারের রানীগঞ্জের কুশিয়ারা নদী থেকে সকালে ধরা পড়ে বিশাল আকারের একটি বাঘাইড় মাছ। এর ওজন ছিল প্রায় ১১০ কেজি।
মাছটির দাম হাঁকা হয় ৪ লাখ টাকা। যদিও পরে মাছটি কেটে টুকরো টুকরো করে কেজিদরে বিক্রি করেন বিক্রেতারা। সোমবার ৮ জুলাই মহাবিপন্ন প্রজাতির মাছটি বাজারে প্রকাশ্যেই বিক্রি হয় এভাবে। বিলুপ্তপ্রায় এই মাছকে এভাবে প্রকাশ্যে বিক্রি করতে দেখে অবাক হয়েছেন কেউ কেউ। তবে বন বিভাগ বলছে, বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর তারা সংরক্ষিত প্রজাতির এই মাছটি খবর পেয়েছেন।
রোববার ৭ জুলাই দুপুরের দিকে মৌলভীবাজার সদরের জেলা দায়রা জজ আদালতের সামনে বাঘ মাছটির দেখা মেলে।
বিশাল বাঘ মাছ নিয়ে বসেন ছয় মাছ ব্যবসায়ী। উমেদ মিয়া নামের একজন মাছ ব্যবসায়ী মাছটিকে কেটে কেজি দরে বিক্রি শুরু করেন।
তিনি জানান, তারা ছয়জন মিলে রানীগঞ্জের কুশিয়ারা নদীতে এক শিকারির কাছ থেকে মাছটি কিনেছেন। পানিতে ডুব দিয়ে ওই শিকারি মাঠটি ধরেন বলে জানান উমেদ মিয়া। পরে তারা ১ লাখ ৫ হাজার টাকা দিয়ে মাছটি কিনে আনেন। যদিও মাছটির দাম চাওয়া হয়েছিল ৪ লাখ টাকা।
বিশাল এ মাছটিকে কেটে কেজি দরে বিক্রি করছেন উমেদ ও তার শরিকরা। প্রতি কেজি বাঘাইড় মাছ তারা বিক্রি করছেন ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা দরে। এরইমধ্যে বিক্রি হয়ে যায় ৯০ কেজি। আরও প্রায় ১০-১২ কেজির মতো বিক্রির বাকি রয়েছে।
এদিকে, বিশালাকার বাঘাইড় দেখতে ভিড় জমান ক্রেতা ও উৎসুক জনতা। যারা মাছ কিনতে আগ্রহী নন, তারাও ছুটে আসছেন এক নজর বাঘাইড় মাছ দেখতে।
এ ঘটনায় বন্যপ্রাণী রেঞ্জ মৌলভীবাজারের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা মির্জা মেহেদী সারোয়ার বলেন, আমরা অনেক দেরিতে জেনেছি। ততক্ষণে মাছটি বিক্রি হয়ে গেছে। আরও আগে খবর পেলে হয়তো সরেজমিন গিয়ে মাছটি বিক্রির জন্য সংশ্লিষ্টদের জরিমানা করা সম্ভব হতো।
বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ এর তফসিল অনুযায়ী বাঘাইড় (এধহমবঃরপ এড়ড়হপয) প্রজাতির এ মাছটি সংরক্ষিত। এ মাছটিকে কেউ কেউ ‘বাঘ মাছ’ বলেন। মাছটি ধরা, পাচার করা, হত্যা করা এবং খাওয়া আইনত দÐনীয়। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) বাংলাদেশ কর্তৃক এই প্রজাতিটি ‘মহাবিপন্ন’ হিসেবে ‘লাল’ তালিকাভুক্ত।
Leave a Reply