সারাক্ষণ ডেস্ক
বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন আইসিডিডিআর,বি-র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদকে ২০২৪ সালের জন্য গোলকিপারস চ্যাম্পিয়নদের একজন হিসেবে সম্মানিত করেছে। ড. আহমেদ শিশু পুষ্টি নিয়ে তাঁর অগ্রণী অবদানের জন্য এই বিরল সম্মাননা পেয়েছেন। শিশু পুষ্টি, বিশেষ করে মাইক্রোবায়োম-ডিরেক্টেড রেডি-টু-ইউজ বা সহজে ব্যবহারোপযোগী থেরাপিউটিক ফুড (MD-RUTF) নিয়ে তাঁর কাজ, যা বাংলাদেশ এবং বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে অপুষ্টিতে ভুগছে এমন শিশুদের অপুষ্টি মোকাবেলায় সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সময় ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সন্ধ্যায় গোলকিপার্স ২০২৪: রেসিপি ফর প্রোগ্রেস শীর্ষক অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে সন্মাননাটি ঘোষণা করা হয়। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ সপ্তাহের সাথে মিলিয়ে এই উনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়। একটি উষ্ণায়ন বিশ্বে বৈশ্বিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য পুষ্টি এবং উদ্ভাবনী সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করে এটি আয়োজন করা হয়। ড. তাহমিদ আহমেদ-সহ দারিদ্র্য মোকাবেলা এবং খাদ্য নিরাপত্তার উন্নতিতে অবদানের জন্য ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা এবং ভারতের মিঃ রতন টাটা-সহ মোট দশজন এই সম্মাননা পেয়েছেন।
ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির ড. জেফরি গর্ডনের সাথে পরিচালিত ড. আহমেদের যুগান্তকারী গবেষণা মাইক্রোবায়োম-ডিরেক্টেড রেডি-টু-ইউজ থেরাপিউটিক ফুড উদ্ভাবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি শিশুদের জন্য একটি পরিপূরক খাবার যা অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির মাধ্যমে গুরুতর অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্যে তৈরী করা হয়েছে। এই উদ্ভাবনী পরিপূরক খাবার বর্তমানে বাংলাদেশসহ পাঁচটি দেশে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা শিশুদের বৃদ্ধি এবং পুষ্টির উন্নয়নে আশাব্যঞ্জক সাফল্য দেখাচ্ছে।
এই বিশেষ স্বীকৃতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে ড. আহমেদ বলেন, “গোলকিপারস চ্যাম্পিয়ন হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া একটি বড় সম্মানের বিষয়। এই পুরস্কারটি আইসিডিডিআর,বি-তে আমার সহকর্মী এবং বিশ্বজুড়ে অনেক সহযোগী গবেষকসহ অনেকের আন্তরিক প্রচেষ্টার একটি দৃষ্টান্ত। অপুষ্টি এখনও রয়ে গেছে, বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ মানুষের সমস্যা এটি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূলতার কারণে প্রতিটি শিশু যেন পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হতে পারে তা নিশ্চিত করার লড়াই অনেক বেশি জরুরী । আর এটি নিশ্চিত করতে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর, আরও সহনশীল বিশ্ব গড়ে তুলতে আমাদের গবেষণা এবং উদ্ভাবনী সমাধানে বিনিয়োগ চালিয়ে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানের পাশাপাশি প্রকাশিত ২০২৪ গোলকিপারস প্রতিবেদন, দ্রুত উষ্ণতা বৃদ্ধিতে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পুষ্টির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। পৃথিবীর এক-তৃতীয়াংশ মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে, তাই এই প্রতিবেদনে জোর দেওয়া হয়েছে যে ড. আহমেদের উদ্ভাবনী সমাধানের মতো আরো সমাধান খুঁজে বের করার প্রয়াস এই সংকট মোকাবেলায় অপরিহার্য। প্রতিবেদনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে অতিরিক্ত চার কোটি শিশুকে স্টান্টেড বা খর্বকায় হওয়া এবং ২৮ মিলিয়নের বেশি শিশু ওয়েষ্টেড বা কৃশকায় হওয়া রোধ করার জন্য বিশ্বব্যাপী পদক্ষেপের জরুরী প্রয়োজনের কথা তুলে ধরা হয়েছে।
Leave a Reply