শ্রী নিখিলনাথ রায়
পুত্রের দুরবস্থার কথা শুনিয়া পদ্মনাভ নিজে সমস্ত অর্থ পরিশোধ করিয়া নন্দকুমারকে লাঞ্ছনা হইতে অব্যাহতি প্রদান করেন। নন্দকুমারের শত্রুপক্ষীয়েরা বলিয়া থাকেন, পদ্মনাভ সেই সময়ে নন্দকুমারের প্রতি এতদূর বিরক্ত হইয়াছিলেন যে, তদবধি আর তাঁহার মুখদর্শন করিতেন না। এ কথার কোন মূল্য আছে খলিয়া আমাদের বিশ্বাস হয় না। কারণ যে পদ্মনাভ নিজেই রাজস্ব- বিভাগে কাৰ্য্য করিতেন, তিনি কি জানিতেন না যে, রাজস্ববিভাগের কাৰ্য্য করিতে গেলে, প্রভুর নিকট দেনাপাওনা প্রায়ই ঘটিয়া থাকে। হয়ত অনেক সময়ে তাঁহার নিজের নিকট সরকারী অর্থ পাওনা হইয়াছিল।
পুত্রের নিকট সরকারের অর্থ পাওনা ছিল বলিয়া তিনি পুত্রের মুখবর্শন করিতেন না, ইহা যাঁহাদের ইচ্ছা হই বিশ্বাস করিতে পারেন, আমরা কিন্তু কিছুতেই বিশ্বাস করিতে পারি না। নন্দকুমার কার্য্য হইতে অপসৃত হইয়া, নবাব শা আমেদ জঙ্গের নায়েব হোসেন কুলী খাঁর নিকট কাৰ্য্যপ্রার্থনায় উপস্থিত হন।
রায়- রায়ান নন্দকুমারের প্রতি অসন্তুষ্ট হওয়ায়, তিনি তাঁহার বিরুদ্ধে হোসেন কুলী খাঁকে লিখিয়া পাঠাইলে, হোসেন কুলী খাঁ তাঁহাকে কাৰ্য্য প্রদান করিতে অসম্মত হন। তাহার পর তিনি আলিবর্দী খাঁর প্রধান সেনাপতি মস্তফা খাঁর নিকট প্রায়ই যাতায়াত করিতেন। এই সময়ে মস্তফা খাঁর সহিত আলিবর্দ্দদীর বিবাদের সূচনা হয়। সরকারের নিকট মস্তফা খাঁর সৈন্যদিগের বেতন প্রাপ্য হওয়ায়, নবাব কতকগুলি জমিদারের। নিকট হইতে তাহা আদায় করিয়া লওয়ার জন্য মস্তফা খাঁকে আদেশ দেন।
সৈন্তদিগকে বেতন আদায়ের ভার দিলে কিরূপ ব্যাপার উপস্থিত হইতে পারে, তাহা সাধারণে অনায়াসে বুঝিতে পারেন। জমিদারেরা আপনাদিগের আসন্ন বিপদ দেখিয়া নন্দকুমারের শরণাপন্ন হন এবং তাঁহাকে তাঁহাদের জামীন হইবার জন্য অনুরোধ করেন। নন্দকুমার তাঁহাদিগের উপকার করিতে প্রতিশ্রুত হইয়া মস্তফা খাঁর নিকট তাঁহাদের জামীন হইলেন। মস্তফা খাঁর উদ্দেশ্য।
Leave a Reply