কিন্তু কিছুদিন পরে রাজা দুর্লভ রামের সহিত নন্দকুমারের সৌহাদ্দ কিঞ্চিৎ শিথিল হয়। কেহ কেহ -বলিয়া থাকেন যে, নন্দকুমার স্বীয় পুত্র গুরুদাসের জন্য কাননগো-পদের প্রার্থী হইয়াছিলেন বলিয়া রাজা দুর্লভরাম তাঁহার প্রতি অসন্তুষ্ট হন। রাজা দুর্লভরামের এরূপ অসন্তোষের কারণ কি, তাহা আমরা বুঝিতে পারি না। নন্দকুমার স্বীয় পুত্রের জন্য পদপ্রার্থী হইলে, দুর্লভরামের বিরক্ত হইবার বিশেষ কোন কারণ দেখা যায় না।
পূর্ব্বে উল্লিখিত হইয়াছে যে, নন্দকুমার কোম্পানীকর্তৃক বর্দ্ধমান- প্রভৃতির রাজস্বসংগ্রহের ভারপ্রাপ্ত হন এবং তাহা লইয়াই হেষ্টিংসের সহিত তাঁহার বিবাদ আরম্ভ হয়। নদীয়ার রাজস্ব অনেক দিন হইতে পাওনা ছিল।
এজন্য নন্দকুমার রাজাকে বলিয়া পাঠাইলেন যে, কোম্পানীর, প্রাপ্য রাজস্ব নিরূপিত সময়ের মধ্যে প্রদান না করিলে, তাঁহাকে বন্দী-অবস্থায় থাকিতে হইবে। রাজা ভীত হইয়া কলিকাতায় আসিয়া ইংরেজদিগের শরণাপন্ন হইলেন এবং কোন রূপে রাজস্বের বন্দো- বস্ত করিয়া নিষ্কৃতি লাভ করিলেন।
নন্দকুমার এই সময়ে বর্দ্ধমানরাজের নিকটও খাজনার জন্য পিয়াদা প্রেরণ করেন এবং কলিকাতায় আসিয়া তাঁহার দেয় রাজস্ব মাসে মাসে বন্দোবস্ত করিবার জন্য লিখিয়া পাঠাই- লেন প্রথমে এইরূপ কথা হয় যে, বর্দ্ধমান ও নদীয়ার খাজনা মুর্শিদাবাদের রাজকোষে জমা হইয়া, পরে তথা হইতে কলিকাতায় ইংরেজদিগের নিকট প্রেরিত হইবে। কিন্তু পরে কলিকাতা কাউন্সিলের সভ্যেরা স্থির করিলেন যে, তাহাতে অসুবিধা ঘটিবে।
সুতরাং তাঁহারা উক্ত প্রদেশদ্বয়ের রাজস্ব আদায়ের জন্য একজন উপযুক্ত লোকের প্রয়ো- জন বোধ করেন। ক্লাইবের অনুরোধে নন্দকুমারকে উক্ত পদ প্রদত্ত হয়। নন্দকুমার হুগলী আসিয়া উক্ত প্রদেশদ্বয়ের খাজনা আদায়ের অনুমতি প্রাপ্ত হন এবং তজ্জন্য তাঁহাকে একটি খেলাতও প্রদত্ত হয়।
Leave a Reply