সারাক্ষণ ডেস্ক
ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নায়েব আলী জোয়ার্দ্দারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে তাঁকে জেলা শহরের আরাপপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। র্যাব-৬-এর এক খুদে বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ভোরে উখিয়ার পালংখালি হাকিম পাড়া ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ক্যাম্প মাঝি কবির আহমেদ।
নিহতরা হলেন, উখিয়ার পালংখালি ক্যাম্প ১৪ ই-২ ব্লকের বাসিন্দা আব্দুর রহিম, তার দুই শিশুর সন্তান আব্দুল হাফেজ (১০) ও আব্দুল ওয়াহাদ (৪)।
ক্যাম্প মাঝি কবির আহমেদ বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে মুষলধারে শুরু হওয়া বৃষ্টি সারা রাতও চলে। ভারী বৃষ্টির তোড়ে শুক্রবার ভোরে পাহাড় ধসের পালংখালি ক্যাম্প ১৪ ই-২ ব্লকের বাসিন্দা আব্দুর রহিমের ঘরটি ভেঙে পড়ে। এতে ঘরের সবাই মাটিচাপা পড়ে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেন। ততক্ষণে আব্দুর রহিম তার দুই শিশুর সন্তানসহ মারা যায়।
স্ক্যান্ডিনেভীয় দেশ ফিনল্যান্ড। এখানে প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়েই শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রমটি পুরোপুরি মেধাভিত্তিক ও উচ্চ পর্যায়ের প্রশিক্ষণনির্ভর। শিক্ষকদের বেতনও অনেক বেশি। ফিনল্যান্ডের শিক্ষা ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সেখানে স্থানীয় মুদ্রায় নিম্ন মাধ্যমিক স্তরের একজন শিক্ষকের সর্বনিম্ন মাসিক বেতন প্রায় ৩ হাজার ৩১৮ ডলারের সমপরিমাণ, যা বাংলাদেশে সমপর্যায়ের একজন শিক্ষকের বেতনের তুলনায় প্রায় ২৮ গুণ। অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও অনেক বেশি। এ কারণে দেশটির সবচেয়ে মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায়ই আগ্রহ দেখা যায় সবচেয়ে বেশি।
বাংলাদেশেও ‘ফিনল্যান্ডের আদলে একই ধরনের শিক্ষাক্রম’ চালুর উদ্যোগ নিয়েছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। যদিও এ শিক্ষাক্রমকে কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের পূর্বশর্তগুলো উপেক্ষিতই থেকে যায়। নতুন শিক্ষাক্রমের জন্য প্রণীত পাঠ্যপুস্তক নিয়েও ছিল মানহীনতার অভিযোগ। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে প্রচুর অর্থ ব্যয় হলেও এর মান নিয়েও প্রশ্ন ছিল শুরু থেকেই। অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষে এ শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয় গত বছর। সে সময় নতুন শিক্ষাক্রম ও এর জন্য প্রণীত পাঠ্যপুস্তক নিয়ে প্রশ্ন তুলতে থাকেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। অভিযোগ ওঠে, এ শিক্ষাক্রম তৈরি করতে গিয়ে দেশের বাস্তব প্রেক্ষাপটকে বিবেচনায় নেয়া হয়নি। আবার নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিকে বইয়ের কনটেন্টও ছিল নিম্নমানের। যদিও তৎকালীন সরকারের দাবি ছিল, নতুন এ শিক্ষাক্রম তৈরি হয়েছে ফিনল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, জাপানসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর শিক্ষাব্যবস্থার আদলে।
নতুন শিক্ষাক্রম তৈরি এবং এর জন্য পাঠ্যপুস্তক গ্রন্থনার সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থাগুলোর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি শিক্ষাবিদরাও জড়িত ছিলেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনের তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির সদস্য শিক্ষাবিদদের মধ্যে ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. অমল কৃষ্ণ হালদার, রোবোটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. লতিফা জামান, মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহতাব খানম, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক ড. এম তারিক আহসান, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ইকবাল রউফ মামুন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আবুল মোমেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ প্রমুখ। এছাড়া পদাধিকারবলে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান বা সদস্যদেরও এ কমিটিতে রাখা হয়।
নতুন তরতাজা দেশ গড়তে ব্যবসায়ীদের কাছে সহায়তা চেয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘ন্যাশনাল বিজনেস ডায়ালগ’ অনুষ্ঠানে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংলাপের সময় তিনি এ সহায়তা চান। ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসিবি) বাংলাদেশ এবং ১৫টি জাতীয় বাণিজ্য সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সংলাপে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ডিসিসিআই, এমসিসিআই, এফআইসিসিআই, বিএবি, বিকেএমইএ, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের মতো সংগঠনের নেতা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এতে সম্প্রতি বিভিন্ন শিল্পকারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের কারণে দেশের অর্থনীতিতে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার চিত্র তুলে ধরেন ব্যবসায়ীরা।
শ্রমিক, শিল্প-মালিক এবং সরকারকে এক টিম হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমার একটা আশা, যতদিন থাকি, শ্রমিক-মালিক সম্পর্ককে একটা সুন্দর জায়গায় নিয়ে যাবো। শ্রমিক-মালিক, সরকার একসঙ্গে টিম হয়ে এটা করবে। ব্যবসা করা একটা সংগ্রাম, এ সংগ্রামটা আমরা সহজ করবো। তিনি বলেন, যতটুকু সময় আমরা সরকারে আছি, ততটুকু সময়েই টিম হিসেবে কাজ করবো। সবাই মিলে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান প্রথাগত আন্দোলন ছিল না। তারা এটা জেনেই রাস্তায় নেমেছিল যে, না-ও ফিরতে পারে বাড়িতে। প্রাণের বিনিময়ে তারা লক্ষ্য অর্জন করেছে। নতুন বাংলাদেশের জন্য তরুণদের লড়াইয়ের প্রশংসা করে তিনি বলেন, তারা এ সুযোগ না করে দিলে জাতিকে পচনের হাত থেকে রক্ষা করা যেত না। তাই আমাদের সুস্থ-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে এগিয়ে যেতে হবে।
ব্যবসায়ীদের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, চিন্তা করে দেখুন, কী এ সুযোগ। সবকিছু থেকে আপনি মুক্ত। আপনি নতুনভাবে জন্মগ্রহণ করেছেন, নতুনভাবে অগ্রসর হবেন। নতুন করে যে স্বপ্ন তারা আমাদের মনে জাগিয়ে দিয়েছে সেটা যদি আপনার মনে রেখাপাত করে তাহলে সে স্বপ্নপূরণে আপনিও শরিক হবেন। এ সুযোগ আর কখনো আসে কিনা জানি না। এ সুযোগ আমরা যেন হারিয়ে না ফেলি।
জেনেভা কনভেনশনে যোগদান প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এটা বহুদিন পড়ে আছে, আমরা জেনেভা কনভেনশনে যোগ দিতে পারিনি। সবাই যখন একটা টিম হলাম; শ্রমিক-মালিক, সরকার সবাই যখন টিম হলাম ওটাও আমরা করে ফেলবো। তিনি বলেন, ওটা না করলে সামনে এগিয়ে যাওয়া কষ্টকর হবে। যেখানেই যাবেন এটা বাধা দেবে। পশ্চিমারা বলছে, তোমরা শ্রমিকদের যা শর্ত, প্রাপ্য এগুলোতে তোমরা সই করছো না। কাজেই যদি আমাদের এগিয়ে যেতে হয় পরিষ্কারভাবে হতে হবে। ড. ইউনূস বলেন, আমাদের সাহস দিন, এগিয়ে আসেন, আমরা সবাই মিলে আইএলও কনভেনশনে স্বাক্ষর করে ফেলি।
Leave a Reply