সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা বাড়ছে”
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা বাড়ছে। এ–সংক্রান্ত পর্যালোচনা কমিটি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর সুপারিশ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তবে বয়সসীমা কত বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে, তা দায়িত্বশীল কেউ সুনির্দিষ্ট করে বলছেন না। তবে বয়সসীমা বাড়ছে, এটা প্রায় নিশ্চিত বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে পর্যালোচনা কমিটির কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে শনিবার কথা বলেছে প্রথম আলো। তাঁরা কেউ বয়সসীমা কত করার প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটা স্পষ্ট করে বলতে চাননি।
তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, চাকরিতে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর করার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে নারীদের জন্য তা ৩৭ বছর করার পক্ষে মত দিয়েছে কমিটি।
পর্যালোচনা কমিটির দুজন সদস্য বলেছেন, চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে। এ জন্য কমিটির সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাঁরা এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কিছু বলবেন না।
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সাধারণ বয়স ৩০ বছর। তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর। চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন একদল চাকরিপ্রত্যাশী। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কয়েক দফায় কর্মসূচি পালন করেছেন তাঁরা।
দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম “আজ থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ ধরা-বাজারজাত নিষিদ্ধ”
প্রজনন মৌসুমে মা-ইলিশ রক্ষায় আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন দেশের নদনদী ও সাগরে সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। গতকাল শনিবার মধ্যরাত থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে।
এ সময় দেশব্যাপী ইলিশ পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ থাকবে। নিষেধাজ্ঞা সময়ে ইলিশ মাছ আহরণ ও বিক্রি করলে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানাসহ উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। এ সময়ে জেলেদের জীবন-জীবিকার সুবিধার্থে ভিজিএফ দেবে সরকার।
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানিয়েছে, লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। মেঘনা নদীর এই এলাকাকে ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের সচেতন করার জন্য নদী এবং উপকূলবর্তী এলাকায় মাইকিং ও প্রচারপত্র বিতরণসহ সব ধরনের প্রচারণা চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন।
বণিক বার্তার একটি শিরোন “রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অস্থিরতায়ও পোশাক রফতানির গতি ধরে রেখেছে বড়রা”
জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে গত বছরের শেষার্ধে দেশের রাজনীতিতে অস্থিরতা শুরু হয়। এরপর গত জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের সময় ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্নের পাশাপাশি শিল্প-কারখানা বন্ধ রাখা হয়। শিল্প খাতে অস্থিতিশীলতা বজায় থাকে অভ্যুত্থানের পরও। শ্রম অসন্তোষ, কারখানা ভাংচুরের মতো ঘটনায় ব্যাহত হয় উৎপাদন। এমন নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও চলতি বছর তৈরি পোশাক খাতের শীর্ষ রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পোশাক রফতানির গতি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে বলে বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) তথ্য বিশ্লেষণে উঠে এসেছে।
রফতানি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিজিএমইএর সক্রিয় সদস্য কারখানাগুলোর রফতানি ঋণপত্রের বিপরীতে কাঁচামাল ব্যবহারের সনদ (ইউডি) নিতে হয়। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে সংরক্ষিত তথ্যের এ ব্যবস্থা থেকে ২০২৩ সালে একক ইউনিট হিসেবে শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা সংগ্রহ করেছে বণিক বার্তা। পাশাপাশি সংগ্রহ করা হয়েছে চলতি বছরের ৭ অক্টোবর পর্যন্ত শীর্ষ রফতানিকারকদের তালিকা। এ তালিকা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শীর্ষ ১০ রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশেরই রফতানি গত বছরের তুলনায় বেড়েছে।
এ বিষয়ে উদ্যোক্তাদের বক্তব্য হলো, আয়তন ও সক্ষমতার কারণে অনিশ্চয়তার মধ্যে ক্রেতারা বড় কারখানার ওপরেই আস্থা বেশি রাখেন। বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বৃহদায়তনের কারখানাগুলোর ক্রেতাদের আকার অনেক বড়। তাদের ক্রয়ের পরিমাণ ও সংখ্যাও বেশি। সমস্যার সময় ক্রয়াদেশ দেয়ার ক্ষেত্রে বড় ক্রেতারা চিন্তা করেন নিরাপদ কারা। তারা ভাবেন নিরাপদ হাতে দিলে ক্রয়াদেশ সুরক্ষিত থাকবে। তাদের বিশ্বাস, যেকোনো ধরনের সমস্যায়ও স্কয়ার, ডিবিএল, হা-মীম—এ ধরনের বড় কোম্পানিগুলো পণ্য রফতানি করবেই। বড় কম্পোজিট কোম্পানিগুলোর সুতা থেকে শুরু করে পোশাক তৈরি হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের সক্ষমতা রয়েছে। তাই এটা একটা বড় কারণ হতে পারে যে ক্রেতারা সংকটের সময় ছোট বা মাঝারি কারখানাগুলোর চেয়ে বড় কারখানাগুলোর ওপরেই আস্থা বেশি রাখেন।’
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখন যেমন চলছে”
অস্থির সময় পেরিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছাত্ররাজনীতির আঁতুড়ঘর মধুর ক্যান্টিনে নেতাকর্মীদের ভিড় নেই। ক্লাস-পরীক্ষার সময় উচ্চশব্দের রাজনৈতিক স্লোগান নেই। নবাগত শিক্ষার্থীদের জোর করে নেতাকে প্রটোকল দেয়া ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিয়ে যাচ্ছে না কোনো ছাত্রসংগঠন। হলগুলোতে বন্ধ গেস্টরুম ও গণরুম কালচার। শিক্ষাসূচি চলছে স্বাভাবিক গতিতে। সব মিলিয়ে নতুন এক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেখছেন শিক্ষার্থীরা। এতদিন অপরাজনীতির যে শৃঙ্খল তাদের বন্দি রেখেছিল সেই দৃশ্য থেকে মুক্ত তারা। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরই এভাবে বদলে গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র। তবে সংকট রয়েছে কোথাও কোথাও। বিগত সরকারের সুবিধাভোগী ও অনিয়মের সমর্থনকারী অর্ধশতাধিক শিক্ষককে বয়কট করেছেন শিক্ষার্থীরা। তাই কোনো কোনো কোর্সে পাঠদানে বিঘ্ন ঘটছে। এ ছাড়া যাদের প্রত্যক্ষ মদতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে সেসব শিক্ষক ও হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি কোনো ব্যবস্থা। অন্যদিকে ছেলেদের হল থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ ও বহিরাগতদের বের করে দেয়ায় আবাসন সংকট অনেকটা কেটে গেলেও মেয়েদের হলে বরাবরের মতোই প্রকট রয়েছে আবাসন সংকট। ছাত্ররাজনীতি থাকবে কি থাকবে না সে বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা হলেও শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া ও শিক্ষক রাজনীতির বিষয়ে আলোচনা নেই। এ ছাড়া নতুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন কী হবে তা নিয়েও তেমন কোনো আলোচনা হচ্ছে না। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। অন্যদিকে ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছেন, তারা শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন। শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করছে প্রশাসন। শিক্ষার্থীরাও পড়া-লেখায় মনোযোগী হচ্ছে। নতুন হল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গঠন করা হবে কমিটি।
পহেলা জুলাই সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে আপত্তি জানিয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে গেলে বন্ধ হয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। এরপর ৫ই জুলাই থেকে কোটা নিয়ে উচ্চ আদালতের দেয়া রায়ের প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরাও অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে। অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে। পরবর্তীতে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ১৫ই জুলাই শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে হামলা চালায় ছাত্রলীগ। ক্যাম্পাসে মোতায়েন হয় পুলিশ। ১৬ই জুলাই রংপুরে আবু সাঈদসহ সারা দেশে পুলিশের গুলিতে ৬ শিক্ষার্থীকে হত্যার পর আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ওইদিন রাত থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগকে হলছাড়া করে। ভাঙচুর করা হয় সংগঠনটির নেতাদের কক্ষ। ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয় কয়েক হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় ১৭ই জুলাই সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলো। ওইদিন পুলিশের সঙ্গে কয়েক দফা সংঘর্ষে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যার মধ্যে হল ছাড়তে বাধ্য হয় শিক্ষার্থীরা। ছাত্র-জনতার রক্তস্নাত বিপ্লবে ৫ই আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। এরপরই খুলে দেয়া হয় হলগুলো। যদিও আগ থেকেই হলগুলোতে কিছু শিক্ষার্থী থাকা শুরু করে। পদত্যাগ করেন ভিসি প্রফেসর ড. এএসএম মাকসুদ কামাল। প্রফেসর ড. নিয়াজ আহমেদ খানের নেতৃত্বে দায়িত্ব নেয় নতুন প্রশাসন। কয়েক দফায় ডায়ালগ শেষে দীর্ঘ বিরতির পর ২২শে সেপ্টেম্বর প্রথম বর্ষ ব্যতীত অন্যসব শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ৩০শে সেপ্টেম্বর প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদেরও ক্লাস চালু হয়। একে একে অনুষ্ঠিত হতে থাকে আটকে থাকা বিভিন্ন মিডটার্ম ও ইনকোর্স পরীক্ষা।
Leave a Reply