শ্রী নিখিলনাথ রায়
কিন্তু মীর নজফ খাঁ নিশ্চিন্ত না থাকিয়া অনুসন্ধানে অবগত হইলেন যে, পরিখার যে অংশ পর্ব্বতশ্রেণীর সহিত মিলিত হইয়াছে, তাহার নিকটে ঝিলের একটি স্থানের জল নাতিগভীর হওয়ায় তাহা অনায়াসে অতিক্রম করিয়া ইংরেজশিবিরে যাওয়া যাইতে পারে। নজফ খাঁ কতকগুলি সুশিক্ষিত সৈন্য লইয়া ঝিলের সেই অল্প- গভীর স্থানটি পার হইয়া, ইংরেজ শিবির আক্রমণ করিলেন। তৎপূর্ব্বেই বৃদ্ধ নবাব মীরজাফর ইংরেজদিগের সহিত মিলিত হইয়াছিলেন।
নজফ খাঁর আক্রমণে তিনি ভীত হইয়া, গঙ্গাবক্ষে নিজ নৌকায় পলায়ন করেন। তাঁহার নৌকা নদীগর্ভে নিমগ্ন হওয়ার উপক্রম হইলে, ইংরেজেরা কতকগুলি তেলিঙ্গাকে তাঁহার দেন। নজফ খাঁ ইংরেজ শিবির লুণ্ঠনপূর্ব্বক সাহায্যের জন্য পাঠাইয়া অনেক দ্রব্য লইয়া আপনা- দিগের সুরক্ষিত শিবিরে প্রত্যাগত হন। তিনি আরও দুই এক বার ইংরেজ শিবির আক্রমণ করিলে, ইংরেজেরা ব্যতিব্যস্ত হইয়া কোন্ পথ দিয়া তিনি উপস্থিত হন, তাহার আবিষ্কারে প্রবৃত্ত হইলেন।
সহসা এক সুযোগ হইল। একটি ইংরেজ সৈন্য কোন কারণে কোম্পানীর কার্য্য হইতে বিতাড়িত হওয়ায়, মীরকাশেমের সৈন্তদিগের সহিত যোগ দেয়। এক্ষণে সে আবার বিশ্বাসঘাতকতা অবলম্বন করিয়া, ইংরেজদিগের আক্রমণের সুযোগ বলিয়া দিবার জন্য ইংরেজশিবিরে উপস্থিত হইল। সে সেই ঝিল পার হওয়ার পথ জানিত। ইংরেজেরা তাহার পূর্ব্ব অপরাধের ক্ষমা করিয়া, তাহাকে অভয় প্রদান করিলেন। পরে তাহার পরামর্শানুসারে অন্যান্য উপকরণ সংগ্রহ করিয়া তাঁহারা নবাবশিবির আক্রমণে উৎসুক হইলেন।
১৭৬৩ খৃঃ অব্দের ৪ঠা সেপ্টেম্বর ও হিজরী ১১৭৭ অব্দের ২৬শে সফর রাত্রিশেষে ইংরেজ সৈন্য জম্বুকবৃত্তি অবলম্বনপূর্ব্বক উধুয়ানালার শিবির আক্রমণ করিতে অগ্রসর হয়। কাপ্তেন আর্ভিংএর অধীন এক দল সৈন্য ঝিল পার হইয়া এবং কাপ্তেন মোরানের অধীন আর এক দল সৈন্য পরিখা অভিমুখে গমন করিয়া বিপক্ষদিগকে কৃত্রিম আক্রমণে ভীত করিবার জন্য যাত্রা করিল। আবশ্যক হইলে, মোরান উক্ত কৃত্রিম আক্রমণকে প্রকৃত যুদ্ধে পরিণত করিবার জন্য আদিষ্ট হইলেন। আর এক দল সৈন্য মেজর গবর্ণরের অধীনতায় তাঁহাদের সাহায্যের জন্য,,,,,,,
Leave a Reply