সারাক্ষণ ডেস্ক
নেত্রকোণায় ঐতিহাসিক টংক আন্দোলন ও হাজং বিদ্রোহের অকুতোভয় সৈনিক ছিলেন কুমুদিনী হাজং। তাকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় শেষ বিদায় জানিয়েছেন স্বজন, আদর্শিক সহযোদ্ধাসহ সর্বস্তরের মানুষ। কুমুদিনী হাজংয়ের জীবন, কর্ম ও ইতিহাস সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন তাঁর আদর্শিক সহযোদ্ধারা।
ব্রিটিশ শাসনামলে ঐতিহাসিক টংক আন্দোলন ও হাজং বিদ্রোহের নেতার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে এএলআরডি ও তার সহযোগী সংস্থাসমূহের নেটওয়ার্ক।
নেত্রকোণায় গারো পাহাড়ের পাদদেশ দুর্গাপুরের কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বহেরাতলী গ্রামের বাড়িতে গতকাল শনিবার দুপুরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন টংক আন্দোলন ও হাজং বিদ্রোহের মুখ কুমুদিনী হাজং। মৃত্যুর আগে জীবনের ৯২টি বছর অতিক্রম করেছেন আজীবন সাম্য সমাজের স্বপ্ন দেখা এই মানুষটি।
আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুমুদিনী হাজংয়ের মরদেহের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্নে তার বাড়ি থেকে নেওয়া হয় সোমেশ্বরী নদীপাড়ে গ্রামের শ্মশানঘাটে।
বৃহত্তর ময়মনসিংহের সুসং জমিদারি এলাকায় টংক প্রথার প্রচলন ছিল। ফসল হোক বা না হোক, নির্দিষ্ট পরিমাণ ধান খাজনা হিসেবে জমিদারকে দিতে হবে। ১৯৩৭ সালে শোষিত কৃষকেরা এ প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন, যা টংক আন্দোলন নামে পরিচিত।
কমিউনিস্ট নেতা কমরেড মনি সিংহের নেতৃত্বে টংক আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হয় দুর্গাপুরের হাজং সম্প্রদায়ের মানুষেরা। এরই অংশ হিসেবে কুমুদিনী হাজংয়ের স্বামী লংকেশ্বর হাজং অন্দোলনে জড়িত হন। তৎকালীন পুলিশ ১৯৪৬ সালে ৩১ জানুয়ারি বগেরাতলী গ্রামে হানা দিয়ে কুমুদিনী হাজংকে উঠিয়ে নিয়ে যেতে চাইলে রাশিমনি হাজংয়ের নেতৃত্বে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়।
এসময় কুমুদিনী হাজংকে পুলিশ নিতে পারেনি। তবে সেখানে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান রাশিমনি হাজং ও সুরেন্দ্র হাজং। পুলিশেরও দুজন সদস্য নিহত হয়। সেই ঘটনার পর কুমুদিনী হাজংকে ঘিরে জ্বলে উঠে টংক আন্দোলন।
Leave a Reply