সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “তিস্তার পানি বাড়ছে, বন্যার শঙ্কা”
রাজধানীসহ দেশের মধ্যাঞ্চলে এবার বন্যার পানি আসেনি; তবে দেশের বাকি এলাকায় এবার বন্যার বিপদ হাজির হতে শুরু করেছে। সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, কয়েক দিন ধরে তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে। আজ শনিবারের মধ্যে পানি আরও দ্রুত বাড়তে পারে। এতে নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও রংপুরের নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, উজানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমে হঠাৎ ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলেও ভারী বৃষ্টি চলছে। এতে উত্তরাঞ্চলের প্রধান নদী তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও আত্রাইয়ের পানি দ্রুত বাড়তে শুরু করেছে। তবে এখনো এসব নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। তিস্তা নদীর পানি আজ বিপৎসীমার কাছাকাছি বা অতিক্রমও করে যেতে পারে।
এ ব্যাপারে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, আজ শনিবার থেকে তিস্তা অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। আগামী চার–পাঁচ দিন পর গঙ্গা অববাহিকায় পানি বাড়তে পারে।
ইত্তেফাক এর একটি শিরোনাম “‘নতুন বাংলাদেশের’ সঙ্গে নতুনভাবে সম্পৃক্ত হোন”
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে ‘নতুন বাংলাদেশের’ অভ্যুদয় ঘটেছে, তার সঙ্গে নতুনভাবে সম্পৃক্ত হতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে ড. ইউনূস তার ভাষণে এ আহ্বান জানান। সাধারণ অধিবেশনে বাংলায় বক্তৃতা দেওয়ার বিগত সময়ের রেওয়াজ অব্যাহত রেখেছেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, আমাদের ছাত্রজনতা তাদের অদম্য সংকল্প ও প্রত্যয়ের মাধ্যমে একটি স্বৈরাচারী ও অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা থেকে আমাদের মুক্তি এনে দিয়েছে। আমাদের মুক্তি ও গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা বাস্তবে রূপ দিতে আমি বিশ্ব সম্প্রদায়কে আমাদের নতুন বাংলাদেশের সাথে নতুনভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানাই।
গণতন্ত্র, আইনের শাসন, সমতা ও সমৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে একটি ন্যায়ভিত্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক সমাজ হিসেবে আত্মপ্রকাশের অভিপ্রায় বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন ও সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানান অধ্যাপক ইউনূস।
বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “উদ্বৃত্ত থেকে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ এখন গ্যাস সংকটের দেশ”
প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে গ্যাসের মজুদ আছে প্রায় ২৩ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ)। এক সময় বলা হতো দেশটিতে গ্যাসের যে পরিমাণ মজুদ রয়েছে তা দিয়ে দেশটির অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানো যাবে অন্তত ১৫০ বছর। উদ্বৃত্ত গ্যাস দীর্ঘদিন চীন ও থাইল্যান্ডে রফতানি করেছে দেশটি। কিন্তু বর্তমান গৃহযুদ্ধের কারণে দেশটির উত্তোলন কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। মিয়ানমারে কার্যক্রম চালানো বন্ধ করে দিয়েছে পশ্চিমা বেশকিছু কোম্পানি। বর্তমানে ব্যাপক পরিমাণে উদ্বৃত্ত নিয়েও গ্যাস সংকটে ভুগছে দেশটির ভোক্তারা।
যদিও একসময় গ্যাস খাতে মিয়ানমারের সম্ভাবনা অনুধাবন করে সেখানে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে এসেছে বিদেশী তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলো। কিন্তু দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ভূরাজনৈতিক সংকট মিয়ানমারে তাদের কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়ে। সর্বশেষ ২০২১ সালে দেশটির সামরিক জান্তার অভ্যুত্থান ও নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের পর দেশটির অস্থিতিশীলতা চরমে পৌঁছায়। রাজনৈতিক বিরোধ রূপ নেয় গৃহযুদ্ধে। বিদেশী কোম্পানিগুলোও বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নেয়া শুরু করে। গ্যাস খাতে ভয়াবহ ধস নামে। এর প্রভাব পড়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও।
গ্যাস উদ্বৃত্তের দেশ বলা হতো বাংলাদেশকেও। দেশে গ্যাস খাতে এখন পর্যন্ত প্রমাণিত মজুদ প্রায় ৩০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। যদিও এ মজুদের মধ্যে ২১ টিসিএফের বেশি উত্তোলন হয়েছে। তবে বিভিন্ন সময়ে বিদেশী প্রতিষ্ঠানের চালানো সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে বাংলাদেশে গ্যাস মজুদের পরিমাণ আরো বেশি হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোভিত্তিক কনসালট্যান্সি ফার্ম গুস্তাভসন অ্যাসোসিয়েটস ২০১১ সালে গ্যাসের মজুদ নিয়ে এক প্রতিবেদন উপস্থাপন করে। ওই প্রতিবেদনে গুস্তাভসন জানায়, দেশের গ্যাসের সম্ভাব্য মজুদের পরিমাণ ৩৮ টিসিএফ। ৫০ শতাংশ মজুদ সম্ভাবনার ক্ষেত্রগুলোয় এর পরিমাণ ৬৩ টিসিএফের কিছু বেশি। এ তথ্য ২০১১ সালে এক প্রতিবেদনের মাধ্যমে সরকারের কাছে উপস্থাপন করা হলেও গ্যাস মজুদ নিয়ে গুস্তাভসনের তথ্য মোটেও বিশ্বাস করেনি সরকার। ওই প্রতিবেদনে ৫০ শতাংশ মজুদ সম্ভাবনার ক্ষেত্রগুলোয় এর পরিমাণ ৬৩ টিসিএফের কিছু বেশি বলে জানানো হয়। তবে এসব প্রতিবেদন নিয়ে সরকার কোনো ধরনের উদ্যোগ নেয়নি। বরং গ্যাসের নানামুখী সম্ভাবনার প্রস্তাব অতীতে দেয়া হলেও সম্ভাবনার বিপরীতে অনুসন্ধান জিইয়ে রেখে আমদানিনির্ভরতা বাড়িয়ে গ্যাস খাতের সংকট তৈরি করা হয়েছে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের গ্যাস খাতে বড় সম্ভাবনা সবসময় ছিল। এক সময় দুই দেশকেই গ্যাসে উদ্বৃত্ত বলে মনে করা হতো। কিন্তু গৃহযুদ্ধের কারণে মিয়ানমার এখন প্রয়োজনমতো গ্যাস তুলতে পারছে না। আর মজুদ গ্যাসের অনুসন্ধান-উত্তোলনে বিনিয়োগ না করে এলএনজি আমদানিনির্ভর নীতি অনুসরণ করেছে বাংলাদেশ। সম্ভাবনাময় দেশ দুটি এখন গ্যাস খাতে তীব্র সংকটে পড়েছে। দুই দেশেরই অর্থনীতিতে এখন প্রকট হয়ে উঠছে জ্বালানি নিরাপত্তার ঝুঁকি।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম“বাজার পরিস্থিতি অসহনীয়”
সরকার পতনের পর পরিবহন খাতে বেপরোয়া চাঁদাবাজি কমেছে। বাজারে পণ্যের সরবরাহও স্বাভাবিক। তবুও কমছে না দাম, উল্টো চাল, পিয়াজ, সবজি, মাছ, ডিম, মুরগিসহ অধিকাংশ পণ্যের দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। গতকাল রাজধানীর তালতলা, আগারগাঁও ও কাওরান বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে ৫০ টাকার নিচে মিলছে না বেশির ভাগ সবজি। পিয়াজের দাম বেড়ে ঠেকেছে ১২০ টাকায়। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। গরিবের আমিষ খ্যাত ডিমের হালি ৫৫ টাকা। মাঝারি মানের চালের কেজি ৬০ টাকা আর মোটা চালের কেজি ৫৫ টাকা। এ ছাড়া রপ্তানির খবরে ইলিশের দাম কেজিতে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়েছে। ফলে মানুষের কাছে অসহনীয় হয়ে উঠেছে বাজার।
বেঁধে দেয়ার পরও বেড়েছে ডিম-মুরগির দাম: ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। নতুন মূল্য অনুযায়ী প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা এবং প্রতিটি ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয় ১১ টাকা ৮৭ পয়সা। এতে প্রতি ডজন ডিমের দাম পড়ে ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সা। কিন্তু মূল্য নির্ধারণের ১০ দিন পার হলেও বাজারে এর কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। বরং বেড়েছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরায় একটি ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ১৪ টাকা, হালি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। পাড়া-মহল্লার দোকানে ডিম ১৬৫ টাকা ডজনও বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দামও বেড়েছে। গত সপ্তাহে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগি এখন ১৯০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। অর্থাৎ সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে।
৫০ টাকার নিচে মিলছে না অধিকাংশ সবজি: স্বস্তি নেই সবজির বাজারেও। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও ৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না অধিকাংশ সবজি। কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, গোল বেগুন প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। করলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, টমেটো ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, চায়না গাজর ১৮০ টাকায়, ঢেঁড়স, পটোল ও চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, মুলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর চাল কুমড়া প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, লম্বা লাউ প্রতিটি ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
মরিচ-পিয়াজ ও আলুর দামে অস্থিরতা: আবারো অস্থিরতা দেখা দিয়েছে মরিচ ও পিয়াজের বাজারে। আগের চেয়ে মরিচের দাম কেজিতে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি মরিচের দাম ছিল ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। গতকাল সেই মরিচের দাম বেড়ে ২০০ থেকে ২৪০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে পিয়াজের দামও বেড়েছে। বাজারে দেশি পিয়াজের দাম বেড়ে ১২০ টাকায় ঠেকেছে। আর ভারতীয় পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকায়। অন্যদিকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে আলুও। গতকাল প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। যদিও এক মাস আগে আলু ও পিয়াজের দাম কমাতে আমদানি পর্যায়ে শুল্ক কমিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আলু আমদানিতে বিদ্যমান ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। আর আলু আমদানিতে থাকা ৩ শতাংশ এবং পিয়াজ আমদানিতে থাকা ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে এর কোনো প্রভাব পড়েনি।
Leave a Reply