ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়
মায়ারা সাধারণত ধাতুর তৈরি কোনো যন্ত্র দিয়ে জমি চাষ করত না। সেক্ষেত্রে যতটা সম্ভব হাত এবং নিজস্ব কায়দায় তৈরি যন্ত্র ব্যবহার করতে পছন্দ করত। অনেক সময় হাত দিয়ে চাষ করতে প্রায় সাত বছর সময় লাগত। চাষের এই বিশেষ পদ্ধতি গ্রহণ করার জন্য জমি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হত। একসঙ্গে অনেক পরিমাণ ফসল ঘরে তোলাও সম্ভব হত না।
পুরাতাত্ত্বিকদের অভিমত অনুসরণ করে বলা যায় একটি পরিবারের সারা বছরের ফসল তুলতে অনেক বেশি জমির প্রয়োজন হত। একটি হিসেব থেকে জানা যায় প্রতি পাঁচ জনের পরিবারের জন্য কমবেশি সত্তর একর জমির প্রয়োজন হত। পোড়ানো পদ্ধতিতে কৃষিকাজকে মায়া-ভাষায় বলা হত মিলপা (Milpa) এবং মিলগা চাষের কাজে বেশি সংখ্যক কৃষি-শ্রমিকের দরকার হত।
গুয়াতেমালার বিভিন্ন অঞ্চলে আমেরিকান মানুষ এই ধরনের কৃষিকাজ করেন। এবং বছরে প্রায় ১৯০ দিন এই কৃষিকাজ চলে। এছাড়া বছরের প্রায় ১৭০ দিন তারা অন্যান্য পেশায় নিযুক্ত থাকে। এই বাকি ১৭০ দিনের নানাবিধ কাজের মধ্যে আছে শহর বা ছোট নগরাঞ্চলে ছোট ছোট শ্রমের কাজ। নগরে নানা ধরনের মেরামতি, গৃহ সম্প্রসারণ, গৃহ নির্মাণ ইত্যাদি দিন মজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করত গ্রাম থেকে আসা সাধারণ মানুষ।
এই পেশা-জীবিকার বৈচিত্র্য গড়ে উঠত নানা ধরনের হাতের কাজ, চারুকলা, হস্তশিল্প দিয়ে। এছাড়া নগর এবং ছোট শহরাঞ্চলে পুরোহিত সম্প্রদায়ের নানাবিধ কাজে সাহায্য করার জন্য থাকত কৃষি-শ্রমিক সম্প্রদায়ের মানুষ।
(চলবে)
Leave a Reply