স্কেটস, বগলে ছেলেটা-১০
ডাকঘরের সিড়ি থেকে নেমে আসে ছেলেটা। এখন আর তার কোথাও যাবার তাড়া নেই। স্কেটস্ জোড়া এখন তার বগলে নয়, হাতে। স্কেসের ঝকমকে রানারে হাত ঠান্ডা মেরে যাচ্ছে, কিন্তু সর্বনাশের কিছু নেই তাতে, শহরটা তপ্ত হয়ে উঠেছে, যদিও সূর্য ঢলে পড়েছে অস্তাচলে, কেপে কেপে ওঠা শীতার্ত গা মেলে পৃথিবী তার রোদ পোয়াচ্ছে। গরম হচ্ছে।
গলন্ত বরফ এখন অসংখ্য। জানলায়, কার্নিসে, কিওস্কের ছাদে তাদের স্বচ্ছ জলবিন্দু টুপটাপ ঝরে পড়ছে অবিরাম। শব্দ উঠছে যেন একটানা মেসিনগানের গুলি। বরফ আর হিমানীকণা, তুষার ঝড় আর শৈত্যের দিকে তার ক্ষিপ্র মেসিনগান চালাচ্ছে বসন্ত।
চারিপাশে চাইতে ছেলেটার নজরে পড়ল স্কোয়ারে বরফের স্তরটা বসে বসে গেছে, দেখাচ্ছে যেন চাঁদের উপরিভাগ। তার খড়খড়ে ম্যাড়মেড়ে চটার মাঝে মাঝে দেখা দিয়েছে চান্দ্র গহর। আর পাতার কলি ফুটতে, ঘাস গজাতে এখনো কিছু দেরি থাকলেও ফার গাছগুলোর একেবারে ডগায় ডগায় দেখা দিয়েছে তাজা সবুজ। গত বছরের কালচে কাঁটাগুলো শক্ত, আর নতুন বাসন্তী কাঁটাগুলো এখনো কড়া হয় নি, কামড় দিতে শেখে নি। গালে ছোঁয়ালে বোঝা যায় কী নরম।
স্কেটস্ বগলে ছেলেটা হাঁটছে শহরের রাস্তায়…
সত্যি, বেশভূষার দিকে ওর একেবারেই দৃষ্টি নেই! এমনকি শাদা-টুপি-পরা মেয়েটার সঙ্গে দেখা হবার কথা ভেবেও নিজেকে একটু ফিটফাট করে নেবার চাড় হচ্ছে না ওর। আচ্ছা, ও যে আজ স্কেটিং রিঙ্কে যায় নি, সেটা কি মেয়েটা খেয়াল করেছে? নাকি স্কেটিং করা বাকি সকলের মতো ওর প্রতিও মেয়েটি একেবারে উদাসীন?
ছেলেটা সরে গেল অন্যদিকে তারপর নিজের অজান্তেই গতি বাড়িয়ে হাঁটতে • লাগল শহরের হাসপাতালের দিকে।
Leave a Reply