ব্রায়ান হাইয়াট
এডি ভ্যান হ্যালেনের মৃত্যুর পরেও, তার সাথে অ্যালেক্স ভ্যান হ্যালেনের সম্পর্ক ভাঙেনি। দীর্ঘ চার বছর পর, এডিকে হারানোর পর প্রথমবারের মতো, অ্যালেক্স তার অনুভূতির কথা জানালেন।
এডির মৃত্যুর পরে, অ্যালেক্স সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েন। তার মেরুদণ্ডের একটি এমআরআই ছবিতে স্পষ্টভাবে দেখা যায় এক বিরাট শূন্যস্থান, যা তার মানসিক এবং শারীরিক ক্ষতির প্রতীক। ২০২০ সালের অক্টোবরে ৬৫ বছর বয়সে এডি ভ্যান হ্যালেনের মৃত্যু ঘটে, যিনি গিটার সঙ্গীতের এক কিংবদন্তি ছিলেন। তার এই ক্ষতি অ্যালেক্সের জীবনে এক বিশাল শূন্যতা সৃষ্টি করে।
অ্যালেক্স বলেন, “আমি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিলাম। চিৎকার করতাম, চেঁচাতাম, নিজেকে সামলাতে পারছিলাম না।”
শোক ও স্মৃতির মাঝে দিনযাপন
অ্যালেক্স এখন ৭১ বছর বয়সী। ক্যালিফোর্নিয়ার ভেনচুরা কাউন্টিতে তার একটি লেবুর খামার এবং ২০টি ঘোড়ার একটি খামারে তিনি সময় কাটান। তিনি ব্রাদার্স নামে একটি বই প্রকাশ করতে যাচ্ছেন, যেখানে এডির সাথে তার জীবনের গল্প তুলে ধরা হয়েছে। এই বই লেখার মাধ্যমে তিনি তার শোক সামলানোর চেষ্টা করেছেন।
মিউজিকের প্রতি অবিচল ভালোবাসা
গত কয়েক বছর ধরে মেরুদণ্ডের চোটের কারণে অ্যালেক্স ড্রাম বাজাতে পারছিলেন না। কিন্তু সম্প্রতি তিনি আবার অনুশীলন শুরু করেছেন। তার ভাই এডির ক্যানসারের চিকিৎসার সময় তার সঙ্গে থাকা চিকিৎসকরা অ্যালেক্সকে নতুন ধরনের স্টেম সেল থেরাপি দিয়েছেন, যার ফলে তার অবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।
অ্যালেক্স বলেন, “ছয় মাস আগে আপনি যদি আমাকে দেখতেন, আপনি বলতেন, ‘মানুষটা ভীষণ খারাপ অবস্থায় আছে।'”
ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসা এবং বিতর্কিত মুহূর্ত
অ্যালেক্স এবং এডির মধ্যে সম্পর্ক গভীর এবং জটিল ছিল। এডির মৃত্যুর পরে, অ্যালেক্স ডেভিড লি রথের সাথে যোগাযোগ করেন, কিন্তু এডির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো নিয়ে তাদের মধ্যে তীব্র বিতর্ক হয়। অ্যালেক্সের মতে, রথ এডির প্রতি সম্মান জানাতে অস্বীকার করেছিলেন, যা তাদের বন্ধুত্বে ফাটল সৃষ্টি করে।
সঙ্গীত এবং জীবন
অ্যালেক্স ভ্যান হ্যালেনের মতে, এডি তার মিউজিক্যাল প্রতিভার জন্য অনেক মূল্য চুকিয়েছেন। তিনি বলেন, “তার প্রতিভা তাকে তার জীবনে সবচেয়ে বড় অভিশাপ দিয়েছে।” এডি তার শৈশব এবং জীবনের বিভিন্ন সমস্যার কারণে মাদক এবং অ্যালকোহলে আসক্ত হয়ে পড়েন। অ্যালেক্স বিশ্বাস করেন, এই আসক্তি এডির ক্যানসারকে আরও তীব্র করেছিল।
ভাইয়ের শেষ দিনগুলো
এডির শেষ দিনগুলোতে, অ্যালেক্স তাকে কখনো বলেননি যে তার দিনগুলো সীমিত। তিনি বলেন, “আমি কীভাবে বলব, ‘এড, তুমি হয়তো আর বাঁচবে না’? আমি প্রতিদিন তার জন্য আশা করতাম এবং ভাবতাম যে আগামীকাল আরও ভালো হবে।”
এডি ভ্যান হ্যালেনের মৃত্যু হয় স্ট্রোকের কারণে, যা ক্যানসার মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ার ফলে হয়েছিল। অ্যালেক্সের মতে, এডি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সঙ্গীত সৃষ্টি করে গেছেন।
উপসংহার
অ্যালেক্স বিশ্বাস করেন যে তার ভাই এখন শান্তিতে আছেন। তিনি বলেন, “এড এখন ভালো আছে। আমি জানি, সে তার পথে এগিয়ে গেছে।”
এই সাক্ষাৎকারটি শুধু ভ্যান হ্যালেনের উত্তরাধিকারের নয়, বরং দুই ভাইয়ের গভীর বন্ধুত্ব এবং শোকের কাহিনি। এটি একটি বন্ধনের গল্প যা মৃত্যুর পরেও অবিচ্ছেদ্য রয়ে গেছে।
Leave a Reply