শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:২১ পূর্বাহ্ন

জাতীয় পার্টির যৌথ সভা অনুষ্ঠিত

  • Update Time : রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০২৪, ৯.৫৭ পিএম

সারাক্ষণ ডেস্ক

আজ বনানীস্থ জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান কার্যালয় মিলনায়তনে পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি’র সভাপতিত্বে  জাতীয় পার্টির জরুরী যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিকেল সাড়ে তিনটায় যৌথ সভা শেষে সভার সিদ্ধান্তগুলো গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন হয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তানিদের শোষন ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে। স্বাধীনতার পর দেশের মানুষ ভেবেছিল শোষন ও বৈষম্যমুক্ত একটি দেশ হবে।কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। কোটা সংস্কার আন্দোলন একটি অরাজনৈতিক ও  অধিকার আদায়ের আন্দোলন হলেও এটি আর ছাত্রদের মধ্যে সীমাবদ্ধ আন্দোলন ছিল না। এক পর্যায়ে এটি ছাত্র জনতার আন্দোলনে রুপ নিয়েছে।

দীর্ঘ দিনের শোষন, বঞ্চনা, গনতন্ত্রহীনতায় মানুষের মধ্যে একটি চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছিল। শিক্ষার্থীদের অহিংস আন্দোলনের উপর অত্যাচার শুরুর পর থেকে তাদের রক্ষা করার জন্য জনগনও তাদের সাথে নেমে পড়ে। ছাত্রদের উপর নিষ্ঠুর নির্যাতন, অসংখ্য ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে। আহত করা হয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশী।
এমন স্বতঃস্ফুর্ত আন্দোলন আমরা অতীতে দেখিনি। এমন বর্বর ও নিপিড়ন মুলক হত্যাকান্ড জাতি কখনও প্রত্যক্ষ করেনি। যার কারনে এ আন্দোলনে স্কুলের ছাত্র থেকে শুরু করে সর্বস্তরের জনগনের অংশগ্রহন করতে দেখা যায়।

যৌথ সভার সিদ্ধান্ত সমূহ

১. জাতীয় পার্টির এই যৌথ সভা সর্বসম্মত ভাবে ছাত্রদেরঅধিকার আদায়ের বৈষম্য বিরোধী কোটা আন্দোলনের প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন জ্ঞপন করে। সেই সাথে চলমান অহিংস ছাত্র আন্দোলনের প্রতি জাতীয় পার্টির সমর্থন অব্যাহত থাকবে।

২. সভায় ছাত্রদের অহিংস আন্দোলনে নিহত ছাত্র – জনতার আত্মর মাগফেরাত কামনা করে পরিবার পরিজেনের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়।

৩. এই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ন্যায্য দাবি শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে দমনের প্রক্রিয়াকে তীব্র নিন্দা জানান।

৪. সভায় ছাত্র আন্দোলনের নিহত আবু সাইদ সহ শহীদদের মামলার এজাহারে প্রকৃত মৃত্যুর কারণ না দিয়ে মিথ্যা এজাহার দাখিলের নিন্দা জানানো হয়।

৫. নিহত ছাত্র/ছাত্রীরা বীর মুক্তিসেনা হিসেবে আখ্যায়িত হবে এবং একটি নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের মাধ্যমে প্রকৃত শহীদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে।

৬. সভায় ছাত্র হত্যার সাথে জড়িত সকল সরকারী কর্মকর্তা, উস্কানিদাতাকে আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

৭. সভা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের হয়রানী/ নির্যাতন না করার আহবান জানানো হয়। ছাত্রদের নামে দায়ের কৃত সকল মামলা প্রত্যাহার করারও আহবান জানানো এবং কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গ্রেপ্তারকৃত সকল ছাত্র ও নেতৃবৃন্দকে অনতিবিলম্বে মুক্তির দাবি করা হয়।

৮. জাতীয় পার্টির এই সভা ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের পরিবার পরিজনকে সম্মান জনক ক্ষতিপূরন প্রদান ও আহতদের সুচিকিৎসা দাবি করছে।

৯. এই সভা অনতিবিলম্বে দেশের ইন্টারনেট সহ সকল সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম সমূহ খুলে দেয়ার আহবান জানাচ্ছে ।
১০. এই সভা সরকারী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থাপনায় হামলার উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে কেপিআই ভূক্ত স্থাপনা সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ন স্থাপনাসমূহের নিরাপত্তা প্রদানের দায়িত্ব সরকারের। সরকার এই দায়িত্ব পালনে ব্যার্থ হয়েছে । এই দায় সরকার এড়াতে পারেনা ।

১১. সভা মনে করে অনতিবিলম্বে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। সেই সাথে প্রকৃত ছাত্রদের হল প্রশাসনের মাধ্যমে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে এবং ক্যম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সহিংসতায় নিহত ও আহত সাংবাদিকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

এসময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি। তিনি বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবীর প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন আছে। আন্দোলনরত ছাত্ররা রাজনৈতিক দলগুলোকে সরাসরি পাশে চায়নি বলেই আমরা তাদের সাথে মাঠে ছিলাম না।

কিন্তু গেল সংসদ অধিবেশনের সমাপনী বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি দীর্ঘ ১০ মিনিট কোটা সংস্কারের দাবীতে আন্দোলনরত ছাত্রদের স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে বক্তৃতা করেন। তিনি বলেন, আন্দোলনরত ছাত্রদের দাবী অনুযায়ী আইন করে কোটা সংস্কারের প্রতি আমাদের সমর্থন আছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, সহিংসতার নামে সরকারী বিভিন্ন স্থাপনা ধংস হয়েছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের দায় স্বীকার করে চলে যাওয়া উচিৎ। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, কোন মন্ত্রী বা এমপি’র বাড়িতে তো হামলা হয়নি। সেখানে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু সরকারী স্থাপনাগুলো রক্ষায় তাদের কোন উদ্যোগ ছিল না। আন্দোলনরতদের গ্রেফতারের নামে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী গ্রেফতার বাণিজ্য চালাচ্ছে।

যৌথ সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, মহাসচিব বীরমুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, কো-চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ফয়সল চিশতী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, লেঃ জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এমপি, এ্যাড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন,

মেজর অব. রানা মোঃ সোহেল, মোঃ জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল আলম রুবেল, একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, মাননীয় চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা- মনিরুল ইসলাম মিলন, মোঃ খলিলুর রহমান খলিল, মেজর অব. সিকদার আনিসুর রহমান, মেজর অব. মোঃ মাহফুজুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মোঃ সামছুল হক, সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ হুমায়ুন খান, কাজী আবুল খায়ের, সৈয়দ ইফতেকার আহসান হাসান, জাতীয় যুবসংহতির

সাধারণ সম্পাদক আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান মিরু, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ হেলাল উদ্দিন, জাতীয় ছাত্র সমাজ এর সভাপতি আল মামুন। উপস্থিত ছিলেন, কো-চেয়ারম্যান এ্যাড. সালমা ইসলাম এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এমপি, গোলাম কিবরিয়া টিপু এমপি, সৈয়দ মোঃ আব্দুল মান্নান, নাসরিন জাহান রতনা, সৈয়দ দিদার বখত্, নাজমা আখতার, মোঃ আতিকুর রহমান আতিক, শেরীফা কাদের।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024