শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৫৯ অপরাহ্ন

মায়া সভ্যতার ইতিহাস (পর্ব-২২)

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০২৪, ৫.৫৩ পিএম

ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়

সমাজ, সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় বিশ্বাস এই তিনটি বিষয়ের মধ্যে একটি পারস্পরিক সম্পর্ক আছে একথা সমাজ ইতিহাসের বিজ্ঞান বলে। বিশেষ করে সংস্কৃতি এবং ধর্ম একে অপরের পরিপূরক। সংস্কৃতি হল ধর্মের এক উপাদান আবার ধর্মের বিস্তৃত পরিসরে সাংস্কৃতিক চর্চা গড়ে ওঠে, প্রভাবিত হয়। ধর্মীয় বিশ্বাস-এর মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠে আরেকটি দিক যাকে আমরা বলি লোকাচার, লোকরীতি এবং লোকবিশ্বাস। মায়া জনসমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল এই লোকাচার, লোকরীতি। এই অধ্যায়ে এই বিষয়টি সম্পর্কে আলোচনার চেষ্টা করা হয়েছে।

সূর্য দেবতা চাক এবং অন্যান্য ধর্মীয় বিশ্বাসঃ বিখ্যাত নৃতত্ত্ববিদ এম. লঘিন (M. Laughin)-এর বক্তব্য হল আধুনিক মায়া সমাজ নিজেদের ধর্মীয় এবং লোকাচার বিশ্বাস-এর ক্ষেত্রে চিন্তাধারা পরিবর্তন করেছে। প্রাচীন মায়া দেবতা সম্পর্কে ধারণা এবং তিলা বা কালো খ্রিস্টান এই দুই-এর বিশ্বাস যদি একত্র করা যায় সেক্ষেত্রেও মায়াদের তেমন কোনো গোঁড়ামি বা রক্ষণশীলতা নেই। অনেক সময় খাওয়া-দাওয়ার বিশেষ দিনে সবাই একত্রে মিছিলে অংশগ্রহণ করে। এই মিছিল বা একত্রে পদযাত্রা সানলবেঞ্জা গির্জার সামনে থেকে শুরু হয়।

এক্ষেত্রে ধর্মীয় বিশ্বাস হল সূর্য দেবতা (Sun God) এবং তাঁর মা দেবী চাঁদ। এর পরের কাজ হল সবাই কায়মনোবাক্যে নিকটবর্তী পাহাড়ের দিকে এগিয়ে যায় এবং সেখানে পূর্বপুরুষ এবং মায়া দেবতাদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে। এক্ষেত্রে তারা চাউক (Chauk) নামে পৃথিবী এবং জলের দেবতাকেও পূজা নিবেদন করে। মায়াদের মধ্যে পাহাড়, মায়াময় রহস্যের ছায়ায় ঘেরা গুহা বা গুহামন্দির নিয়ে নানারকম সংস্কার, বিশ্বাস দেখা যায়।

কার্যত বলা ভাল মেসোআমেরিকার অধিবাসীদের ধর্মীয় বিশ্বাসের উপর গুহার এক বিশেষ ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়। এই দস্যু, দেবতা এবং শ্রদ্ধেয় পূর্বসূরীদের নিয়ে তাদের এই বিশ্বাস, ধর্মীয় আচারবিচার প্রায় তিন হাজার বছরের পুরনো। মায়াদের মধ্যে কমবেশি পঁচিশটি চিত্রাঙ্কিত গুহার সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে পুরানো গুহাটির নাম হল লোলতুন (Loltun), এটি মায়াদের বিখ্যাত শহর ইউকাতানে অবস্থিত। এখন এইসব চিত্রাঙ্কণ-এর চোখ ধাঁধানো কাজ, সৌন্দর্য অনেকটা ফিকে হয়ে গেছে। কিন্তু গভীর মন ও দৃষ্টি দিয়ে দেখলে সহজেই বোঝা যায় এইসব অঙ্কণ শিল্পীদের মান খুবই উঁচু ছিল।

(চলবে)

মায়া সভ্যতার ইতিহাস (পর্ব-২১)

মায়া সভ্যতার ইতিহাস (পর্ব-২১)

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024