সমীর কুমার দে
চট্টগ্রামের হাজারী গলিতে বিক্ষুব্ধ সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে সেনাবাহিনী ও পুলিশের অন্তত ১২ জন আহত হন।
পুলিশের মুখপাত্র জানান, এ ঘটনায় ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ গ্রেপ্তারকৃতদের ইসকনের অনুসারী হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের উপর হামলা ও এসিড নিক্ষেপের অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত ৪৯ জনসহ অজ্ঞাত ৫০০-৬০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক লাঠিপেটার অভিযোগ উঠলেও লাঠির আঘাতে কতজন আহত হয়েছেন তা জানা যায়নি৷
ইসকন নিয়ে ফেসবুকে অন্যের একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলেন ব্যবসায়ী ওসমান আলী। এর প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার হাজারী গলির মিয়া শপিং সেন্টারে তার দোকান ঘেরাও করে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিক্ষুব্ধ লোকজন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যৌথ বাহিনী গেলে তাদের সঙ্গে বিক্ষুব্ধদের সংঘর্ষ হয়। এতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের অন্তত ১২ সদস্য আহত হন।
আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন)-কে নিয়ে দেয়া ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শহরের কোতোয়ালি থানার টেরিবাজার এলাকায় হিন্দু অধ্যুষিত হাজারী গলিতে এ ঘটনা ঘটে৷ সংঘর্ষে আহত পুলিশ সদস্যদের
মধ্যে মো. ফয়েজ এসিডদগ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে৷ তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ওই এলাকায় যৌথ বাহিনীর অভিযানের সময় ব্যাপক লাঠিচার্জ ও মারধরের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদের নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে অভিযানের সময় যৌথবাহিনীর সদস্যদের সিসি ক্যামেরাগুলো ভেঙে ফেলার বিষয়টি প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র উপ-কমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন ডয়চে ভেলেকে বলেন, “হাজারী গলিতে যৌথ বাহিনীর ওপর হামলার ঘটনায় ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে ৮২ জনকে আটক করা হয়েছিল। বাকি ৩৩ জনের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় কোতোয়ালি থানার এসআই মিজানুর রহমান বাদি হয়ে সরকারী কাজে বাধা, পুলিশের উপর হামলা ও এসিড নিক্ষেপের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় গ্রেপ্তার ৪৯ জনসহ অজ্ঞাত ৫০০-৬০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ৪৯ জনের সবাই হিন্দু সম্প্রদায়ের।”
মো. রইছ উদ্দিন বলেন, “গ্রেপ্তারকৃতরা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংগঠন ইসকনের অনুসারী। ইসকন নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কিছু সংক্ষুব্ধ লোক ওসমান আলী নামে এক ব্যক্তিকে হাজারী গলিতে তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অবরুদ্ধ করে রাখেন। জরুরি জাতীয় পরিষেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওসমান আলীকে উদ্ধারের চেষ্টা করে। এ সময় উচ্ছৃঙ্খল জনতা পুলিশের কাছ থেকে ওসমান আলীকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতির অবনতি হলে সেনাবাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত সেখানে যান। উচ্ছৃঙ্খল জনতার নিক্ষিপ্ত ইটপাটকেলের আঘাতে ৭ পুলিশ সদস্য আহত হন, যাদের মধ্যে একজনকে অ্যাসিড মারা হয়। এ সময় সেনাবাহিনীর পাঁচ সদস্যও আহত হয়েছেন।”
‘যৌথবাহিনীর ওপর জুয়েলারির এসিড, ইট-পাটকেল, কাঁচের বোতল ছোঁড়া হয়েছে’
যৌথ বাহিনীর মুখপাত্র লে. কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “যৌথবাহিনীর ওপর সেখানে জুয়েলারির কাজে ব্যবহৃত এসিড হামলা ও ইট-পাটকেলসহ কাঁচের বোতল ছোঁড়া হয়েছে। এতে পাঁচ সেনা সদস্য ও সাত জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। বিশৃঙ্খলাকারীদের সংখ্যায় অনেক বেশি হওয়ায় জানমাল রক্ষা এবং মব জাস্টিস রোধে যৌথ বাহিনী ওসমান আলী ও তার ভাইকে ওই এলাকা থেকে উদ্ধার করে। আহত সেনাসদস্যদের চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্বৃত্তরা সেনাবাহিনীর একটি পিকআপ ভ্যানের উইন্ডশিল্ড ভেঙে ফেলেছে।” পরে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য লে. কর্নেল ফেরদৌস আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সংবাদ সম্মেলনের বাইরে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।
সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামসহ কয়েকটি এলাকায় ইসকন-বিরোধী বক্তৃতা, বিবৃতি আসার পর ইসকনের দিক থেকে এর তীব্র সমালোচনা করা হয়। সম্প্রতি ইসকন তাদের নিয়ে ‘অসত্য’ বক্তব্য দেয়ার অভিযোগ করে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের তীব্র সমালোচনা করা হয়। মাহমুদুর রহমান এক অনুষ্ঠানে ‘ইসকনকে সাম্প্রদায়িক ও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর’ সংগঠন হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। ইসকন এক বিবৃতিতে বলেছে, এটি একটি অরাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় সংগঠন। বিবৃতিতে মাহমুদুর রহমানের বক্তব্য ৭ দিনের মধ্যে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
‘ সিসি ক্যামেরা ভাঙার অর্থ এমন কিছু হয়েছে যার প্রমান তারা রাখতে চায়নি’
ইসকন, বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী ডয়চে ভেলেকে বলেন, “হাজারী গলিতে সংঘটিত হামলা-ভাংচুরসহ অনাকাঙ্খিত কোনো ঘটনার সঙ্গে ইসকনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। অযথা ইসকনকে যুক্ত করা হয়েছে। আমরা চাই যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করা হোক। এর আগে আমরা যেটা চাই, সেটা হলো, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হোক। কারণ, আইনের শাসন না থাকলে কোনো কিছুই সঠিকভাবে হবে না। এখানে যেমন যৌথ বাহিনীর সদস্যরা মব ভায়োলেন্স ঠেকানোর জন্য গিয়েছিলেন, সব জায়গাতেই যেন তারা এই কাজটি করেন। খুলনায় কিস্তু আমরা দেখেছি, আইন -শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে উৎসব মন্ডলকে নির্দয়ভাবে পেটানো হয়েছে। ফলে কোথাও আপনি ঠেকাবেন, আর কোথাও ঠেকাবেন না, তাহলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে না। আবার যৌথবাহিনীর সদস্যরা সিসি ক্যামেরাগুলো ভেঙে ফেলছে সে ভিডিও আমরা দেখেছি। তারা কেন সিসি ক্যামেরা ভাঙবে? তার অর্থ সেখানে এমন কিছু হয়েছে যেটার প্রমান তারা রাখতে চায়নি। এগুলো তো আইনের শাসনের প্রতিফলন না।”
চট্টগ্রামের হাজারী গলির মিয়া শপিং সেন্টারে দুই থেকে আড়াই হাজারের মতো বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় ১৫০ ব্যক্তি জুয়েলারি ব্যবসা করেন। সেখানে জুয়েলারি বাক্স, মালা, মালায় ব্যবহৃত স্টোন ও রুপার ব্যবসা করেন ওসমান আলী। নিচতলায় তার দোকানের নাম মোল্লা স্টোর। সম্প্রতি ওসমান আলী ইসকনকে নিয়ে আরেকজনের একটি ফেসবুক পোস্ট তার ওয়ালে শেয়ার করেন। এরই জেরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একদল মানুষ মোল্লা স্টোরের সামনে জড়ো হয়। তারা ওসমান আলী ও তার ভাইয়ের সঙ্গে তর্কে জড়ান। এক পর্যায়ে মোল্লা স্টোরের শাটার বন্ধ করে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার রাতের অভিযানের সময় জুয়েলারি দোকানগুলো সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, “জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে যৌথবাহিনীর সঙ্গে দোনকানগুলো সিলগালা করেছে। তবে বুধবার সন্ধ্যায় বেশ কিছু দোকান খুলে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টির তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষ হলে সবগুলো দোকানই খুলে দেওয়া হবে। আর সিসি ক্যামেরাগুলো কারা ভেঙেছে সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত কিছু জানা যায়নি। ব্যবসায়ীরা আমাদের শান্তি সমাবেশের কথা বলেছে, আমরা খুব শিগগিরই শান্তি সমাবেশ করে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য দূর করে দেবো।”
‘বাড়ি বাড়ি ঢুকে যেভাবে পেটানো হয়েছে দেখলে চোখে জল চলে আসবে’
চট্টগ্রাম জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক কাজল বণিক ডয়চে ভেলেকে বলেন, “মঙ্গলবার রাতে যৌথ বাহিনী হাজারী গলিতে ঢুকে যাকে পেয়েছে তাকেই মেরেছে। নির্দয়ভাবে পিটিয়েছে। বাসা-বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। পরে সব দোকান সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। এলাকার সব ব্যবসায়ী হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। সেখানেই কাজ করা একজন যদি ধর্মীয় সংগঠনকে আক্রমণ করে তাহলে হিন্দুদের মধ্যে ক্ষোভ হবে না? ক্ষোভ থেকে প্রতিবাদ হয়েছে। সেখানে নির্বিচারে হামলা করা হয়েছে মানুষের ওপর। প্রত্যেকটি জুয়েলারি দোকানে দুই-তিনটি করে সিসি ক্যামেরা আছে সবগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে। যে এসিড নিক্ষেপ করেছে তাকে গ্রেপ্তার করুক। আমরা তো বাধা দেবো না। আমরা যেটা শুনেছি, গেট ভাঙার আগে যৌথবাহিনীর সদস্যরা বলছেন, এক দুই তিন দরোজা খোল, না হলে গুলি করবো৷ এমন পরিস্থিতিতে কেউ নাকি জুয়েলারি দোকানে থাকা এসিড তাদের দিকে ফেলেছে। আসলে ওই সময় সেখানে পরিস্থিতি কেমন ছিল, সেটা বুঝতে হবে। আমরাও তো ট্যাক্স দিয়ে ব্যবসা করি। আমরা তো এই বাংলাদেশ চাইনি৷ বাড়ি বাড়ি ঢুকে, গেট ভেঙে যেভাবে পেটানো হয়েছে সেটা দেখলে যে কারো চোখে জল চলে আসবে৷ এভাবে কি বেঁচে থাকা যায়?”
প্রসঙ্গত, ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন) বা আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ হলো বৈষ্ণব মতবাদের একটি হিন্দু ধর্মীয় সংগঠন, যারা তাদের আধ্যাত্মিক দর্শন প্রচার করে থাকেন। বিশ্বের অনেক দেশে এই সংগঠনের শাখা রয়েছে। সাম্প্রতিক কালে ইসকনের বিরুদ্ধে বেশ কিছু বক্তব্য এসেছে। চট্টগ্রামে ইসকন নেতাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়। গত ৩০ অক্টোবর সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতোয়ালীয় থানায় রাষ্ট্রদ্রোহের এই মামলা করেন চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান। ওই মামলা করার কারণে তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে দাবি করে বিবৃতি দিয়েছেন চান্দগাঁও থানার সভাপতি মোহাম্মদ আজম।
গত মাসের শেষের দিকে আট দফা দাবিতে চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে বিশাল এক সমাবেশ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা। সেখানে তারা সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও নিপীড়নের বিচার, জড়িতদের শাস্তি দেয়া, ক্ষতিপূরণ দেওয়া, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন করার মতো দাবি জানান।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আলোচিত বিষয়৷ সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে এসে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক বলেন, ” আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়ে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন তথ্যানুসন্ধান করছে।” তিনি আরো বলেন, “সংস্কার কাঠামোতে জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু, সেইসাথে বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ।”
দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডনাল্ড ট্রাম্পের এক পোস্টেও উঠে আসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রসঙ্গ৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ তিনি লেখেন, ” আমি বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিষ্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর বর্বরোচিত সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। দেশটিতে দলবদ্ধভাবে তাদের ওপর হামলা ও লুটপাট চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন পুরোপুরিভাবে একটি বিশৃঙ্খল অবস্থার মধ্যে রয়েছে।”
ডিডাব্লিউ ডটকম
Leave a Reply