মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:০৪ পূর্বাহ্ন

বাল্যশিক্ষা 

  • Update Time : মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১২.৫০ পিএম

এখন গার্ডিয়ানরা সন্তানদের খুব ছোট বেলা থেকেই ভালো রেজাল্টের চাপে ফেলে দেন। আর সন্তানরা নিজে থেকে- না, পরিবারের কারনে ভালো চাকুরির চাপে পড়ে যায় তা অবশ্য সঠিক জানা যায় না। যার ফলে আগে বাল্যশিক্ষা বলে যে বিষয়টি ছিলো তা অনেকখানি উঠে গেছে। বাল্যশিক্ষার সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার যোগ ছিলো না। তবে জীবনের যোগ ছিলো।

 ব্রিটিশ কলোনি হিসেবে ইংরেজি ভাষার চল প্রায় প্রতি বাড়িতেই ছিলো। অন্যদিকে বাংলা, পার্সি, উর্দু, আরবী ওসংস্কৃত ভাষার চল অনেক বাড়িতেই ছিলো। যার ফলে বাল্যশিক্ষার নানান বই যা আনন্দ থেকে মোরাল সায়েন্স অবধি- ছন্দে, গদ্যে, গল্পে, হিতোপদেশে, সর্বোপরি নৈতিক শিক্ষা বা মোরাল সায়েন্স হিসেবে বালক বা বালিকা আনন্দের সঙ্গেই পড়তো।

এই বাল্যশিক্ষা তখন বালক বালিকাদের শিখিয়েছে, পিতা বা পিতৃব্যস্থানে শুধু জম্মদাতা বা বায়োলজিকাল সম্পর্কের অধিকারী যিনি তিনি একা নন। বাল্যশিক্ষাদানকারী থেকে জীবনের পথে পথে যিনি জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে হাত ধরে শিক্ষা দিয়েছেন তিনি পিতা বা পিতৃস্থানীয়। তিনি যদি স্ত্রী লিঙ্গের হন, মাতৃস্থানীয়। আর এই শিক্ষা শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সীমাবদ্ধ বলে তখন ধরা হতো না, জীবনের চলার পথে পথে, কর্মক্ষেত্রে যিনি বাবার মতো ছায়া দিয়েছেন, পথ দেখিয়েছেন, তিনি পিতৃস্থানীয়। মাতৃলিঙ্গ হলে মাতৃস্থানীয়। এমনকি যিনি প্রসূতির কাজ করতেন তিনিও ধাত্রীমাতা হিসেবে চিহ্নিত হতেন।

ওই বাল্যশিক্ষায় ঔদ্ধত্যকে চরিত্রের ক্রটি হিসেবে ধরা হতো। সেখানে কীভাবে তা জয় করে বিনয়ের অধিকারী হতে হয় সে শিক্ষাই ছিলো বড়। পৃথিবীতে যে অতি বড় ওরিয়র সেও বিনয়ী, তাকে কখনও ঔদ্ধত্য স্পর্শ্ব করে না।

বিনয় মানুষকে শুধু নিজের চরিত্র গড়তে সাহায্য করে না, অপরের চরিত্রের প্রতি সম্মান করতেও শেখায়। অপরের চরিত্রহনন করে যার মস্তিষ্ক অবিদ্যা দিয়ে পরিপূর্ণ সে মনে করে, অপরের ক্ষতি করলাম। কিন্তু বাস্তবে এ যে তার নিজের চরিত্রের ঘাটতি সেটুকু বোঝার ক্ষমতা সে বাল্যশিক্ষার অভাবে অর্জন করেত পারে না।

দীর্ঘদিন হলো সমাজ থেকে, পরিবার থেকে ভাষার সংখ্যা কমে গেছে। স্কুলের পড়ার চাপে হোক আর প্রয়োজন না মনে করার কারণে হোক- বাল্যশিক্ষা গুরুত্বহীন হয়ে নার্সারী পাসের শিক্ষা চেপে বসেছে।

আর শিক্ষা শব্দটি বাল্যশিক্ষার সঙ্গে জড়িত, বাদবাকী ডিগ্রী। শিক্ষাকে এভাবে পেছনে ফেলে ডিগ্রী সমাজকে কোথায় নিয়ে যাবে!

তারপরেও আশা রাখতে হবে, সমাজে পিতার পাশে পিতৃস্থানীয়’র সংখ্যাটা দীর্ঘ হোক,  দীর্ঘ হোক মাতৃস্থানীয়র আর অপরকে সম্মান করে নিজেকে সম্মানিত করার পথে বেড়ে ওঠার পথটি যেন খোলা থাকে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024