কৃষি ও কৃষক
চতুর্থ অধ্যায়
খুলনা বাখরগঞ্জ ২৪ পরগণা জেলার সুন্দরবনাংশে রায়তচাষির সংখ্যা খুবই সামান্য- বর্গাচাষির নিরঙ্কুশ প্রাধান্য ছিল। এসব জেলার উত্তরাংশেরায়তচাষিদের প্রাধান্য থাকায় গড় হিসাবে এই শতকরা হিসাব লক্ষ করা যাচ্ছে। সুন্দরবনের বিভিন্ন জেলায় বেশ কয়েকটি মহকুমাতে বর্গাচাষিদের প্রাধান্য ছিল অত্যন্ত বেশি এবং পরবর্তীকালে তেভাগা আন্দোলনের ঝটিকাকেন্দ্র হিসাবে এই এলাকাগুলি চিহ্নিত হয়।
ফ্লাউড কমিশন সারা বাংলাদেশের ভূমির ক্ষেত্রে মালিকানার যে তথ্য তুলে ধরেছেন তাতে দেখা যাচ্ছে সমগ্র বাংলাদেশে ২ একরের কম জমির চাষির সংখ্যা মোট চাষীর ৪৬০% ২-৩ একরের সংখ্যা ১১.২৯ ৩-৪ একরের মধ্যে ৯.৪% ৪-৫ একরের মধ্যে ৮% ৫-১০ একরের মধ্যে ১৭% আর দশ একরের বেশি জমির অধিকারী পরিবারের সংখ্যা ৮.৪৬ (১০) এই তথ্য থেকে ছোট চাষি ভাগচাষির বিপুল সংখ্যা আমাদের সামনে ধরা পড়ে। সুন্দরবনের জেলাগুলিতে এই সংখ্যা আরো বেশি- তা অনুমান করতে অসুবিধা হয় না।
কৃষি উৎপাদনে সব চাইতে বড় বাধা এই বর্গাপ্রথা তা আমাদের অর্থনীতিবিদদের নজরে তেমন-ভাবে ধরা পড়েনি। জোতদারের কৃষি উৎপাদনে কোন ভূমিকা ছিল না। জমির উৎপাদন বৃদ্ধিতে সে কোন সাহায্য করে না- জমিতে যে ফসল হয় তার অর্ধেক সে নিয়ে নেয় অপরদিকে চাষিরা ভীষণ গরিব যার ফলে উন্নত কৃষি উৎপাদন সে গ্রহণ করতে পারে না এবং চাষের ব্যাপারে সে মনোযোগী হতে পারে না। সারা বছর পরিশ্রম করে বর্গাজমি থেকে সে যে অর্ধেক ফসল পায় তাতে তার উৎপাদন ব্যয় সঙ্কুলান হয় না।
এর উপর প্রতিনিয়ত জমি থেকে উচ্ছেদ হবার ভয় থাকায় জমির উন্নতির ব্যাপারে তার কোন ভূমিকা থাকে না। ১৯১৭ খ্রীষ্টাব্দে সুন্দরবনের জনৈক সেটেলমেন্ট অফিসার কৃষিউৎপাদনে বর্গাপ্রথার ভূমিকা প্রসঙ্গে জানিয়েছিলেন From an economic point of view Bhagrent is hopelessly bad and is always associated with inferior cultivation. The petty Mahajans who are the greatest devotees of this system and they prefer to have a tenant whom relying on local opinion and indefiance of the in tentions of Govt, they can oust at any moment. A Mitra Census of India 1951.
Leave a Reply