বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৬ অপরাহ্ন

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-৬৮)

  • Update Time : শনিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৪, ১২.০০ পিএম
শশাঙ্ক মণ্ডল
চিনি গুড় শিল্প

তৃতীয় অধ্যায়

গুড়ের মরশুমে কোটচাঁদপুর, কেশবপুর এই দুটি গঞ্জে প্রতিদিন ৪/৫ হাজার মণ গুড় বিক্রয় হত। দূরদূরান্ত থেকে এক হাজারের উপর গোরুর গাড়ি এসে ভিড় করত। এসব এলাকায় গুড় থেকে যে চিনি উৎপাদিত হত তার একটা বড় অংশ নৌকার সাহায্যে কলকাতায় চালাট্ট দেওয়া হত।

আর বাকি অংশ চলে যেত বাখরগঞ্জ নলচিতি ঝালকাটিতে-ওখান থেকে পূর্ব বাংলার বিভিন্ন জেলায় চিনি সরবরাহ করা হত। কোটচাঁদপুরে-বছরে ১ লক্ষ মণ চিনি উৎপন্ন হত যার আর্থিকমূল্য ছিল উনিশ শতকের শেষে ৬ লক্ষ টাকা। সমগ্র যশোরজেলার ১/৪ অংশ চিনি কোটচাঁদপুরে উৎপন্ন হত (৩৯)। কলকাতার বড় বড় ব্যবসায়ীদের এজেন্টরা এখানে মাল কিনত- বণিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন-বংশীবদন সাধুখাঁ, গুরুদাস বসু।

কপোতাক্ষ নদীতীরে অবস্থিত যশোরের আর একটি উল্লেখযোগ্য চিনি শিল্পের কেন্দ্র চৌগাছা। এর আশেপাশে প্রচুর চিনি উৎপাদিত হত। যশোরের ঝিঙেগাছা গুড় সংগহের একটা বড় কেন্দ্র ছিল সে যুগে। ১৮৭১ সালে এখানে ৩/৪টি চিনির কারখানা ছিল। এখানকার চিনি স্থলপথে কৃষ্ণনগর, শান্তিপুরে রপ্তানি হত।

যশোর জেলার আর একটি উল্লেখযোগ্য চিনি ও গুড়ের হাট ছিল কেশবপুর। কলকাতায় অনেক বড় ব্যবসায়ী এখানে চিনি কিনতেন। এই হাটের একটা রাস্তার নাম ছিল কলকাতা পট্রা। কেশবপুর থেকে স্থলপথে ত্রিমোহনী পর্যন্ত মাল নিয়ে সেখান থেকে চিনি গুড় কলকাতার স্টীমারে পাঠানো হত। অনেক সময় কেশবপুর থেকে দেশি নৌকায় জলপথে মাল কলকাতায় পাঠানো হত। সমগ্র যশোর জেলায় চিনি শিল্প উনিশ শতকের শেষে একটি প্রধান শিল্প হিসেবে গড়ে উঠেছিল।

চিনি গুড় শিল্পের মধ্য দিয়ে বড় ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে গ্রামের গরিব চাষি পর্যন্ত অতিরিক্ত অর্থ আয়ের সুযোগ পেত। যশোর জেলার ক্ষেত্রে Westland তার রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন চিনি গুড় শিল্পের মধ্য দিয়ে ৬/৭ লক্ষ টাকা এভাবে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে বন্টিত হত।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024