পিওতর মান্তেইফেল
আস্কানিয়া-নোভা’তে (ভ্রমণ-বৃত্তান্ত)
ইউক্রেনের সীমাহীন স্তেপের মধ্যে সুবিস্তৃত সংরক্ষিত অঞ্চল আঙ্কানিয়া- নোভা। প্রথম সেখানে যাবার সুযোগ হয় ১৯৩৪ সালে। বিরাট একটা পার্ক’ সেখানে ঘন হয়ে বেড়ে উঠেছে। সেচ চালানো জমি, উর্বরতা তার অতুলনীয়। গাছ-পালা, ঝোপঝাড়, ঘাসের বাড় এখানে ফলাও আর ঝটপট। আঙ্কানিয়া-নোভা হল বিশাল এক প্রাকৃতিক ও কৃষি ল্যাবরেটরি। শুধু এখানে পরীক্ষা চলে শাদা ই’দুর বা খরগোসের ওপর নয়, বুনো ষাঁড়-বাইসন, বুনো ঘোড়া, কৃষ্ণসার মুগ, উটপাখি, হরিণ, বড়ো বড়ো শুঙ্গী প্রাণী, ভেড়া, শুয়োর ইত্যাদি নিয়ে। পরীক্ষাধীন পশুদের এখানে খাঁচায় পোরা হয় নি, অবাধে তারা ঘুরে বেড়াত পার্কে, আস্কানিয়া সংরক্ষিত অঞ্চলের বিস্তীর্ণ তৃণভূমির আদিম মাটিতে, সেই সঙ্গে অতি সুপ্রসর কতকগুলো খোঁয়াড়েও। ঘন ঝোপঝাড়ে ঢাকা পুকুরে ছিল নানা ধরনের জলচর পাখি। তৃণভূমিতে অসংখ্য সুস্লিক, খরগোস, শেয়াল। পার্কে নির্বিবাদে বেড়াত ফেজন্ট, ঝোপের পালা খেত হরিণে।
কিন্তু এখানে শুধু বিদ্যমান প্রাণীদেরই পর্যবেক্ষণ করা হত তাই নয়, আরো উন্নত জাতের নতুন নতুন পশুও গড়া হত। যেমন, ইংলন্ডের শাদা শুয়োর আর স্থানীয় স্তেপের শুয়োর থেকে পাওয়া যায় অদৃষ্টপূর্ব একটা জাত ইউক্রেনীয় শাদা শুয়োর। স্তেপের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে এই দোআঁশলারা উত্তরাধিকার পায় নম্রতা, গতিশীলতা, আর অপেক্ষাকৃত নরম, লম্বা লম্বা ঘন কুচি, তাঁর বাতাস থেকে তা তাদের বাঁচাত। অন্য দিকে ইংলন্ডের পূর্বপুরুষরা তাদের দেয় সুপরিশীলিত আকার, ফলে তাদের ওজন অনেক বেড়ে যায়। মনে চমৎকার ছাপ ফেলেছিল স্কেপের লাল গরুর সঙ্গে ঝংটিওয়ালা আরবী ষাঁড়ের সংকর। ভারতীয় বুনো ষাঁড়ের সঙ্গে ধূসর ইউক্রেনীয় গাইয়ের মিলনে যে কালো কালো বাছুর হয়েছিল তা ভারি সুন্দর। গরুদের সুপ্রসর পরিচ্ছন্ন আঙিনায় আপনা থেকেই নজর যায় ধূসর ইউক্রেনীয় গাইয়ের সঙ্গে চমরী ষাঁড়, ইয়ান্তেঙ্গের সঙ্গে ঝটিওয়ালা ষাঁড়ের জটিল সংকর। খোলা ন্তেপে চরছে চমৎকার সব ঘোড়া, সুগঠিত তার গ্রীবা ইংলন্ডের দৌড়বাজ ঘোড়ার সঙ্গে বুনো ঘোড়ার মিলনের ফল।
আস্কানিয়া-নোভা থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে নীপারের কাছাকাছি দ্বীপময় বনের মধ্যে, আস্কানিয়ার একটি বিভাগ বুকুতী’তে ছিল বহু বুনো ষাঁড়-বাইসন, সাইবেরীয় মারাল হরিণ, শান্ত ফুটকিদার হরিণ। হরিণ আর বাইসনদের সেখানে তাড়িয়ে আনা হয় আস্কানিয়া থেকে। পাঁচ দিনে তারা পাড়ি দেয় প্রায় ১০০ কিলোমিটার। প্রথমটা তারা বাধ্যের মতো তাদের রাখালদের কথা শোনে, কিন্তু অজানা জায়গায় এসে পড়তেই চঞ্চল হয়ে ওঠে তারা, ঘুরে গিয়ে গোটা পাল ফের এসে পৌঁছয় আস্কানিয়ায়। শুধু রাখালদের অসাধারণ নৈপুণ্যেই পালটাকে থামিয়ে বুকুতী’র পথ ধরা সম্ভব হয়। শুধু একটা ফুটকিদার হরিণ নির্দিষ্ট জায়গায় আসার পর রাখালের অবাধ্য হয়ে ওঠে: সোজা আস্কানিয়ার অভিমুখে লাফাতে লাফাতে ছুটে যায় আর পাঁচ ঘণ্টার দৌড়েই সূচারু জীবটি এসে থামে পার্কের বেড়ার কাছে।
বুকুতী’র একজন রাখাল আমায় বলছিল, ‘হরিণ সব কথা বোঝে।’ ওদের সঙ্গে সে এমনভাবে কথা কইছিল যেন ওরা মানুষ, ওরাও সাধারণ গৃহপালিত পশুর মতোই শান্তভাবে মাঠে চরছিল। আমার সঙ্গে আলাপের মাঝখানে লোকটা হঠাৎ হাঁক দিয়ে উঠল একটা মাদী হরিণের উদ্দেশে, কেবলি সে পাল থেকে সরে পড়ার চেষ্টা করছিল:
‘এ্যই, যাচ্ছিস কোথায়?’
হরিণীই থেমে গিয়ে কান খাড়া করে রইল কিছুক্ষণ, তারপর বাধ্যের মতো ফিরে এল।
বুনো ষাঁড়-বাইসনদের যখন স্তেপ থেকে তাড়িয়ে আনা হচ্ছিল বিচ্ছিন্ন সব খোঁয়াড়ের দিকে, গোটা পালটা তখন হঠাৎ সরে গিয়ে ধূলোর মেঘ উড়িয়ে ছুটে গেল পাশ দিয়ে। ভীমকায় এই প্রাণীগুলো ক্ষ্যাপার মতো মাথা নাড়াতে লাগল, মাটি কে’পে গুম গুম করে উঠল তাদের খুরের ঘায়ে। রাখালরা বোঝালে, আমাদের অস্তিত্বই নাকি ষাঁড়-বাইসনদের এমন কাণ্ডের কারণ। নতুন লোক আসা মানেই বুনো ষাঁড়দের পক্ষে অপ্রীতিকর কয়েকটা ব্যাপার বিশেষ সব স্ট্যান্ডে নিয়ে গিয়ে তাদের ওজন করবে, মাপবে, জজ্বালাতন করবে।
রাখালদের তত্ত্বাবধানে ঝাঁকড়া-লোমো ষাঁড় আর সুঠাম হরিণগুলো নিশ্চিন্তে চরে বেড়াতে দেখে ভারি আশ্চর্য লাগে! আস্কানিয়ার মাঠে মানুষ সাফল্যের সঙ্গে তাদের গৃহপালিত করে তুলছে। শুধু উসুরির ফুটকিদার হরিণগুলোকে রাখালরা চেষ্টা করে হোগলা ঝোপ থেকে দূরে রাখতে: এসব হোগলা বনে ঢুকলে ভালোমতো পোষ মানানো জন্তুও হয়ে ওঠে বুনো, মনে করে যেন সে উসুরির হোগলা জংলাতেই রয়েছে।
বহুদিন থেকেই পার্কে আছে কাজাখস্তান, ককেশাস আর দূর প্রাচ্যের ফেজন্ট। তাদের থেকে পাকাপোক্ত সংকর পাওয়া গেছে, ‘মৃগয়া’ বিখ্যাত তারা। অপরূপ এই পাখিগুলো পার্কে বেশ অভ্যন্ত হয়ে গেছে। শুধু এক-আধটা কখনো-সখনো, সাহস করে আস্কানিয়া ছেড়ে গিয়ে বাসা পাতে আজোভ সাগরের তীরে হোগলা জংলায়। আস্কানিয়ার উদ্ভিদ উদ্যানে এরা ভয় পেয়ে ডজনে ডজনে উড়ে যাচ্ছিল জুনিপার ঝোপে ঢাকা মাটি থেকে, মানুষকে কাছে আসতে দেখলে নিচু হয়ে ঘাসের সঙ্গে শিটিয়ে খুরখুরিয়ে পালাচ্ছিল ছুটে। অথচ আশ্চর্য’, হাঁস-মুরগীদের খাবার দেবার সময় এই ভীরু-ভীরু বুনো ফেজন্টগুলোই সেখানে পাশাপাশি খাবার খেতে থাকে, পাশেই যে মানুষ রয়েছে সেদিকে দৃদুত্পাতও করত না।
শরতে উত্তর থেকে উড়ে আসা হাজার হাজার পাখি অনেক দিন বিশ্রাম নেয় আস্কানিয়ার পার্কে’। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়েও সেখানে সোল্লাসে গান গেয়েছে কালোথ্যাশ পাখি। ফার গাছের মাঝে মিহি গলায় চি’চি’ করেছে আমাদের দেশের সবচেয়ে ছোট্ট পাখি হলুদ-মাথা কিঙ্গলেট। শীত তেমন কড়া না হলে তাদের মাঝে মাঝে উত্তরী বনে দেখা যায় গোটা বছরই। তাই কিঙ্গলেটদের ধরা হত স্থিতু পাখি। সত্যি, সীমাহীন স্তেপ পেরিয়ে এই ক্ষুদে পাখিগুলো উড়ে যেতে পারে, তা কল্পনা করাই কঠিন।
কিন্তু দেখা যাচ্ছে পারে। ১২ই নভেম্বর পর্যন্ত পার্ক’ ছিল হলুদ-মাথা কিঙ্গলেটে ভর্তি। আর ঠিক পরের দিনই তারা একেবারে দলকে দল উধাও।
সিসকিন পাখিগুলোর বেলাতেও একই ব্যাপার। এই সকালেই দেখেছিলাম মন্তো একঝাঁক সিসকিন নিশ্চিন্তে অ্যালডার গাছের বীজ খুটেছে, কিন্তু দুপুরে যেন কার হুকুম পেয়ে আকাশে উঠে একটা ঘন মেঘের আকারে রওনা দিলে দক্ষিণে।
আঙ্কানিয়া-নোভা’র সংরক্ষিত অঞ্চলে আছে কয়েক হাজার হেক্টর আদিম স্তেপভূমি। কখনো এখানে হাল পড়ে নি। ফেদার-গ্রাস, সোমরাজ, খরগোস, সুস্লিক, ভরত পাখি, ন্তেপের ঈগল সবই এখানে অনাহত। এমনকি ঘাসও এখানে কাটা হয় না, শিকার করা নিষিদ্ধ। শুধু কতকগুলো জায়গায় বানানো হয়েছে ‘স্যানাটোরিয়ম’, সেখানে রোগভোগের পর স্বাস্থ্য ফেরায় আফ্রিকান কৃষ্ণসার মুগ, বুনো ঘোড়া প্রভৃতি জন্তুরা।
স্তেপের দূর দূর অঞ্চলে সূলিকদের গত’ এত বেশি যে মনে হবে আর গোটা দশেক জীবও সেখানে আঁটবে না। এত ঘোঁষাঘে’যি সত্ত্বেও বর্ষজীবী বন্য শস্য সেখানে বাড়ে আশ্চর্য ঘন হয়ে। রাখালরা বলে যে সূলিকরা তা যত খাবে, ততই গোছা বে’ধে তা বাড়বে।
স্তেপে খরগোস বেড়েছে আরো বেশি। মোটরে করে যাবার সময় আমরা কয়েক ডজন খরগোসকে পেছন থেকে তাড়া করি। সমতল এলাকায় গাড়ি যায় খরগোসদেরই সমতালে। সুতরাং খরগোসরা ছুটেছিল ঘণ্টায় ৪০-৪৫ কিলোমিটার বেগে। এটাই খরগোসের সাধারণ গতিবেগ, কিন্তু ড্রাইভার জানাল, ঘণ্টায় সত্তর কি আরো বেশি কিলোমিটার ছুটতে দেখা যায় খরগোসকে।
স্তেপে শেয়ালও অনেক, তারা প্রধানত শিকার করে মুষিকজাতীয় তীক্ষ্যূদন্ত প্রাণী, দ্রুতগতি খরগোস শিকারের চেয়ে এটা অবশ্যই অনেক সহজ। এখানকার শেয়ালের উপস্থিতিতে খরগোসরা এতই অভ্যন্ত যে কিছু কিছু খরগোস আদৌ তাদের আর ভয় করে না।
আমি দেখেছি, দুই খরগোস ঘাস খাচ্ছে আর, বড়ো জোর, চল্লিশ পা দূরে আলস্যে ঘুরঘুর করছে একটা শেয়াল। খরগোস-দুটো বেশ দেখতে পেয়েছিল, পেছনের পায়ে ভর দিয়ে তারা একটু উচু হয়ে বসল, কিন্তু পালাল না।
সংরক্ষিত স্তেপ থেকে খরগোসরা চলে যায় আশেপাশের এলাকায়। আস্কানিয়া- নোভা’র সংলগ্ন অসংরক্ষিত ভূমিতে বাসা নেয়া খরগোসদের শিকার করার অনুমতি আছে স্থানীয় শিকারী সংঘের বছরে প্রায় পাঁচ হাজার।
অসাধারণ সে শিকার, তাতে যোগ দেবার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। আমাদের বনে, মাঠে যেভাবে শিকার করা হয়, তার সবই এখানে অন্য রকম। সূর্যোদয়ের সময় আমরা আস্কানিয়ার চৌহন্দি ছাড়িয়ে আসি দুই কিলোমিটার এবং লম্বা সারিতে শুয়ে পড়ি চারণক্ষত স্তেপে। সে এক অদ্ভুত দৃশ্য কোনো রকম খেদানের দরকার হল না, ভোর হতেই ন্তেপের সর্বত্র আপনা থেকেই ছুটতে শুরু করল খরগোস। গুলি শুরু করল শিকারী, আর তা এতই ঘন ঘন যে মনে হবে এটা শিকার নয়, যুদ্ধে শত্রুর আক্রমণ ঠেকানো হচ্ছে। আগে থেকেই শর্ত করা ছিল যে মাথা কিছু তিনটের বেশি খরগোস মারার অধিকার কোনো শিকারীর থাকবে না, কাজেই শিগগিরই শেষ হয়ে গেল শিকারের পালা। আমাদের সামনে দিয়েই ঝাঁকে ঝাঁকে পালাতে লাগল সন্ত্রস্ত খরগোসরা। প্রায়ই নজরের আওতায় তাদের দেখা যাচ্ছিল
একশ কি শতাধিক। …আস্কানিয়া আমি ছেড়ে যাই বিমানে। জোর বাতাস বইছিল, কেবিনে যখন বসলাম, বাতাসের ঝাপ্টায় কে’পে কেপে উঠছিল বিমান। পাইলট গ্যাস বাড়ালে। ভয়ানক গোঁ-গোঁ করে উঠল প্রপেলার। ঠিক মোটরগাড়ির মতো আমরা খোলা ন্তেপ দিয়ে ছুটে গেলাম, তারপর ঘুরে বাতাসের উল্টোমুখে গতি নিতেই তবে বিমান মাটি ছাড়ল।
খুব নিচু দিয়ে উড়ছিল বিমান। দেখলাম, সোমরাজ ঝোপ থেকে নানান দিকে ছুটে যাচ্ছে খরগোস, আঁতকে উঠে ছুটোছুটি করে মরছে সুস্লিক, নিজেদের বিবর আর খুঁজে পাচ্ছে না। তখন হেমন্ত, সুস্লিকরা সাধারণত তখন থাকে ঘুমন্ত অবস্থায়। বোঝা যায়, হঠাৎ হিম পড়ে ওদের অগভীর গর্তে সোধিয়ে জাগিয়ে দিয়েছে তাদের। প্রথমে যতই আশ্চর্য লাগুক, ব্যাপারটা সত্যিই তাই। এরা যখন ঘুমন্ত অবস্থায় পৌঁছয়, তখন এদের গায়ের তাপমাত্রা থাকে প্রায় শূন্যাঙ্কে। কিন্তু বেশি ঠান্ডা পড়লে ওরা জমে না গিয়ে এত গরম হয়ে ওঠে যে নিদ্রাবস্থা টুটে যায়।
বিমানের জানলা দিয়ে দেখা গেল ভরত, ফিঞ্চ প্রভৃতি বিরাট একঝাঁক যাযাবর পাখি প্রায় মাটির কাছেই প্রচন্ড ঝড়ের সঙ্গে লড়ছে। বিমানের অনেক নিচে উড়ছে লোমশ-পদ বাজার্ড’ পাখিরা, সুদূর তুন্দ্রা থেকে ওরা এই ন্তেপে উড়ে এসেছে মুষিকজাতীয় তীক্ষদন্ত প্রাণী শিকারের জন্যে।
আজোভ সাগরের খাড়িগুলোর ওপর অল্প উচু দিয়ে যখন বিমান উড়ছিল, তখন সাগ্রহে তাকালাম জানলায়। তাঁরে জিরচ্ছে হাজার হাজার যাযাবর পাখি। ভালো করে নজর করলে রাজহাঁসও দেখা যাচ্ছিল, এরা ছিল জলজ উদ্ভিদগুলোর কাছাকাছি। ওপর থেকে স্বচ্ছ জলের ভেতর দিয়ে ঠাহর হচ্ছিল তলদেশের খুঁটিনাটি আর বেশ বড়ো একঝাঁক মাছের চোখ-ধাঁধানো রূপোলী ঝলক।
আস্কানিয়া ন্তেপের সীমানায় আমাদের নিচে ক্ষেতের মধ্যে ছুটোছুটি করছিল একটা শেয়াল, মুখ তুলে বহুক্ষণ সে চেয়ে রইল বিমানটার দিকে। এই হল আস্কানিয়া ভূমিতে আমাদের দেখা শেষ বাসিন্দা।
ওপরে উঠল বিমান। সেখান থেকে মাটি লক্ষ্য করা হয়ে উঠল কঠিন।
Leave a Reply