সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “প্রশাসনে অস্থিরতা, চুক্তিতে নিয়োগ আগের ধারায়”
অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ তিন মাস পেরিয়ে গেলেও প্রশাসনে শৃঙ্খলা ও গতি আসেনি। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে চুক্তিতে থাকা কর্মকর্তাদের নিয়োগ বাতিল করলেও বর্তমান সরকার নিজেরাই একের পর এক চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে চলেছে।
এক মাসের বেশি সময় ধরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব পদ খালি। আরও তিনটি মন্ত্রণালয়ের সচিব পদ শূন্য। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রশাসনে বড় কোনো সিদ্ধান্ত হচ্ছে না। যা হচ্ছে নিয়মিত (রুটিন) কাজ। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে ঘোষণা দিয়েছিল, চুক্তিতে থাকা সব কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিল করা হবে। গত তিন মাসে ১০১ কর্মকর্তার চুক্তি বাতিল হয়েছে; যাঁরা শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে নিয়োগ পেয়েছিলেন। তবে একই সময়ে ৬৫ জন কর্মকর্তাকে চুক্তিতে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ ১২ মন্ত্রণালয়ে দুই বছর মেয়াদে সচিব নিয়োগ দেওয়া হয়েছে চুক্তিভিত্তিক। এ ছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন পদে, কৃষি, বিটিআরসি, সিটি করপোরেশনেও চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ সময় সহকারী সচিব থেকে জ্যেষ্ঠ সচিব পর্যন্ত মোট ৮০ জন কর্মকর্তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে।
দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম “পঞ্চগড়ে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড “
হিমালয়ের কন্যা ও শীতের জেলা নামে খ্যাত দেশের উত্তরের সীমান্ত জেলা পঞ্চগড়ে শুরু হয়েছে শীতের আমেজ। রোববার (১৭ নভেম্বর) সকাল ৬টার দিকে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস।
গতকাল শনিবার তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হলেও তার আগের দিন শুক্রবার রেকর্ড হয়েছিল ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকালে আবহাওয়ার তথ্যটি জানিয়েছেন তেঁতুলিয়ার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ।
সকালে সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভোরের সূর্য উঠলেও কুয়াশার চাদরে ঘেরা প্রকৃতি। শিশির মাড়িয়ে মাঠে যেতে দেখা যায় চাষিদের। শীত ঘিরে বাংলার ঘরে ঘরে প্রস্তুতি নিচ্ছে নবান্নের আয়োজন।
স্থানীয়রা জানান, ধীরে ধীরে বাড়ছে শীতের মাত্রা। সন্ধ্যার পর থেকেই উত্তরীয় হিমেল হাওয়ায় শীতের পরশ অনুভূত হচ্ছে। মাঝরাতের পর ভোর পর্যন্ত গায়ে কাঁথা নিতে হচ্ছে।
বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “জনবিমুখ নীতি থেকে সরে জনমুখী অর্থনীতির দিকে যাত্রা শুরু হয়নি”
রাষ্ট্রের নাগরিকদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, সুরক্ষা, মৌলিক সেবার নিশ্চয়তা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সর্বোপরি বৈষম্য প্রশমনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রণীত বাজেটগুলো পরিচিত জনকল্যাণমুখী বাজেট হিসেবে। বাংলাদেশের মানুষ জনকল্যাণমুখী বাজেট থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে বহু বছর ধরে। এখানে বাজেট মানেই উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের নামে জনগণের অর্থের যথেচ্ছ তছরুপ। সর্বশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটটিও এর ব্যতিক্রম নয়। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের ফলে গণবিরোধী এ বাজেট কাঠামো পরিবর্তনের সুযোগ ছিল। যদিও অভ্যুত্থানের ১০০ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা সরকারের দেয়া বাজেটই বহাল রয়েছে। একইভাবে বহাল রয়েছে বিগত সরকারের গৃহীত রাজস্ব ও মুদ্রানীতিও। কিছু জায়গায় ব্যক্তির পরিবর্তন হলেও অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে দেশের অর্থনীতির দর্শন ও ব্যবস্থাপনায় কোনো পরিবর্তন হতে দেখা যায়নি। বরং বৈষম্য বিলোপের ডাক দিয়ে একটি অভ্যুত্থান সফল হলেও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় তা দূর করার কোনো উদ্যোগ এখনো নেয়া হয়নি।
শেখ হাসিনার দেড় দশকের শাসনামলে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ১৮৮ শতাংশ। ওয়াসার পানির দাম বেড়েছে ২০০ শতাংশের কাছাকাছি। অস্বাভাবিক হারে বাড়ানো হয়েছে গ্যাস ও জ্বালানি তেলের দামও। জনগণের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলা এসব গণদ্রব্যের দাম কমানোর সুযোগ ছিল অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে। যদিও বিদ্যুৎ, গ্যাস, জ্বালানি তেল ও পানির মতো গণদ্রব্যের মূল্য নির্ধারণ চলছে আগের পদ্ধতিতেই।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “ড. ইউনূসের উচিত নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করা”
অনেক সময় বিপ্লব খারাপভাবে শেষ হয়। আগস্টে ছাত্রদের নেতৃত্বে ক্ষমতা থেকে উৎখাত হয়েছেন বাংলাদেশের স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা। তারপর দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়েছেন ক্ষুদ্রঋণের প্রবর্তকা ও শান্তিতে নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পুলিশকে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি ও হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তিনি ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় এসব পুলিশকে ত্যাগ করে যান। তারপর বেশির ভাগ পুলিশই তাদের দায়িত্বে ফিরেছেন। বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনীতি, রাষ্ট্রব্যবস্থা, নির্বাচন ইত্যাদি ইস্যুতে এক প্রতিবেদনে এসব কথা লিখেছে লন্ডনের বিখ্যাত দ্য ইকোনমিস্ট ম্যাগাজিন। সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অর্থনীতি এখন আর অবাধে পতনের মুখে নেই। জাতীয় প্রবৃদ্ধির শতকরা ৫ ভাগই রেমিট্যান্স। তা স্থিতিশীল হয়েছে। তা সত্ত্বেও সামনে বিশাল চ্যালেঞ্জ। এসব চ্যালেঞ্জ কীভাবে মোকাবিলা করা হবে তা শুধু ১৭ কোটি ৩০ লাখ জনসংখ্যার মানুষের ওপরই প্রভাব ফেলবে এমন নয়। একই সঙ্গে তার প্রতিবেশীরা প্রভাবিত হবে। ভারত, চীন এবং পশ্চিমাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতায়ও এর প্রভাব পড়বে। অদ্ভুতভাবে ড. ইউনূস এমন একটি সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অনুমোদন করে এমন একটি সাংবিধানিক ধারাকে ২০১১ সালে বাতিল করে দেন শেখ হাসিনা। সুতরাং ড. ইউনূসের বৈধতা নির্ভর করে তার নৈতিক কর্তৃত্ব ও জনপ্রিয়তার ওপর। এর ভিত্তি ঝুঁকিপূর্ণ। কোনো ভোটে এর সমর্থন আদায় করা হয়নি। জনগণের সদিচ্ছা ‘কুল’ হতে পারে। অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকা সত্ত্বেও অক্টোবরে বছর থেকে বছরের হিসাবে খাদ্যে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি হয়েছে শতকরা প্রায় ১৩ ভাগ। বাংলাদেশে বিদ্যুতের শতকরা প্রায় ১০ ভাগ সরবরাহ দেয় ভারতীয় প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপ। তারা বকেয়া পাওনার কথা উল্লেখ করে সরবরাহ কমিয়ে দেয়া শুরু করেছে।
ড. ইউনূস অস্থির। সরকার পরিচালনার অভিজ্ঞতা নেই তার। দুই শক্তির চাপে তিনি সংকুচিত হয়েছেন। যেসব ছাত্র আন্দোলনকারী তাকে ক্ষমতায় আসার পালে হাওয়া দিয়েছে তারাই তার কাছে ক্রমবর্ধমান আকারে চরম সব দাবি তুলে ধরছেন। এর মধ্যে শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি আছে। মানবতার বিরুদ্ধে যে অপরাধ করেছেন তার বিচার করার জন্য ভারতের কাছ শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইছে। বাংলাদেশে অন্য শক্তি হলো আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। তারা ড. ইউনূসের কাছে দ্রুত নির্বাচন দাবি করছে, সম্ভবত যতটা সম্ভব জুনে। তিনি সেটা না দেয়া পর্যন্ত তারা গণআন্দোলন করতে পারে।
Leave a Reply