সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “খাগড়াছড়ি থেকে সংঘাত রাঙামাটিতেও, নিহত ৪”
খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় তিনজন নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে রাঙামাটিতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিলটি শহরের বনরূপা এলাকায় পৌঁছালে জনতা তাঁদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে রাঙামাটির বিভিন্ন এলাকায় দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। গতকাল দুপুরে রাঙামাটি শহরের উত্তর কালিন্দীপুর এলাকায়।ছবি: সুপ্রিয় চাকমা
খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি ও বাঙালি সংঘাতের রেশ পার্শ্ববর্তী জেলা রাঙামাটিতেও ছড়িয়েছে। সংঘর্ষ–সহিংসতায় পার্বত্য এই দুই জেলায় ৪ জন নিহত এবং অন্তত ৮০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গতকাল শুক্রবার দুই জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। বৃহস্পতিবারের সংঘাত, অগ্নিসংযোগ ও গোলাগুলির ঘটনার পর থেকে পাহাড়ে বসবাসকারী পাহাড়ি-বাঙালি উভয় সম্প্রদায় আতঙ্কের মধ্যে পড়েছে। গত রাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে। দুই জেলায় সেনা, পুলিশ ও বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সৃষ্ট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে বলে গতকাল অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। আজ শনিবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল দুই জেলা পরিদর্শন করবে জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সব বাহিনীকে সর্বোচ্চ সংযম দেখাতে এবং পার্বত্য তিন জেলায় বসবাসকারী সব মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইত্তেফাক এর একটি শিরোনাম “তিন দফায় অন্তত ১৫ জন মিলে পেটান তোফাজ্জলকে”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের অতিথিকক্ষে তোফাজ্জল হোসেনকে (৩২) পিটিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তার ছয় শিক্ষার্থী। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেন শুক্রবার বিকেল থেকে এই ছয় শিক্ষার্থীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে রাত ৯ টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
সংশ্লিষ্টসূত্র বলছে, তিন ধাপে ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী তোফাজ্জলকে মারধরে অংশ নেন। জবানবন্দিতে ওই ছয় শিক্ষার্থী তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবার নাম প্রকাশ করেছেন। শিক্ষার্থীরা বলেছেন, চোর সন্দেহে তিন দফায় তোফাজ্জলকে মারধর করা হয়।
আদালতে জবানবন্দি দেওয়া ছয় শিক্ষার্থী হলেন—ঢাবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জালাল মিয়া, মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মো. মোত্তাকিন সাকিন এবং আল হুসাইন সাজ্জাদ, আহসানউল্লাহ ও ওয়াজিবুল আলম নামের তিন শিক্ষার্থী। তারা সবাই ফজলুল হক মুসলিম হলের আবাসিক ছাত্র। তাদের মধ্যে জালাল মিয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপসম্পাদক। কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে তিনি ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগে করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন। বাকিদের রাজনৈতিক পরিচয় জানা যায়নি।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ছয় শিক্ষার্থীর সবাই বলেছেন, ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে ছাত্রদের ছয়টি মুঠোফোন ও মানিব্যাগ চুরি হয়েছিল। তোফাজ্জল সেদিন রাত আটটার দিকে হলের ফটক দিয়ে মাঠের ভেতরে যান। তখন কয়েকজন শিক্ষার্থী চোর সন্দেহে তাকে আটক করে হলের অতিথিকক্ষে নিয়ে যান। পরে জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাকে স্টাম্প দিয়ে মারধর করা হয়। এরপর তাকে হলের ক্যানটিনে নিয়ে রাতের খাবার খাওয়ানো হয়। খাওয়া শেষে আবার তাকে হলের অতিথিকক্ষে এনে ব্যাপক মারধর করেন একদল শিক্ষার্থী। রাত ১২টার দিকে হলের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষক তোফাজ্জলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তারা জানতে পারেন চিকিৎসাধীন অবস্থায় তোফাজ্জল মারা গেছেন।
বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “নিঃশেষের কাছে বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডেই অন্তর্বর্তী সরকারের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি”
জাতীয় গ্রিডে প্রতিদিন গ্যাস যুক্ত হচ্ছে ২ হাজার ৫৯০ মিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্যে মার্কিন কোম্পানি শেভরন পরিচালিত বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্র থেকে আসছে ১ হাজার ২ মিলিয়ন ঘনফুট বা ৩৯ শতাংশ। যদিও জাতীয় গ্রিডে গ্যাসের বৃহত্তম এ উৎসের মজুদ এরই মধ্যে নিঃশেষ হয়ে পড়ার কথা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিবিয়ানা থেকে গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে তা দেশের জ্বালানি ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তাকে মারাত্মক বিপর্যয়ে ফেলতে পারে। হয়ে উঠতে পারে অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য বড় ঝুঁকির কারণ।
গ্যাস মজুদের টুপি (প্রমাণিত ও সম্ভাব্য) হিসাব অনুযায়ী, বিবিয়ানায় গ্যাসের মজুদ থাকার কথা প্রায় ছয় ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ)। যদিও এরই মধ্যে এখান থেকে উত্তোলন ছয় টিসিএফ ছাড়িয়েছে। শেভরনের পক্ষ থেকে গত বছর মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে বাংলাদেশে অতিরিক্ত ৪৮১ বিলিয়ন কিউবিক ফুট (বিসিএফ) গ্যাস মজুদের কথা জানানো হয়। পেট্রোবাংলা সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, এ মজুদও বিবিয়ানার। সংস্থাটির সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, এরই মধ্যে সেই গ্যাসেরও সিংহভাগ উত্তোলন হয়েছে। সে অনুযায়ী দেশের গ্যাস উত্তোলনে শীর্ষে থাকা ক্ষেত্রটির মজুদ এখন নিঃশেষের কাছাকাছি।
দেশে উত্তোলিত গ্যাস ছাড়াও জাতীয় গ্রিডে প্রতিদিন এলএনজি যুক্ত হওয়ার কথা দৈনিক ১ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট। কিন্তু এ এলএনজির পুরোটাই আমদানিনির্ভর। এছাড়া এর সরবরাহ ব্যবস্থাপনার কেন্দ্রে রয়েছে ভাসমান দুটি টার্মিনাল বা এফএসআরইউ। এর মধ্যে একটি অচল পড়ে ছিল প্রায় সাড়ে তিন মাস। ফলে জাতীয় গ্রিডে দিনে ৫৫০ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি সরবরাহ দেয়া যায়নি। টার্মিনালটি সচল হলেও এখন এলএনজি আমদানি না থাকায় এ সরবরাহ বাড়ানো যাচ্ছে না। এলএনজির সরবরাহ না থাকায় এরই মধ্যে চাপে পড়েছে দেশের শিল্প, বিদ্যুৎ ও সার উৎপাদন।
গ্যাস মজুদের প্রাথমিক প্রাক্কলিত হিসাব জিআইআইপি (গ্যাস ইনিশিয়ালি ইন প্লেস) অনুযায়ী, বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্রে মোট মজুদের পরিমাণ ৮ হাজার ৩৮৩ বিসিএফ। তবে এ গ্যাসের পুরোটাই উত্তোলনযোগ্য নয়। ভূতত্ত্ববিদদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গ্যাস রিকভারি ফ্যাক্টর অনুযায়ী এ ধরনের গ্যাস ক্ষেত্রে মোট মজুদের ৭০ শতাংশ উত্তোলনযোগ্য।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম“সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান “
বাঙালি ও পাহাড়িদের সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দুই জেলার মানুষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে সরকার। শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়েছে, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সৃষ্ট সমস্যা নিরসনে
আন্তরিকভাবে কাজ করছে সরকার। ১৮ই সেপ্টেম্বর জনৈক ব্যক্তিকে গণপিটুনি ও পরে তার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে চলমান হামলা, আক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনায় সরকার গভীরভাবে দুঃখিত এবং ব্যথিত। সরকারের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ সংযম দেখাতে এবং পার্বত্য তিন জেলায় বসবাসকারী সকল জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেখানে শান্তি, সৌহার্দ্য ও সমপ্রীতি নিশ্চিতকরণে সরকার বদ্ধপরিকর।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের বার্তায় বলা হয়েছে, আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়া এবং ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত না হওয়ার জন্য সকলকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আইন নিজ হাতে তুলে নেয়া এবং যেকোনো সম্পত্তি ধ্বংস করা দণ্ডনীয় ও গর্হিত অপরাধ। সহিংসতার সঙ্গে সম্পর্কিত সকল ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত আর দায়ী ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করা হবে। এ লক্ষ্যে একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি খুব শিগগিরই গঠন করা হবে। আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া শনিবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গাামাটি পরিদর্শন করবেন। প্রতিনিধিদলে থাকবেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এবং প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী।
Leave a Reply