রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৪ পূর্বাহ্ন

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-২০)

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪.০০ পিএম

শশাঙ্ক মণ্ডল

দ্বিতীয় অধ্যায়

তারা এই মেলায় বিক্রয়ের জন্য সারা বছর ধরে নৌকা তৈর করত। মাল পরিবহণের জন্য সওদাগরী নৌকার নাম ভড়, মালঙ্গী নৌকা, কিস্তি। যাত্রীবাহী নৌকাতে ছই বা আচ্ছাদন -এর ব্যবস্থা থাকত। নৌকায় পাল খাটানো হত বাতাসের সাহায্যে দ্রুত যাতায়াতের জন্য। দক্ষ মাঝিরা বড় বড় নৌকায় একাধিক পাল খাটিয়ে বাতাসের সাহায্যে নৌকা দ্রুত চালাতে পারত। এ-ছাড়া স্রোতের বিপরীত-এ যাবার জন্য নৌকার মাঝখানে একটি খুঁটি রাখত এবং খুঁটির মাথায় খুব লম্বা দড়ি বেঁধে তীর দিয়ে এ দড়ি টেনে নিয়ে যেত-একে গুণ টানা বলা হত। জোয়ার বা ভাটার অনুকূলে দ্রুত যাবার জন্য মাঝিরা জল-বাদামের সাহায্য নিত। নৌকার পিছনে একটা তক্তা এমনভাবে নামিয়ে দেওয়া হত যাতে নদীর জল বেঁধে নৌকাটাকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

ইংরেজ রাজত্বের শুরুতে আমাদের প্রাচীন নৌশিল্পকে ধ্বংস করার চেষ্টা হল। ১৪-১-১৭৮৯ তারিখে সরকারের রাজস্ব বিভাগ থেকে বিজ্ঞপ্তি মারফৎ জানিয়ে দেওয়া হল, ১লা মার্চ ৮৯ এর পরে নিম্নলিখিত মাপের বড় নৌকা তৈরি করা যাবে না।

Luckas 4090 cubits Length

2.504 cubits bredth

Jelkias 30 70 cubits Length

3.505 cubits bredth

এর সঙ্গে দশ দাঁড়যুক্ত চাঁদপুর পানসী নৌকা তৈরির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল। যশোর নদীয়া ২৪ পরগণা বরিশাল প্রভৃতি এলাকার জেলা শাসকদের নির্দেশ দেওয়া হল এ ব্যাপারে নজর রাখার জন্য এবং এই মাপের যেসব নৌকা আছে তা বাজেয়াপ্ত করার জন্য। বিনা অনুমতিতে এ ধরনের নৌকা মেরামত করলে কারিগরদের একমাসের জেল এবং ২০ ঘা বেত্রাঘাতের ব্যবস্থা করা হল।(১০)

সে যুগে নদীপথে গোয়ালন্দ থেকে আড়িয়াল-খাঁ পশর শিবসা হরিণভাঙা রায়মঙ্গল গোসাবা মাতলা জামিরা ঠাকরুন সপ্তমুখী দিয়ে পশ্চিমে সাগরদ্বীপের নিকটে বড়তলা নদী দিয়ে মার্ডপয়েন্টে এসে পূর্ব বাংলা আগত নৌকাগুলি হুগলি নদীতে প্রবেশ করত। এ পথ বর্তমানে আন্তর্জাতিক নদীপথ হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আসাম স্টীম নেভিগেশন কোম্পানি বিংশ শতকের দ্বিতীয় দশক থেকে এ পুথে আসাম পূর্ব বাংলার মাল পরিবহনণ করে এসেছে। ভারী নৌকা ও স্টীমার এ পথে যাতায়াত করত কিন্তু সাধারণ নৌকা যাত্রী নিয়ে এ পথে চলত না।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024