নিজস্ব প্রতিনিধি
মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস নগদে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশাসক নিয়োগ করা কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রিটের শুনানি শেষে অর্থসচিব, টেলিযোগাযোগ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং নগদের প্রশাসক মুহাম্মদ বদিউজ্জামান দিদারকে ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলেছেন উচ্চ আদালত।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মোহাম্মদ মাহমুদুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন। আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন ব্যারিস্টার মো. মোস্তাফিজুর রহমান খান। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মো. মোস্তাফিজুর রহমান খান। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ নওশাদ জমির। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
আইনজীবী মুস্তাফিজুর রহমান খান বলেন, রিটের শুনানি শেষে অর্থসচিব, টেলিযোগাযোগ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং নগদের প্রশাসক মুহাম্মদ বদিউজ্জামান দিদারকে ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলেছেন উচ্চ আদালত। তিনি আরও বলেন, যেহেতু প্রশাসক ইতোমধ্যেই দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী , তার মেয়াদ এক বছর, তাই হাইকোর্ট তার কার্যক্রম স্থগিত করেননি।
এর আগে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’ এ প্রশাসক ও সহায়ক কর্মকর্তা নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম অফিসে কর্মরত পরিচালক মুহম্মদ বদিউজ্জামান দিদার। গত ২১ আগস্ট রাতে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নগদের প্রতিষ্ঠাতা তানভীর মিশুক মনে করেন, প্রচলিত আইনের তোয়াক্কা না করে দেশের অন্যতম সেরা মোবাইল আর্থিক প্রতিষ্ঠান নগদে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। মূলত নগদকে ধ্বংস করার মাধ্যমে অপর একটি প্রতিষ্ঠানকে সরাসরি সুবিধা দেওয়ার জন্যেই পরিকল্পিতভাবে এমন কাজ করা হয়েছে।
একই সঙ্গে, নগদের কর্মীদেরকে হয়রানি বন্ধ করা এবং জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য না করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। এরপর গত ১০ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতে নগদের ডিরেক্টর জেনারেল সাফায়েত আলমের পক্ষে রিটটি দায়ের করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ নওশাদ জমির।
২০১৭ সালে ডাক বিভাগের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে ২০১৯ সালের মার্চে অনুষ্ঠানিভাবে যাত্রা করে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকায় তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয় নগদের। গত ২১ আগস্ট সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ব্যাংক নগদে প্রশাসক নিয়োগের ঘোষণা দেয়।
পরদিন ভোরের আগেই নগদ অফিসে পুলিশ চলে আসে এবং কর্মীদেরকে নগদ অফিসে ঢুকতে না দিয়ে প্রশাসকের দখল বুঝে নেয়। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই ‘কাউকে ছাঁটাই করা হবে না’ বলে ঘোষণা দিলেও এরইমধ্যে নগদের বেশ কয়েকজন নিবেদিত প্রাণ কয়েকজন কর্মীকে জোরপূর্বক অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। কাউকে কাউকে পদত্যাগেও বাধ্য করা হয়েছে।
Leave a Reply