শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০০ অপরাহ্ন

প্রকৃতিবিদের কাহিনী (কাহিনী-৩১)

  • Update Time : বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৮.০৩ পিএম

পিওতর মান্তেইফেল

মৃত্যুর মুখে

১৯৩৪ সালের বসন্তে মস্কোর চিড়িয়াখানায় প্রথম বাচ্চা দেয় আবওয়ালা আফ্রিকান বন-শুয়োর। সাতটি বাচ্চা হয় তার, কিন্তু আদৌ তার যেন কোনো মাতৃস্নেহ নেই দেখে অবাক লাগত। লোকেদের কাছ থেকে সে তার ছানাদের রক্ষা করত হিংস্রভাবে, কিন্তু নিজে সে ঘুরে বেড়াত বাচ্চাদের দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে, তখনো বাচ্চাগুলো তেমন চটপটে নয়, যেকোনো মুহূর্তে চাপা পড়তে পারত।

তবে প্রথম দিন থেকেই আবওয়ালীর ছানারা দেখা গেল অসাধারণ চটপটে, চঞ্চল, ক্ষিপ্র।

মা জায়গা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেই তারা মায়ের খুর থেকে আত্মরক্ষা করে ছুটে যেত দিগ্বিদিকে।

এমনকি যখন তাদের খিদে পেত, মাই চুষতে আসত, তখনো ভারি হাশিয়ার থাকত তারা, মায়ের এতটুকু নড়াচড়াতেই চট করে লাফিয়ে পালাত।

তাহলেও সাতটার মধ্যে দুটো বাচ্চা মারা গেল মায়ের খুরের তলায়।

এরা ছিল সবচেয়ে দুর্বল, অন্যদের চেয়ে কম চটপটে।

ব্যাপারটা কী?

সত্যিই কি আবওয়ালীর বাৎসল্যবোধ নেই?

অবশ্যই আছে। তবে সেটা খুবই স্বকীয় ধরনের। আবওয়ালাদের প্রাকৃতিক নির্বাচন শুরু হয় জন্মগ্রহণের মুহূর্তে থেকেই।

বাচ্চাদের নিয়ে মায়ের যে অতটা আপাতদৃশ্যমান অযত্ন, সেটা সবচেয়ে প্রাণশক্তিমানদেরই টিকে থাকতে সাহায্য করে। জাতটার ভবিষ্যৎ বিকাশ নিশ্চি হয় এই ধরনের বাচ্চা দিয়েই। বন্য জীবনে, ভয়ঙ্কর আফ্রিকান হিংস্র জন্তুদের অবিরাম পরিবেষ্টনে সেটা দরকার।

একটা জিনিস লক্ষণীয়। জন্ম থেকেই আবওয়ালাদের বাচ্চাদের সামনের দু’পায়ের খুরের ওপরকার অংশ থাকে কড়া-পড়া, বড়োদের বেলায় এসব জায়গার চামড়া খুবই মোটা আর রুক্ষ। এই প্রত্যঙ্গগুলোকে ভুল করে বলা হয় ‘হাঁটু’, খাবার সময় এতে ভর দিয়ে ওরা চলে।

নবজাতকদের ওপরের ঠোঁটে বেশ চোখে পড়ে গর্ত, পরে তার ভেতর দিকে বেরয় দাঁত, বয়স্ক শুয়োরদের বেলায় তা খুবই বিকশিত। তথাকথিত ‘হাঁটুতে’ ভর দিয়ে এই দাঁতের সাহায্যে এরা গাছের মূল আলগা করে তা ছোঁড়ে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024