সারাক্ষণ ডেস্ক
দেশের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রগুলোতে শিশুদের বৈধ অভিভাবক, মানবাধিকার কর্মী এবং আইনজীবীদের সাথে নিয়মিত সাক্ষাতের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে শিশুর প্রতি শারীরিক ও মানসিক শাস্তি নিরসন কোয়ালিশন। ইতোমধ্যে আমরা জানতে পেরেছি যে, টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রতে প্রতি মাসে মাত্র দুই দিনের জন্য সাক্ষাৎ করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গ্রেফতার হওয়া কিছু স্কুল ছাত্র শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ছিল, সে সময় তাদের পক্ষে আদালতে আবেদন করার জন্য আইনজীবীরা দেখা করতে চাইলেও শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র হতে প্রতি মাসে মাত্র দুটি নির্দিষ্ট দিনের নিয়ম উল্লেখ করে তাদের পরিদর্শনের সীমাবদ্ধ তৈরী করা হয়।
এই ধরনের বিধিনিষেধ বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩১, ৩২ ও ৩৩-তে বর্ণিত জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকারের নিশ্চয়তার ও মৌলিক অধিকারের ও নিজ পছন্দ অনুসারে আইনজীবী নিয়োগের অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। পাশাপাশি শিশু আইন ২০১৩ এর ৬৩(৪) ও ৫২ ধারা অনুযায়ী, প্রত্যেক শিশুর সর্বোত্তম স্বার্থ রক্ষা, প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ ও মানবিক আচরণ নিশ্চিত করার এবং শর্ত ও জামানত সাপেক্ষে জামিনে মুক্তি লাভের বিধান আছে। উপরন্ত, এই পরিদর্শন বিধিনিষেধ আরোপ-জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ এর ৩৭ (সি) অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করে, যা প্রতিটি শিশুর চিঠিপত্র এবং সাক্ষাতের মাধ্যমে তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখার অধিকারের কথা বলা হয়েছে। শিশু অধিকার সনদ এর অনুচ্ছেদ ৩ (১) আরও বলা হয়েছে যে সন্তানের সর্বোত্তম স্বার্থ অবশ্যই শিশু সম্পর্কিত সমস্ত পদক্ষেপের প্রাথমিক বিবেচ্য হতে হবে।
এমতাবস্থায়, বিচার ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় সংস্কার এর অংশ হিসেবে অবিলম্বে দেশের সকল শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে আটক শিশুদের পরিদর্শনের অধিকার নিশ্চিত করা, শিশুর সর্বোত্তম কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য বৈধ অভিভাবক, আইনজীবীদের ও মানবাধিকার কর্মীদের সাথে সাক্ষাতের অধিকার ও সুযোগ থাকে তা নিশ্চিত করতে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি নির্দেশনা জারি করার জোর দাবী জানাচ্ছে শিশুর প্রতি শারীরিক ও মানসিক শাস্তি নিরসনে কোয়ালিশন।
Leave a Reply