সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “রাঙামাটি শহরে সংঘাতের ক্ষত, ভয় কাটেনি”
ঠিক এক যুগের ব্যবধানে বড় ধরনের সংঘাত দেখল রাঙামাটি শহর। গত শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) পাহাড়ি ও বাঙালিদের সংঘর্ষ হয়। এদিন অনিক কুমার চাকমা নামের ওই তরুণকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় দক্ষিণ কালিন্দীপুর সড়কে।
ঘটনাক্রমে ২০১২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর এ শহরেই পাহাড়ি–বাঙালির সংঘাত হয়েছিল। শহরের বনরূপা বাজারের শেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সেবার হামলা হয়েছিল, ভাঙচুর চালানো হয়েছিল। এবার ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শেভরনের একাংশ।
শেভরনের নিচতলায় প্রতিটি কক্ষে পোড়া দাগ। যত্রতত্র পড়ে আছে ল্যাবের যন্ত্রাংশ। সংঘর্ষের পর গত মঙ্গলবার খুলেছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি। মঙ্গলবার দুপুরে একটি কক্ষে বসে কথা হচ্ছিল প্রতিষ্ঠানটির মালিক পরশ খীসার সঙ্গে। বলছিলেন, ‘এবার যে হামলা দেখলাম, তা নজিরবিহীন। অন্তত আমি দেখিনি। আগের কোনো সংঘাতে এত দোকান ও প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি।’
বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “কক্সবাজার রেল প্রকল্পের ব্যয় কমছে ৬,৬৭০ কোটি টাকা”
দোহাজারী থেকে কক্সবাজার ও রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ঘুনধুম পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণে প্রকল্প নিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। ২০১০ সালে অনুমোদন পায় প্রকল্পটি। সরকারের ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত এ প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা আছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। এরই মধ্যে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত অংশে রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। আর প্রকল্পের রামু-কক্সবাজার অংশ আপাতত বাস্তবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) গতকাল অনুষ্ঠিত সভায় রামু-ঘুনধুম অংশ বাদ দিয়ে প্রকল্পটির উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) দ্বিতীয়বার সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি। এতে নির্মাণ ব্যয় ১১ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবটি অনুমোদন পেলে এ প্রকল্পের ব্যয় কমবে ৬ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। একই সময়ে কক্সবাজার রেল প্রকল্পের মেয়াদ আরো এক বছর বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এ প্রস্তাব অনুমোদন পেলে কক্সবাজার রেল প্রকল্প শেষ হবে ২০২৫ সালের ৩০ জুন।
দুই ধাপে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নিয়ে ২০১০ সালে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) নির্বাহী কমিটিতে অনুমোদিত হয়। প্রথম ধাপে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার রেলপথ নির্মিত হওয়ার কথা ছিল। রেলপথটির নির্মাণকাজ এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে এ রেলপথ ব্যবহার করে ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ট্রেন পরিচালনাও শুরু হয়েছে। এ রেলপথ নির্মাণের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল পর্যটন শহর কক্সবাজারকে রেলওয়ে নেটওয়ার্কে যুক্ত করা। রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পর্যটক ও স্থানীয় জনগণের জন্য নিরাপদ, আরামদায়ক, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হওয়ায় সহজে ও কম খরচে মাছ, লবণ, রাবারের কাঁচামাল এবং বনজ ও কৃষিজ দ্রব্যাদি পরিবহনের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
দ্বিতীয় ধাপে রামু স্টেশন থেকে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ঘুনধুম পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। এজন্য ২৮ দশমিক ৭২ কিলোমিটার রেলপথের পাশাপাশি কক্সবাজারের উখিয়া ও বান্দরবানের ঘুনধুমে দুটি স্টেশনও নির্মিত হওয়ার কথা ছিল। উদ্দেশ্য ছিল ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে রুট-১-এ সংযুক্ত হওয়া। রুটটি ভারতের গেদে থেকে দর্শনা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে ঈশ্বরদী-বঙ্গবন্ধু সেতু-জয়দেবপুর হয়ে টঙ্গী-আখাউড়া-চট্টগ্রাম-দোহাজারী-রামু হয়ে ঘুনধুম সীমান্ত মিয়ানমারে যাওয়ার কথা। রুটটিকে পূর্ণ রূপ দেয়ার জন্য বাংলাদেশ অংশে প্রায় ২৯ কিলোমিটার ও মিয়ানমারের অভ্যন্তরে প্রয়োজনীয় নতুন রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল দুই দেশের সরকারের। যদিও মিয়ানমারে বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি রুটটিকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দেয়।
ইত্তেফাক এর একটি শিরোনাম “বাংলাদেশ সংস্কারে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক”
আর্থিকখাত সংস্কারে বাংলাদেশকে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় দুপুরে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা।
বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে এই ঋণ সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এ সময় বাংলাদেশ পুনর্গঠনে অন্তবর্তী সরকারের নেওয়া সংস্কার কর্মসূচির সহায়তায় ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দেন।
এর মধ্যে নতুনভাবে দেওয়া হচ্ছে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা। আর আগের ঋণ সহায়তা থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হবে বাংলাদেশ পুনর্গঠনের সংস্কার খাতে। বৈঠকে ড. ইউনূস তার নেওয়ার সংস্কারমূলক কাজের জন্য বিশ্বব্যাংকের আরও সহায়তা চান।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানান, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট এ সমর্থনের ঘোষণা দেন।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম“প্রতি মিনিটের অডিও ভিডিও খরচ ২০ হাজার, আপত্তি পরিকল্পনা কমিশনের”
দ্রুত ও স্বচ্ছ বিচার নিশ্চিত করতে ‘ই-জুডিশিয়ারি’- নামের একটি প্রকল্প প্রস্তুত করে আইন ও বিচার বিভাগ। দুই হাজার ৬২৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকার প্রকল্পটির কিছু খাতে অস্বাভাবিক ব্যয় ধরা হয়। এছাড়া অপ্রয়োজনীয় কিছু খাত যুক্ত করা হয়। এ সব নিয়ে আপত্তি তুলেছে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ। সূত্র বলছে, প্রকল্পটিতে প্রতি মিনিট অডিও-ভিডিও বা চিত্রতথ্য নির্মাণের জন্য ২০ হাজার টাকা ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে। মাত্র ২০ মিনিটের একটি অডিও বা ভিডিও নির্মাণে ব্যয় হবে ৪ লাখ টাকা। এই খাতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮০ লাখ টাকা। এছাড়া প্রকল্পের উপদেষ্টার জন্য চার কোটি টাকা ব্যয়ে জিপ গাড়ি কেনার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এটি বাদ দিতে বলা হলেও পুনর্গঠিত প্রকল্প প্রস্তাবনায় তা বাদ দেয়া হয়নি। অন্যদিকে অফিস স্টেশনারি, অফিস ভাড়া, পরামর্শক সেবা, পেট্রোল, গ্যাস ও জ্বালানি, কম্পিউটার সামগ্রী, কম্পিউটার মেরামত, যানবাহন সংরক্ষণ ও মেরামত ইত্যাদি ব্যয় আরও পর্যালোচনার মাধ্যমে যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ ও বছরভিত্তিক বিভাজন দেখানোর কথা বলা হয়েছিল আইন ও বিচার বিভাগকে। কিন্তু পুনর্গঠিত প্রকল্প প্রস্তাবনায় সেই প্রস্তাবও মানা হয়নি।
এদিকে সেমিনারের ব্যয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী ধরা হয়নি বলেও জানায় সংশ্লিষ্ট সূত্র। এছাড়া ইলেকট্রিক আর্চওয়ে, এক্স-রে ব্যাগেজ স্ক্যানার ও নিরাপত্তা অঙ্গে ১০০ কোটি ৮০ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এসব যন্ত্রপাতির কারিগরি বৈশিষ্ট্য ডিপিপিতে সংযুক্ত করা হয়নি। এসব সরঞ্জাম ই-জুডিশিয়ারি কার্যক্রমের সঙ্গে কতটুকু সম্পর্কিত, প্রশ্ন উঠেছে সেটি নিয়েও।
ই-কোর্ট রুমের সম্পূর্ণ বিচারিক কার্যক্রম সিসি ক্যামেরা ও ভিডিও রেকর্ডিং এর আওতায় আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রস্তাব নিয়ে ভৌত অবকাঠামো বিভাগ বলেছে, বিচারিক কার্যক্রমে বাদী-বিবাদীর বক্তব্য, জেরা তাদের ছবির প্রাইভেসি রাখার ক্ষেত্রে সিসি ক্যামেরা ও অডিও-ভিডিও অন্তরায় হতে পারে। ফলে প্রাইভেসি বিবেচনায় এগুলো রাখা ঠিক হবে কিনা আলোচনা হতে পারে।
প্রকল্পের পরামর্শক সেবা খাতেই ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। পরামর্শক সেবা, টেকনিক্যাল পরামর্শক সেবা ও আইনি পরামর্শক সেবা নামের তিনটি অঙ্গে যথাক্রমে ১৭ কোটি ৩১ লাখ, ৬ কোটি ৩৩ লাখ ও ৬ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। এ ছাড়া উচ্চতর প্রশিক্ষণ খাতে ৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, ই-জুডিশিয়ারি অনেক বড় একটি প্রকল্প। প্রকল্পটির বিভিন্ন খাতের ব্যয় নিয়ে গভীরভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। কিছু অঙ্গের প্রয়োজনীয়তা ও ব্যয় নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলেছি। অহেতুক ব্যয়ের কোনো সুযোগ নেই।
অন্তর্বর্তী সরকার বিদেশি অর্থায়নের প্রকল্প অগ্রাধিকার দিচ্ছে জানিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের কিছু কর্মকর্তা বলেন, ই-জুডিশিয়ারি সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থায়নের প্রকল্প। সেক্ষেত্রে প্রকল্পটি এখনই একনেকে অনুমোদন নাও হতে পারে।
আইন ও বিচার বিভাগ বলছে, নাগরিকদের আইনি অধিকার নিশ্চিতকরণে এবং প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে একটি স্বাধীন ও সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থার বিকল্প নেই। কিন্তু সীমিতসংখ্যক বিচারক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী, গতানুগতিক পদ্ধতির বিচার কার্যক্রম ইত্যাদি কারণে যথাসময়ে বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন ও রায় প্রদান করা সম্ভব হয় না। এমন অবস্থায় মামলার জট বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিচার কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করার জন্য এবং বিচার প্রাপ্তিতে জনগণের প্রবেশাধিকার সহজলভ্য করার জন্য বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজেশন করা জরুরি। পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পটির উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, দ্রুত ও স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য ডিজিটাল ব্যবস্থা প্রবর্তন করা, বিচার ব্যবস্থার জন্য প্রশাসনিক এবং বিচার কার্যক্রম স্বয়ংক্রিয় করা, ই-আদালত কক্ষ প্রতিষ্ঠা করা এবং আইসিটি’র জ্ঞান ও দক্ষতা দ্বারা বিচারক, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইনজীবীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
Leave a Reply