ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়
কুরুক্লান-এর নেতৃত্বে মায়ারা চারটি আদিবাসীতে বিভক্ত হয়েছিল। চারটি রাজপরিবার হল কোকোম (Cocom), তুতুল ইউ (Tutul Xiu), ইতজা (Itza) এবং চেলে (Chele)। প্রথম পরিবারের দায়িত্বে ছিলেন কুকুক্লান। এই রাজার বাড়ি ছিল মায়ন্সপ্লান (Mayanspan) অঞ্চলে।এবং এই মায়ান্সপ্লানই মায়া-সভ্যতার রাজধানী ছিল। তুতুল-ইউ (Tutul Xiu) উক্সমাল (Uxmal)-এ রাজত্ব করেছিলেন।
ইতজা (Itza)-র রাজত্ব গড়ে উঠেছিল চিচেন ইতজা (Chichen Itza)-এ এবং চেলে ছিলেন ইজামালের সর্বেসর্বা। চেলেকে উচ্চমার্গের পুরোহিতের সম্মান দেওয়া হয়েছিল। এই রাজার শহর ইজামালকে মায়াদের পবিত্র শহর বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রতিটি প্রদেশের রাজা বছরের একটা সময় মায়াপানের মহারাজ-এর সঙ্গে থাকতেন। এই প্রথা কমবেশি খ্রিস্টিয় এগার শতক পর্যন্ত চালু ছিল।
কিন্তু এরপর আর্থ-রাজনীতিক পরিস্থিতি কিছুটা জটিল হয়ে গিয়েছিল। প্রাদেশিক রাজাদের বিদ্রোহ নতুন কঠিন বাস্তবতা তৈরি করেছিল। মায়াপান রাজ্য এর ফলে ধ্বংস হয়েছিল এবং চূড়ান্ত শাসক ও কতৃত্ব ক্ষমতা হাতে নিলেন উক্সমাল (Uxmal)-এর রাজা তুতুল ইউ (Tutul Xiu)। কিন্তু পরবর্তীকালে মায়া জনসমাজের রাজনীতি, ক্ষমতার দ্বন্দ্ব আরো জটিল হয়েছিল।
পরাজিত মায়াপান নতুন করে গড়ে উঠল এবং পুরো জাতির রাজধানীও হল আবার এই মায়াপান। সবচেয়ে আশ্চর্যের ঘটনা দ্বিতীয় বিদ্রোহ। গৃহযুদ্ধের ফলে মায়াপান সাম্রাজ্য ভেঙ্গে গেল এবং কয়েকটি রাজ্যে বিভক্ত হয়ে গেল। গড়ে উঠল ১৮টি স্বাধীন রাজ্য। এরপরেও রাজনৈতিক চিত্রনাট্য শুরু হয়েছিল স্প্যানিশদের অভিযান ও দখলদারি দিয়ে। এইভাবেই শুরু হয়েছিল এবং এগিয়েছিল মায়া জনসমাজ ও সভ্যতা। এক নজরে মায়া-সভ্যতার তিনটি পর্যায় এবং তাদের সময়সীমা এবং প্রধান বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা যাক।
(চলবে)
Leave a Reply