শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ পূর্বাহ্ন

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২০৩)

  • Update Time : শুক্রবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৪, ১১.০০ পিএম
শ্রী নিখিলনাথ রায়

হেষ্টিংস সেই সমস্ত পত্র লইয়া মহা ধুমধাম করিয়াছিলেন। ইহার পর তিনি মুক্তিলাভ করেন। এই সময়ে ইংরেজ কর্মচারিগণ ‘আপনাদিগের গুপ্তব্যবসায়ের জন্য কোম্পানীর অনেক ক্ষতি ও দেশমধ্যে নানারূপ অত্যাচার করিতে আরম্ভ করিক্কাছিলেন। নন্দকুমার সেই বিষয়ে জাফর খাঁর মোহরসংবলিত এক খানি পত্র ক্রাইবকে ও আর একখানি কোম্পানীকে লিখিয়া পাঠান। উক্ত দুইখানি পত্রও ইংরেজ কর্মচারীদিগের হস্তগত’ হওয়ায়, তাঁহারা নন্দ- কুমারের প্রতি ভয়ানক অসন্তুষ্ট হইয়া উঠেন।

এই সময় হইতে, ইংরেজ- কর্মচারীদিগের মধ্যে দুইটি দল হয়; একদলে ভান্সিটার্ট ও হেষ্টিংস, অপর দলে আমিয়ট ও এলিস্ প্রধান ছিলেন এবং নবাব মীর কাশেমেরও ইংরেজ দিগের প্রতি বিদ্বেষের সূচনা হয়। নন্দকুমার মীর কাশেমের মনোভাব বুঝিতে পারিয়া, তাঁহাকে সৎপরামর্শ দিবার জন্য তাঁহার দরবারে কোন কাৰ্য্য করিতে ইচ্ছুক হন। এলিস্ ও আমিয়টের সঙ্গে নন্দকুমারের অনেকটা পরিচয় ছিল। সেই সময়ে কর্ণেল কূট কলিকাতার আসিলে, ও বিহারের গোলযোগনিবারণের জন্য তাঁহার পাটনায় যাওয়ার কথা হইলে, এলিস্ ও আমিয়টের পরামর্শানুসারে নন্দকুমার তাঁহার নিকট যাতায়াত করিতে আরম্ভ করিলেন।

কূট বরাবরই নন্দ- কুমারকে জানিতেন। তিনি নন্দকুমারকে সঙ্গে করিয়া পাটনা যাত্রা করিতে ইচ্ছুক হইলেন; কিন্তু ভান্সিটার্ট তাহাতে আপত্তি করিলেন। অবশেষে কুটের বিশেষ ইচ্ছা হওয়ায় এইরূপ স্থির হয় যে, কুটের রওনা হওয়ার কিছুদিন পরে নন্দকুমার যাত্রা করিবেন। কুট নন্দকুমারকে হুগলীর ফৌজদারী দিবার জন্ত মীর কাশেমকে অনুরোধ করেন; কিন্তু মীর কাশেম তাহাতে কর্ণপাত করেন নাই। তিনি নন্দকুমারকে গ্রহণ না করায়, মহাভ্রমের কার্য্য, করিয়াছিলেন।

মীর কাশেম তদানীন্তন প্রবঞ্চক ইংরেজ বণিদিগের দমনের জন্য যে উপায় অবলম্বন করিয়াছিলেন, যদি নন্দকুমারের ন্যায় একজন উপযুক্ত ব্যক্তি তাঁহার পরামর্শদাতা থাকিতেন, তাহা হইলে, তিনি যেরূপ বুদ্ধিমান ও ক্ষমতাশালী পুরুষ ছিলেন, তাহাতে তাঁহার চেষ্টা অনেক পরিমাণে সফল হইতে পারিত। নন্দকুমারকে ফৌজদারী না দেওয়ায় তাঁহার সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ হইয়া যায়। সেই সময়ে একখানি পত্র ইংরেজ- দিগের হস্তগত হয়। তাহার উপরিভাগে রামচরণ রায় নামে এক ব্যক্তির মোহর ‘খোদিত ছিল; কিন্তু পত্রের মধ্যে বাদশাহের সেনাপতি কামগার খাঁ প্রভৃতিকে উদ্দেশ করিয়া অনেক কথা লিখিত থাকে এবং আর একখানি পত্র ফরাসী ল সাহেবকে লিখিত হয়।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024