নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ছাত্ররা জীবন দিয়ে দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করেছে। ছাত্রদের রক্তে দেশের রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে। জীবন দিয়ে দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করার কৃতিত্ব শুধুই ছাত্রদের। যারা সরাসরি বিরোধিতা করেছে, তারা ছাড়া আমরা সবাই এই ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় সমর্থন দিয়েছে। আমাদের দলের নেতা-কর্মীরাও রক্ত দিয়েছে। ছাত্রদের জীবন দেয়া সাফল্যকে গনিমতের মাল মনে করবেন না। রক্তেভেজা এই সাফল্য ভাগবাটোয়ারার বিষয় নয়।
তিনি বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেয়ার কারনে আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে রংপুরে মামলা হয়েছে পার্টির পদ পদবী উল্লেখ করে। আমাদের নেতা-কর্মীরা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেয়ার কারনে গ্রেফতার হয়ে হাজতবাস করেছে। ১ জুলাই ছাত্ররা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন শুরু করলে, আমি ৩ জুলাই সংসদে তখনকার প্রধানমন্ত্রীর সামনে ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে বক্তৃতা করেছি। বক্তৃতায় আমি বলেছি, ছাত্রদের এই আন্দোলন যৌক্তিক। চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংবিধান পরিপন্থি।
বৈষম্যের বিরুদ্ধে দেশের মানুষ যেকোন ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। ৬ জুলাই গাজীপুরে জাতীয় পার্টির কাউন্সিলে বক্তৃতায় আমি বলেছি, চাকরিতে কোটা পদ্ধতি মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা পরিপন্থি। তখন আমি বলেছিলাম, চাকরিতে কোটা পদ্ধতি হচ্ছে বৈষম্য। আমাদের শহীদ মিনার হচ্ছে বৈষম্যের বিরুদ্ধে জীবন দেয়ার প্রতিক। আমি ছাত্রদের শহীদ মিনারে গিয়ে শপথ নিতে বলেছি। যখন ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ককে আটক করা হলো, আমরা তাদের মুক্তি দাবি করেছি। ছাত্র আন্দোলনে যখন গুলি চালানো হলো, আমরা এর প্রতিবাদ করেছি।
প্রতিটি হত্যাকান্ডের বিচার দাবি করেছি আমরা। রাজনীতিবিদদের মধ্যে সবার আগে রংপুরে গিয়ে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেছি আমি। শহীদ আবু সাঈদের শোকার্ত বাবা-মাকে সান্তনা দিয়েছি। জাতীয় পার্টি যৌথসভা করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সর্বতভাবে সমর্থন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, ছাত্র আন্দোলনের সাফল্য নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
একটি চক্র জাতীয় পার্টিকে ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষের দল হিসেবে চিহ্নিত করতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। যে ছাত্রদের আন্দোলনে আমরা সমর্থন দিয়েছি,আমাদের নেতা-কর্মীরা অংশ নিয়ে হামলা-মামলার শিকার হয়ে জেল খেটেছে। সেই আন্দোলনের হত্যা মামলায় জাতীয় পার্টি নেতা-কর্মীদের আসামী করা হচ্ছে। গতরাতে মোহাম্মদপুর থেকে আমাদের জাতীয় পার্টি নেতা রফিকুল ইসলামকে এমন একটি মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা এই গ্রেফতারের তিব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা নিরাপরাধ রফিকুল ইসলাম সেলিমের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।
আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক মন্ডলীর সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন।
এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, আমরা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। কিন্তু নির্বাচনের পরও যেনো দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় থাকে। আমরা শুধু নির্বাচনের দিনের জন্য গণতন্ত্র চাইনা। সুন্দর নির্বাচনের পর যেনো ক্ষমতায় গিয়ে কোন দল দানবে পরিণত না হয় সেজন্য শাসন পদ্ধতির পরিবর্তন করতে হবে।
কোন দল ক্ষমতায় গিয়ে যেনো সংবিধান পরিবর্তন করে পরবর্তী নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে না পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত সংবিধানের পরিবর্তন চাইনা। তবে, আমরা সংবিধানের পরিবর্তন চাই। সংবিধানের ক্ষমতা বলে যেনো ক্ষমতাসীনরা আর দানব না হতে পারে। আমরা সংবিধানের পরিবর্তন চাই, যাতে দেশের মানুষ আজীবন গণতন্ত্রের সুফল ভোগ করতে পারে। দেশের মানুষের জন্য সুশাসন নিশ্চিত করতেই আমরা সংবিধানের সংশোধন চাই।
জাতীয় পার্টি মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু’র সভাতিত্বে সম্পাদকমন্ডলীর মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, এ্যাড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মোস্তফা আল মাহমুদ, আলমগীর সিকদার লোটন, মনিরুল ইসলাম মিলন, উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য আতাউর রহমান আতা, ইঞ্জিঃ মাইনুর রাব্বী চৌধুরী রুম্মন, ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আজমল হোসেন লেবু, যুগ্ম মহাসচিব মোঃ নোমান মিয়া, মোঃ সামছুল হক, হাজী সালাউদ্দিন খোকা মোল্ল্যা, মোস্তফা সেলিম বেঙ্গল, আব্দুল হামিদ ভাষানী, শামীম আহমেদ রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক নির্মল চন্দ্র দাস, মোঃ হেলাল উদ্দিন, এ্যাড. মোঃ জুলফিকার হোসেন, মোঃ শাহজাহান মানসুর, মোঃ হুমায়ুন খান, মোঃ আনোয়ার হোসেন তোতা, এবিএম লিয়াকত হোসেন চাকলাদার, মোস্তফা কামাল ফারুক, মোঃ আনিস উর রহমান খোকন, আবু জাফর মোঃ ওলিউল্ল্যাহ চৌধুরী মাসুদ, কাজী আবুল খায়ের, মোঃ জয়নাল আবেদীন, এমএ হান্নান, সম্পাদকমন্ডলী মাসুদুর রহমান মাসুম,
এমএ রাজ্জাক খান, মশিউর রহমান বাবু, জহিরুল ইসলাম মিন্টু, মোঃ মঞ্জুুরুল হক মঞ্জু, মিজানুর রহমান মিরু, জামাল উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার এলাহান উদ্দিন, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জাকির হোসেন মৃধা, মিঞাজী মোঃ শহিদুল ইসলাম লিটন, মোঃ বাহাদুর ইসলাম ইমতিয়াজ, মোঃ হেলাল উদ্দিন, মোঃ জাকির হোসেন মিলন, মোঃ আবু সাদেক সরদার বাদল, অধ্যাপক নুরুল আমিন সিকদার ভুট্ট, মোঃ আখতার হোসেন দেওয়ান, এমএ ছোবহান, এসএম রহমান পারভেজ, রহিমা আখতার (আসমা সুলতানা), আজহারুল ইসলাম সরকার, আলাউদ্দিন মৃধা, মামুনুর রহিম সুমন, যুগ্ম বিভাগীয় সম্পাদক এ্যাড. মোঃ আবু তৈয়ব, মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক, এ্যাড. আব্দুর রশীদ, দ্বীন ইসলাম শেখ, মোঃ শহীদ হোসেন সেন্টু, হাফেজ ক্বারী ইসাহুরুল্লাহ আসিফ, মোঃ ইব্রাহিম আজাদ, মীর সামছুল আলম লিপটন, নির্বাহী সদস্য গোলাম মোস্তফা বাবু মন্ডল, আবু সাঈদ স্বপন, এয়ার আহমেদ সেলিম, এসএম শামছুল হুদা মিয়া, আলমগীর হোসেন, কাজী মামুন, জাকির হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মাসুম, মোঃ নুরুচ্ছফা সরকার, নুরুল আলম যাদু, নজরুল ইসলাম সরকার, রেজাউল করিম, একেএম নুরুজ্জামান জামান, সরোয়ার হোসেন শাহীন, কাজী মশিউর রহমান, গোলাম কবির শাওন, আনোয়ার হোসেন শান্ত, সোলায়মান সামি, মোঃ শওকত আকবর।
Leave a Reply