ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়
মায়াদের মন্দির স্থাপত্য
মেসোআমেরিকা তথা মায়া-সভ্যতার নানা বৈচিত্র্যর মধ্যে মন্দির স্থাপত্য অন্যতম। মন্দির দেবদেবী এবং লোকবিশ্বাস, আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা এসব তাদের সামগ্রিক জীবনের উপরই প্রভাব ফেলেছিল। সেই কারণে মন্দির নির্মাণ ছিল স্থাপত্য শিল্পের অন্যতম প্রকাশ। প্রাক্-ক্লাসিক এবং ক্লাসিক উত্তর যুগের বিস্তীর্ণ সময় ধরে এই মন্দির-স্থাপত্য পর্যটকদের আকর্ষণ করেছে। মন্দিরগুলির স্থাপত্যকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়।
এগুলি হল পেতেন (Peten), রিওবেক (Riobec), চেনেস (Chenes), পুক (Puuc), চিচেন ইতজা (Chichen Itza) এবং মায়া- তলতেক (Maya-Toltoc)। স্থাপত্যশৈলীগুলি আবার অঞ্চলভেদে গড়ে উঠেছিল। যেমন পেতেনশৈলী প্রধানত গুয়াতেমালার। চেনেস স্থাপত্য আবার কাম্পেচ অঞ্চলের বিশেষ বৈশিষ্ট্য এবং কিছুটা কিনতানারু (Quintanaroo)-র পশ্চিমদিকে প্রচলিত।
এই স্থাপত্যশৈলীতে মন্দিরে অলংকারের আতিশয্য থাকে এবং মন্দিরের প্রবেশদ্বারে থাকে দস্যু-দানবের মূর্তি। অর্থাৎ বোঝা যায় মায়া জনসমাজে দত্যিদানা, দানব এসব অতিপ্রাকৃত বিষ্ময়ের প্রভাব ছিল। এই ধরনের বিশ্বাসের সঙ্গে লোকগল্পও (Myth) জড়িয়ে থাকে। পুক (Puuc) স্থাপত্যর দেখা মিলবে মায়াপ্রদেশ উক্সমাল (Uxmal) এবং চাকমুলতান (Chacmultan) অঞ্চলে।
এই স্থাপত্যশৈলী দরজার উপরের দিকের মধ্য অংশ থেকে শুরু হয় এবং এই শিল্পের কাজ দরজার উপর কার্নিস পর্যন্ত প্রসারিত থাকে। এই সুন্দর কাজগুলি ছোট ছোট কাঠের মত টুকরো দিয়ে করা হয়। এতে থাকে জাফরিকাটা চাকের মুখোস। সাপের প্রতীকী। চিচেন ইতজা মন্দির স্থাপত্য সাধারণভাবে পুক এবং চেনেসশৈলীর মিশ্রণে গড়ে উঠেছিল। এরপরের শৈলীকে বলা মায়া-তলতেক (Maya- Toltec)।
(চলবে)
Leave a Reply