বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫১ অপরাহ্ন

ইলন মাস্ক থেকে রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র- ট্রাম্প প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারেন যারা

  • Update Time : শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৪, ১.৪৬ পিএম
ইলন মাস্ক এবং আরএফকে জুনিয়র মি. ট্রাম্পের বিশিষ্ট সমর্থকদের তালিকায় আছেন আর সুজি ওয়ালস (মাঝের ছবি) তার নির্বাচনি প্রচারণা সহ-পরিচালনা করেছেন।

স্যাম ক্যাব্রাল, অ্যামি ওয়াকার ও নাদিন ইউসুফ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতে আরও একবার হোয়াইট হাউজে ফিরতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার ‘ট্রানজিশন টিম’ এরই মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে। হোয়াইট হাউজে ফেরার পর ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় মেয়াদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন নির্বাচিত এই ব্যক্তিরা।

বৃহস্পতিবারই এ বিষয়ে প্রথম ঘোষণা সেরে ফেলেছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। হোয়াইট হাউজের চিফ অফ স্টাফ হিসেবে তার নির্বাচনি প্রচারের নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম সুসান সামারল ওয়াইলসের নাম ঘোষণা করেছেন।

প্রথম মেয়াদে যারা তার অধীনে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তাদের অনেকেই ফিরে আসার পরিকল্পনা করছেন না বলে জানা গিয়েছে। তবে মি. ট্রাম্পের মুষ্টিমেয় কয়েকজন অনুগত তার দ্বিতীয় দফা শাসনকালে ফিরে আসবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।

এদিকে অনুমান করা হচ্ছে যে সাম্প্রতিক সময়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঘিরে থাকা নতুন ব্যক্তিদের অনেকেই তার ক্যাবিনেটে থাকতে পারেন। তাদের হোয়াইট হাউজের স্টাফ হিসাবে দায়িত্বে এবং সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদেও ভূমিকা পালন করতে দেখা যেতে পারে।

কয়েকজন সম্ভাব্য ব্যক্তিত্বের নাম ইতোমধ্যে আলোচনায় রয়েছে যারা ট্রাম্প প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারেন।

একসময় ডেমোক্র্যাট হলেও রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র বর্তমানে মি. ট্রাম্পের বিশিষ্ট সমর্থক।

রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ভাইপো রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রের গত দুই বছরের সফর বেশ উল্লেখযোগ্য।

পেশায় পরিবেশবাদী আইনজীবী তিনি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পেতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করেছেন।

প্রসঙ্গত, রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রের পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকেই তার ভ্যাক্সিন-বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি ও ষড়যন্ত্র তত্ত্বের বিরুদ্ধে কথা বলতে এবং জো বাইডেনের পুনর্নির্বাচনকে সমর্থন করতে দেখা গিয়েছে।

এরপর তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন কিন্তু একাধিক বিতর্কের মধ্যে জড়িয়ে পড়ার কারণে তার প্রার্থিতা তেমন জনসমর্থন অর্জন করতে পারেনি। নির্বাচনি দৌড় থেকে ছিটকে যান তিনি এবং শেষপর্যন্ত রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নেন।

চলতি বছরের নির্বাচনি চক্রের শেষ দুই মাসে তিনি ‘মেক আমেরিকা হেলদি এগেন’ নামে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচার উদ্যোগের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

সম্প্রতি রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মি. ট্রাম্প যে তিনি ‘সেন্টারস ফর ডিসিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’(সিডিসি) বা রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র এবং ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ সেফ্টি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (এফডিএ) বা খাদ্য ও ওষুধ সুরক্ষা প্রশাসন এর মতো জনস্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত কোনও বড় ভূমিকা পালন করবেন।

আরএফকে জুনিয়র নামে পরিচিত এই পরিবেশবাদী আইনজীবী সম্প্রতি জানিয়েছিলেন যে তিনি পানীয় জল থেকে ফ্লোরাইড অপসারণ করার বিষয়ে চাপ সৃষ্টি করবেন।

“যেভাবে আমাদের সিস্টেমে (মানবদেহে) এটা (ফ্লোরাইড) সরবরাহ হয়, তা বেশ খারাপ” বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। যদিও তার এই তত্ত্বকে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চ্যালেঞ্জ করেছেন।

তিনি ‘ভ্যাক্সিন-বিরোধী’এই ‘ধারণা’ অস্বীকার করে এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আরএফকে জুনিয়র বলেছিলেন যে তিনি “কারও ভ্যাক্সিন কেড়ে নেবেন না” বরং জনসাধারণ যাতে নিজেরা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন জন্য “সেরা তথ্য” সরবরাহ করবেন।

সাক্ষাৎকারের সময় তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে ক্যাবিনেটের বদলে তিনি হোয়াইট হাউজের মধ্যে বৃহত্তর ভূমিকা পালন করতে পারেন।

সাম্প্রতিক নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাফল্যের পিছনে সুজি ওয়াইলসের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে।

সুজি ওয়াইলস

ডেমোক্র্যাট কমালা হ্যারিসের বিরুদ্ধে মি. ট্রাম্পের জয়ের নেপথ্যে ছিলেন তার নির্বাচনি প্রচারের কো-চেয়ার (সহ-সভাপতি) পদের দায়িত্বে থাকা ক্রিস লাসিভিটা এবং সুজি ওয়াইলস। বুধবার তার বিজয় ভাষণে সুজি ওয়াইলসকে ‘আইস বেবি’ বলে উল্লেখ করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তাকে হোয়াইট হাউজের চিফ অফ স্টাফ হিসাবে নিশ্চিত করা হয়েছে। মি. ট্রাম্পের আসন্ন মেয়াদে যারা গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে চলেছেন তার মধ্যে মিজ ওয়াইলসের নামই প্রথম ঘোষণা করা হয়। প্রসঙ্গত, তিনিই প্রথম নারী যিনি এই দায়িত্ব পালন করতে চলেছেন।

সুজি ওয়ালইস “নেপথ্যে থাকতেই পছন্দ করেন” বলে মঞ্চে মন্তব্য করেছিলেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ভয়ঙ্কর এবং সম্মানিত রাজনৈতিক কর্মী হিসাবে বিবেচনা করা হয় মিজ ওয়াইলসকে।

রাজনীতিতে কাজ শুরু করার এক বছরেরও কম সময়ে, ১৯৮০ সালে তিনি রোনাল্ড রেগানের সফল প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সঙ্গে যুক্ত হন। পরে হোয়াইট হাউজে সময়সূচি সংক্রান্ত কাজের দায়িত্বে ছিলেন মিজ ওয়াইলস।

তিনি ২০১০ সালে ব্যবসায়ী রিক স্কটকে মাত্র সাত মাসের মধ্যে ফ্লোরিডার গভর্নরের পদে নির্বাচিত হতে সাহায্য করেন। বর্তমানে একজন মার্কিন সিনেটরের দায়িত্বে থাকা মি. স্কটের সেই সময় রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা অল্প ছিল।

২০১৫ সালে ‘রিপাবলিকান প্রেসিডেন্সিয়াল প্রাইমারি’র (প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী হিসাবে পার্টির অনুমোদন পেতে যে প্রাথমিক লড়াই) সময় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথমবার সাক্ষাৎ হয়েছিল মিজ ওয়াইলসের। তিনি মি. ট্রাম্পের ফ্লোরিডায় প্রচারের কো-চেয়ার বা সহ-সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। সেই সময় ফ্লোরিডা সুইং স্টেট ছিল। ২০১৬ সালে সেখানে মি. ট্রাম্প তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনকে অল্প ব্যবধানে পরাজিত করেন।

নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের কাছাকাছি থাকা ব্যক্তিদের (যাদের অনেকেরই বেশ অহংকার আছে) কাছ থেকে সম্মান আদায় করে নেওয়ার দক্ষতার কারণে মিজ ওয়াইলসের প্রশংসা করেছে রিপাবলিকানরা। অনুমান করা যায় শৃঙ্খলার সুর বেঁধে দিতে সক্ষম হবেন তিনি যা তার পূর্ববর্তী চারজন চিফ অফ স্টাফের কেউই করতে পারেননি।

ইলন মাস্ক ব্যাপকভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনে প্রচার করেছেন।

ইলন মাস্ক

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী এই ব্যক্তি চলতি বছরের শুরুতে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সমর্থন ঘোষণা করেছিলেন। এর আগে, ২০২২ সালে অবশ্য তিনি মি. ট্রাম্পের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের পতনের ইঙ্গিত দিয়ে মন্তব্য করেছিলেন “ট্রাম্পের টুপি খুলে ঝুলিয়ে রাখা এবং সূর্যাস্তের দিকে যাত্রা করার সময় এসেছে।”

তবে সময় বদলেছে। প্রযুক্তি বিলিয়নিয়ার থেকে ট্রাম্পের অন্যতম দৃশ্যমান এবং সুপরিচিত সমর্থক হিসাবে প্রকাশ্যে এসেছেন ইলন মাস্ক। চলতি বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন করতে ‘আমেরিকা পিএসি’ নামে একটা রাজনৈতিক অ্যাকশন কমিটি গঠন করেছিলেন তিনি। এই নির্বাচনি চক্রে সেখানে ১১.৯ কোটি ডলার অনুদান দিয়েছেন মি মাস্ক।

টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান এবং সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্স (সাবেক টুইটারের)-এর মালিক ইলন মাস্ক ভোটার রেজিস্ট্রেশন অভিযান (ভোটার নিবন্ধন অভিযান) চালু করেছিলেন। প্রচারের সমাপনী পর্বে এই অভিযানের আওতায় সুইং-স্টেটের যেকোনও একজন ভোটারকে প্রতিদিন ১০ লক্ষ ডলার উপহার দেওয়া হতো।

আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে রিপাবলিকান হিসাবে রেজিস্ট্রেশন করেন তিনি। এরপর থেকেই তাকে অবৈধ অভিবাসন এবং ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকারসহ একাধিক বিষয় নিয়ে সোচ্চার হতে দেখা গিয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইলন মাস্ক ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ অর্থাৎ সরকারি দক্ষতা বিভাগের বিষয়ে মনোনিবেশ করেছেন। তারা জানিয়েছেন, ব্যয় হ্রাস, বিধিবিধান সংস্কার এবং “বিরাট, শ্বাসরুদ্ধকর ফেডারেল আমলাতন্ত্র” শেষ করতেই এই ভাবনা চিন্তা। এই বিভাগের দায়িত্বে থাকবেন মি. মাস্ক।

সম্ভাব্য এই এজেন্সি ‘ডিওজিই’ নামেই পরিচিত হবে। এই সংক্ষিপ্ত নামে ইলন মাস্কের প্রচারিত ‘মিম-কয়েন’ ক্রিপ্টোকারেন্সির একটা কৌতুকপূর্ণ রেফারেন্স রয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যেতে পারে মাইক পম্পেওকে।

মাইক পম্পেও

কানসাসের এই সাবেক কংগ্রেসম্যান সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (সিআইএ) পরিচালক এবং পরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম দফায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

পররাষ্ট্রনীতির কড়া পর্যবেক্ষক এবং ইসরায়েলের কট্টর সমর্থক হিসাবে পরিচিত মি. পম্পেও ইসরায়েলস্থিত মার্কিন দূতাবাসকে তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তর করার নেপথ্যে স্পষ্টত খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আব্রাহাম চুক্তি বাস্তবায়নের নেপথ্যে থাকা ব্যক্তিত্বের মধ্যে তিনি অন্যতম। ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাহরাইনের মধ্যে সম্পর্ককে স্বাভাবিক করতে এই চুক্তি।

২০২০ সালের শেষের দিকে নির্বাচনে জালিয়াতির ভুয়ো দাবি তুলেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই আবহে তার ‘বস’ ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুগত রক্ষকদের তালিকায় ছিলেন মাইক পম্পেও। রসিকতা করে তাকে (মাইক পম্পেওকে) বলতে শোনা গিয়েছিল, “ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফার প্রশাসনে একটা মসৃণ রূপান্তর দেখা যাবে।”

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের আর্মড সার্ভিসেস কমিটিতে ফ্লোরিডার আইনপ্রণেতা ও সামরিক কর্মকর্তা মাইকেল ওয়াল্টজের পাশাপাশি তাকেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিফেন্স সেক্রেটারির পদের জন্য শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে বলে খবর।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে উল্লেখযোগ্য ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল রিচার্ড গ্রেনেলকে।

রিচার্ড গ্রেনেল

রিচার্ড গ্রেনেল জার্মানিতে ট্রাম্প প্রশাসনের রাষ্ট্রদূত, বলকান অঞ্চলে বিশেষ দূত এবং জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

সুইং স্টেট নেভাদায় ২০২০ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরাজয়ের পর সেই ফলাফল পাল্টে ফেলার যে প্রচেষ্টা করা হয়েছিল, সেই পদক্ষেপের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন মি. গ্রেনেল।

তার আনুগত্যকে প্রশংসা করেছেন মি. ট্রাম্প এবং রিচার্ড গ্রেনেলকে “আমার দূত” হিসাবে বর্ণনা করতেও শোনা গিয়েছে।

গত সেপ্টেম্বরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে মি. ট্রাম্পের ব্যক্তিগত বৈঠকের সময় উপস্থিত ছিলেন তিনি।

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রায়শই দাবি করতে শোনা গিয়েছে যে তিনি দায়িত্ব গ্রহণের “২৪ ঘণ্টার মধ্যে” ইউক্রেনে যুদ্ধ শেষ করবেন। মি. গ্রেনেল পূর্ব ইউক্রেনে একটা স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পক্ষে ছিলেন। যদিও এই চিন্তাকে সমর্থন করে না কিয়েভ।

তাকে সেক্রেটারি অফ স্টেট বা জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে বলে শোনা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, এই পদের জন্য সিনেটের অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না।

মি. ট্রাম্পের প্রচার শিবিরের মুখপাত্র ছিলেন ক্যারোলিন লেভিট।

ক্যারোলিন লেভিট

ট্রাম্পের ২০২৪ সালের প্রচার শিবিরের জাতীয় প্রেস সেক্রেটারি হিসাবে দায়িত্ব পালনের আগে হোয়াইট হাউসের প্রেস অফিসে সহকারী প্রেস সেক্রেটারির ভূমিকায় দেখা গিয়েছে ক্যারোলিন লেভিটকে।

বছর ২৭ এর মিজ লেভিট মার্কিন কংগ্রেসে নির্বাচিত সর্বকনিষ্ঠ নারী হিসাবে তার নিজের স্টেট নিউ হ্যাম্পশায়ারের একটা আসনের প্রতিনিধিত্ব করার চেষ্টা করেছিলেন। তবে তিনি সাফল্য পাননি।

মিজ লেভিট হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি হতে পারেন বলেই শোনা যাচ্ছে। ক্যাবিনেটের অন্যান্য সমস্ত পদের চেয়ে এই ভূমিকা সবচেয়ে জনমুখী পদ বলে মনে করা হয়।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে টম হোমানকে উল্লেখযোগ্য ভূমিকায় দেখা যেতে পারে।

টম হোমান

টম হোমান প্রথম ট্রাম্প প্রশাসনের সময় ইউএস ইমিগ্রেশনস অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধের উপায় হিসাবে অভিবাসী শিশুদের তাদের বাবা-মায়ের কাছ থেকে আলাদা করার নীতির প্রবক্তা ছিলেন তিনি।

সেই সময় তার মন্তব্য- যে সকল রাজনীতিবিদরা ‘স্যাঞ্চুইয়ারি সিটি’ (যে সমস্ত অঞ্চল অভিবাসন সংক্রান্ত আইন প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার বিষয়কে সীমিত করে বা অস্বীকার করে) নীতিকে সমর্থন করেন তাদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ আনা উচিত। পরে ২০১৮ সালে মি. ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের মাঝামাঝি সময়ে তিনি ‘আইস’ থেকে পদত্যাগ করেন।

এরপর থেকে তিনি ট্রাম্পের গণ অভিবাসী নির্বাসন পরিকল্পনা প্রণয়নের প্রধান নেতৃত্বে রয়েছেন। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের প্রধান হওয়ার সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তার কথা ভাবা হচ্ছে বলেও শোনা গিয়েছে।

গত মাসে বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মি. হোমান এই নির্বাসন পরিকল্পনার বিষয়ে কথা বলেছিলেন। তিনি ব্যাখ্যা করেছিলেন, “এমনটা নয় যে প্রতিবেশী অঞ্চল থেকে গণহারে ধরপাকড় করা হবে।”

“তাদের নির্দিষ্ট করার পর গ্রেফতার করা হবে। তদন্ত প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে আমরা জানতে পারব কাকে গ্রেফতার করতে যাওয়া হচ্ছে এবং তাদের কোথায় খুঁজে পাওয়া যেতে পারে।”

বিবিসি নিউজ

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024