শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৬ পূর্বাহ্ন

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২১৬)

  • Update Time : রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ১১.০০ পিএম

শ্রী নিখিলনাথ রায়

তাঁহাদের অনুসন্ধানে সমস্ত বিষয় প্রকাশিত হইলে, এই অত্যাচার নিবারণের জন্য, ইংলণ্ডের তৎকালীন মন্ত্রী লর্ড নর্থের মন্ত্রিত্ব- কালে রাজ সংক্রান্ত নিয়ামক বিধি (Regulating Act) বিধিবদ্ধ হইয়া, বাঙ্গলার গব রকে ভারতবর্ষের গবর্ণর জেনারেল করা হয় ও তাঁহার সাহায্যের জন্য চারি জন সদস্য নিযুক্ত হন। তাঁহাদের অত্যাচার নিবা- রণ ও দেশের সুবিচারের জন্য সুপ্রীমকোর্ট স্থাপিত হইয়া, তাহাতে এক জন প্রধান বিচারপতি (Chief Justice) ও অপর তিন জন বিচারক নিযুক্ত হন। গবর্ণর জেনারেল, ও চারিজন সভ্যের মধ্যে বারওয়েল সাহেব পূর্ব্ব হইতেই এখানে ছিলেন।

অন্য তিন জন, -ক্লেভারিং, মন্সন ও ফ্রান্সিস এবং সুপ্রীমকোর্টের প্রধান জজ ইলাইজা ইম্পে, এবং চেম্বার্স’, হাইড ও লেমষ্টেয়ার নামে অপর জজত্রয় ১৭৭৪ খৃঃ অব্দের এপ্রেল মাসে ইংলণ্ড হইতে যাত্রা করিয়া ৯ শে অক্টোবর কলিকাতার চাঁদপাল ঘাটে আসিয়া উপস্থিত হন। তোপধ্বনি প্রভৃতিতে তাঁহাদিগকে যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন করা হয়। এই নবাগতদিগের মধ্যে সদস্যগণের সহিত গবর্ণরের বিরোধ ও বিচারকদিগের সহিত তাঁহার বন্ধুত্ব স্থাপিত হইল। ইম্পে সাহেব হেষ্টিংস সাহেবের সহপাঠী-বন্ধু ছিলেন; এই জন্য বিচারক- দিগের সহিত তাঁহার বন্ধুত্ব সংস্থাপিত হইয়াছিল।

এইরূপ পক্ষাপক্ষে বাঙ্গলায় মহান্ অনর্থ উপস্থিত হয় এবং তাহা কোম্পানীর রাজত্বের গাঢ় কালিমা বলিয়া উল্লিখিত হইয়া থাকে। নবাগত সদস্যত্রয় দেশের শাসনকার্য্যের অনুসন্ধান করিতে আরম্ভ করিয়া, ক্রমাগত হেষ্টিংস সাহেবের উৎকোচগ্রহণ ও অত্যাচারের প্রমাণ পাইতে লাগিলেন। এই সময়ে নন্দকুমারের সহিত তাঁহাদের পরিচয় হওয়ার, তাঁহারা তাঁহাকে হেষ্টিংস সাহেবের সমস্ত দোষের তালিকা প্রদান করিতে অনুরোধ করেন। তজ্জন্ত তিনি হেষ্টিংসের দোষ সংপ্রমাণ করিতে আরম্ভ করিলেন।

সেই সময়ে বর্দ্ধমানের মৃত মহারাজ তিলক- চাঁদের পত্নী হেষ্টিংসের অত্যাচারের জন্য কাউন্সিলে অভিযোগ উপস্থিত করিয়াছিলেন। তাহার পর, নন্দকুমার প্রকান্তভাবে হেষ্টিংসের বিরুদ্ধে এক আবেদন পত্র প্রদান করেন। অব্দের ৮ই মার্চ তারিখে লিখিত হয়। উক্ত পত্র উপস্থাপিত করিয়াছিলেন। প্রবন্ধে তাহার আনুপূর্ব্বিক উল্লেখ তাহার মর্ম্ম প্রদান করিতেছি। উক্ত আবেদনপত্র ১৭৭৫ ১১ই তারিখে কাউন্সিলে ফ্রান্সিস পত্রখানি অত্যন্ত দীর্ঘ; বর্তমান করা দুঃসাধ্য। আমরা সংক্ষেপে এই সময়ে নন্দকুমারের পরম শত্রু বর্দ্ধমানের রেসিডেন্ট গ্রেহাম সাহে- বের সহিত হেষ্টিংসের পরামর্শ চলিতেছিল।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024