আর্কাদি গাইদার
পঞ্চম পরিচ্ছেদ
ফেদুকা, তিঙ্কা, ইয়াংকা সূক্কারন্তেইন আর আমি সবেমাত্র গোরোদুকি খেলা শুরু করতে যাচ্ছি এমন সময় মুচির ছেলেটা বাগান থেকে দৌড়ে এসে খবর দিল যে সর্বনাশ হয়েছে, পানতিউশৃঙ্কিন আর সিমাকভদের দুখানা জাহাজ চুপিচুপি আমাদের পাড়ে এসে নোঙর করেছে আর ওদের দুই শয়তান অ্যাডমিরাল আমাদের জাহাজগুলোর তালা ভাঙছে সেগুলোকে ওদের পাড়ে নিয়ে যাবার জন্যে।
তুমুল হৈ-হল্লা তুলে আমরা বাগানে ছুটলুম। আমাদের দেখেই শত্রুবাহিনী জাহাজে লাফিয়ে পড়ে সেগুলোকে বেয়ে সরিয়ে নিয়ে যেতে লাগল।
ঠিক করলুম, শত্রুর পেছনে ধাওয়া করে ওদের জাহাজ জলে ডুবিয়ে দেব। ওইদিন ফেক্কা ছিল ড্রেডনটের কম্যান্ডার। যতক্ষণ ও আর ইয়াংকা আমাদের বেঢপ সাইজের ভারি জাহাজটাকে জলে নামানোর জন্যে ঠেলতে লাগল ততক্ষণে তিক্য আর আমি আমাদের সেই বেড়ার দরজাটায় চেপে শত্রুর পথ অবরোধ করতে রওনা দিলুম। প্রথমেই শত্রুরা একটা ভুল করে বসল। বোঝা গেল, তারা ভাবে নি আমরা পিছ নেব, তাই সোজা নিজেদের পাড়ের দিকে না গিয়ে তারা বাঁ-দিকে বেশ খানিকটা দূরে সরে গেল। কিন্তু যখন ভুল বুঝতে পারল তখন নিজেদের পাড় থেকে অনেক দূরে সরে গেছে তারা।
এইসময়ে ওরা প্রাণপণ চেষ্টা করতে লাগল আমরা ওদের ফেরার পথ আটকে ফেলার আগেই কোনোরকমে নিজেদের পাড়ে ফিরতে। ওদিকে ফেক্কা আর ইয়াঙ্কা তখনও চেষ্টা করে চলেছে বাঁধন খুলে বড় জাহাজটাকে জলে নামাতে। তিঙ্কা আর আমার ওপর তখন গুরুদায়িত্ব। তা হল, আমাদের হালকা জাহাজখানা দিয়ে বেশি শক্তিশালী শত্রু-বহরকে মাঝ- দরিয়ায় কয়েক মিনিট আটকে রাখা।
তখনও আমাদের সাহায্য এসে পৌঁছয় নি, এদিকে শত্রু-বহর আমাদের মুখোমুখি হল। কিন্তু আমরা বললুম, কুছ পরোয়া নেই। সরাসরি কামান দাগতে শুরু করে দিলুম। বলা বাহুল্য, সঙ্গে সঙ্গে দু-দিক থেকে আমরা মারাত্মক গোলাবর্ষণের সম্মুখীন হলুম।
Leave a Reply