বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:১৭ অপরাহ্ন

ইশকুল (পর্ব-৪০)

  • Update Time : সোমবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৪, ৮.০০ পিএম

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

এরপর দেখা দিল খাবারের ঘাটতি। মাখন, ডিম আর দুধ ভোরবেলাতেই বাজার থেকে চড়া দামে বিক্রি হয়ে যেতে লাগল। রুটিওয়ালার দোকানে রুটি কিনতে লাইন পড়ে গেল। পাঁউরুটি তো পাওয়াই যাচ্ছিল না, সকলের খাবার মতো রাইয়ের রুটিও যথেষ্ট ছিল না। ব্যবসাদাররা নির্দয়ভাবে সব জিনিসের দাম বাড়িয়ে দিতে লাগল, এমন কি খাবার ছাড়া অন্য জিনিসপত্রের দরও।

লোকে বলতে লাগল, বেবেশিন একা নাকি আগের এক বছরে যত পয়সা কামিয়েছিল তার আগের পাঁচ বছরে তত কামায় নি। আর সিনিউগিন এত ধনী হয়ে উঠল যে একটা গিজে’য় সে ছ-হাজার রুল দান করে বসল। এ-সময়ে টেলিস্কোপ- ওয়ালা তার সেই গম্বুজের দিকে আর ফিরেও তাকাত না, বরং মস্কো থেকে অর্ডার দিয়ে আনাল জলজ্যান্ত একটা কুমির আর একটা নতুন পুকুর কাটিয়ে সে কুমিরটাকে তার মধ্যে জাঁইয়ে রাখল।

কুমিরটাকে যেদিন রেলস্টেশন থেকে শহরে আনা হল সেদিন কুমিরের গাড়ির পিছ পিছ কৌতূহলী মানুষের এমন একটা প্রকাণ্ড ভিড় এসেছিল যে ‘পরিত্রাতার গির্জে’র পবিত্র জিনিসপত্রের রক্ষক টেরা গ্রিক বোচারভ ব্যাপারটাকে আমাদের মাতৃদেবীর ওরাষ্কের প্রতিমূর্তি-বাহী ধর্মীয় শোভাযাত্রা বলে ভুল করে গিজের ঘণ্টা বাজাতে শুরু করে দিয়েছিল। এর জন্যে বিশপ গ্রিশ্কাকে তেরো দিন প্রায়শ্চিত্ত করার বিধান দিয়েছিলেন।

গির্জের যজমানদের মধ্যে অনেকে কিন্তু বললেন, গ্রিশৃঙ্কা যে ভুল করে ঘণ্টা বাজিয়ে দেয়ার কথা বলেছিল সেটা নাকি ডাহা মিথ্যে। তাঁদের মতে, ও বজ্জাতির মতলব নিয়েই ইচ্ছে করে ঘণ্টা বাজিয়েছিল। তাই প্রায়শ্চিত্তের শাস্তি ওর পক্ষে যথেষ্ট নয়। উচিত, ওকে গারদে ভরে একটা উদাহরণ স্থাপন করা। মড়া নিয়ে শোকযাত্রাকে ধর্মীয় শোভাযাত্রা বলে ভুল করলে তবু সহ্য হয়, কিন্তু কুমিরের মতো একটা ঘৃণ্য জন্তুকে দেবীমূর্তি বলে ভান করা মারাত্মক পাপকাজ ছাড়া কিছু নয়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024