সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “টিসিবির পণ্য: ক্রেতার সারি দীর্ঘ, ট্রাকে পণ্য কম”
কম দামে চাল, ডাল, তেল ও আলু বিক্রি হচ্ছে—এমন খবর শুনে গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে টিসিবি ভবনের সামনে আসেন গৃহকর্মী সীমা আক্তার। সেখানে ট্রাকে করে সাশ্রয়ী দামে পণ্য বিক্রি করছিল সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।
প্রায় তিন ঘণ্টা সারিতে দাঁড়িয়ে পণ্য কেনার সুযোগ পান সীমা আক্তার। এসব পণ্য নিয়ে ফেরার পথে তিনি বলেন, ‘কষ্ট হইলেও অনেক টাকা ছাড়ে জিনিসগুলো কিনতাম পারছি।’ তবে টিসিবির ট্রাকের পেছনে সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা অনেকে শেষ পর্যন্ত পণ্য কেনার সুযোগ পাননি।
দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম “যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টির নেতাদের বাংলাদেশ সফরের আহ্বান ড. ইউনূসের”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টির শীর্ষ নেতাদের বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রচেষ্টা প্রত্যক্ষ করতে ঢাকা সফরের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (২০ নভেম্বর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সাক্ষাৎ করতে গেলে এ আহ্বান জানান তিনি।
রিপাবলিকান পার্টির থিংক ট্যাংক আইআরআই বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রের উৎকর্ষ নিয়ে কাজ করে। ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক প্রধান স্টিভ সিমার নেতৃত্বে কর্মকর্তারা তাদের চলমান সফরে রাজনীতিবিদ, ছাত্র নেতৃত্ব এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করছেন।
সিমা বলেন, আইআরআই’র অগ্রাধিকার হলো অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগকে সমর্থন করা, বিশেষ করে যখন দেশের মূল প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঠিক করার জন্য ব্যাপকভাবে দাবি উঠেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে আসল উদ্বেগ ছিল দেশের সত্যিকারের গতিপথ নিয়ে। এখানে সংস্কার সফল দেখতে চায়।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তার সরকার গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করে নির্বাচন করবে। নির্বাচনের জন্য ট্রেন ইতোমধ্যেই প্রথম স্টেশন ছেড়েছে এবং একটি নতুন নির্বাচন কমিশন সাধারণ নির্বাচনের জন্য মাঠ প্রস্তুত করবে।
তিনি বলেন, নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বাংলাদেশ ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায়।
ড. ইউনূস বলেন, ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানের ফলে যে অভূতপূর্ব পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে তা প্রত্যক্ষ করতে তিনি শীর্ষ রিপাবলিকান সিনেটর এবং কংগ্রেস সদস্যদের বাংলাদেশ সফরে আমন্ত্রণ জানাবেন।
বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সংশোধন অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন”
‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৪’ অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। গতকাল সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত পরিষদের সভায় খসড়াটি নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন পায়। রাষ্ট্রপতি সই করার পর এটি অধ্যাদেশ আকারে জারি হবে।
খসড়া অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, বিদেশে বসে কেউ মানবতাবিরোধী অপরাধ করলেও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তা আমলে নিতে পারবেন। তবে রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করার যে ধারা ট্রাইব্যুনালের জন্য রাখা হয়েছিল, তা বাতিল করে দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
পরিষদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নেয়ার পর গতকালই প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে অফিস করেন ড. ইউনূস।
সভা শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘ট্রাইব্যুনাল চাইলে শুনানির অডিও ও ভিডিও রেকর্ড রাখতে পারবেন। তবে গণমাধ্যমের জন্য সম্প্রচারের কোনো ব্যবস্থা থাকবে না। বাংলাদেশের বাইরে অপরাধ করলে ট্রাইব্যুনালে আমলে নেয়া যাবে। এতদিন ট্রাইব্যুনাল শুধু বাংলাদেশের ভেতরে সংঘটিত অপরাধকে আমলে নিতে পারতেন।’
মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ট্রাইব্যুনাল রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করতে পারবেন কিনা এমন প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বিষয়টা নিয়ে আইন উপদেষ্টা আপনাদের সঙ্গে কথা বলবেন।’
পরে সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনের সংশোধনী উপদেষ্টা পরিষদের সভায় উত্থাপন করা হয়েছিল, এটা গৃহীত হয়েছে। আমরা যে সংশোধনী করেছিলাম, সেখানে মানবতাবিরোধী অপরাধে সংগঠনকে শাস্তি দেয়ার বিধান ছিল। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বলা হয়েছে, আমরা এ বিচারকে অন্য কোনো বিষয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে চাই না। রাজনৈতিক দল বা কোনো সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্ন এলে এ আইনকে অযথাই প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। আমরা সে সুযোগ দিতে চাই না। আমরা একদম ডিসেন্ট ওয়েতে, ফেয়ার ওয়েতে বিচারটা করতে চাই। এজন্য এ প্রভিশনটা বাতিল করা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “দুদকে অদৃশ্য ভূত, ঝুলে থাকে মামলা-অনুসন্ধান”
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এখন নেতৃত্বশূন্য। চেয়ারম্যান নেই, দুই কমিশনারের দপ্তরের চেয়ারও ফাঁকা। তবে পদগুলো পূর্ণ করতে কাজ চলমান। শিগগিরই চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের নিয়োগ দেয়া হবে। কমিশনশূন্য হওয়ায় দুদকের কর্মকর্তারা অনেকেই এখন তেমন কাজ করছেন না। সূত্র জানায়, সংস্থাটিতে এ মুহূর্তে কয়েক হাজার অভিযোগ অনুসন্ধান ও মামলা তদন্তের কাজ কর্মকর্তাদের হাতে রয়েছে। যা বছরের পর বছর চলতেই থাকে। সূত্র বলছে, অনেক কর্মকর্তা সঠিকভাবে কাজগুলো শেষ না করার কারণে এসব অনুসন্ধান-তদন্ত কার্যক্রম অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়ে যায়।
একাধিক কর্মকর্তা বলছেন, নতুন কমিশনকে দায়িত্ব নিয়েই পড়তে হবে পুরনো অনুসন্ধান ও মামলার চক্রে। ফলে নতুন করে অনুমোদন হওয়া অনুসন্ধানগুলোর ওপরও পড়বে নেতিবাচক প্রভাব।
দুদকের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন কমিশন না থাকায় অনেক কাজই থমকে আছে। তাদের দাবি, কাজ না থাকায় অনেকটা ঢিলেঢালাভাবে অফিস করছেন কেউ কেউ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা মানবজমিনকে বলেন, এখন অনেক কর্মকর্তাই অফিসে আসছেন ঠিকই। কিন্তু কাজ না থাকায় খোশগল্পে দিন পার করেন।
অবশ্য দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, কমিশনের কয়েকটি সিদ্ধান্ত জনিত কার্যক্রম ছাড়া সব স্বাভাবিক থাকার কথা। কারণ দুদকের এমনো অনুসন্ধান রয়েছে যা বছরের পর বছর কেটে গেলেও শেষ হয়নি। এ ছাড়া অনেক তদন্তও আছে যেগুলো নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও চার্জশিট দেয়া বাকি রয়ে গেছে। এসব কাজ প্রায় সব কর্মকর্তার হাতেই রয়েছে। এই যে একটা সময় যাচ্ছে, নতুন অনুসন্ধানের চাপ নেই, তদন্তের চাপ নেই এখন তো করতেই পারে।
দুদক সূত্র বলছে, দুদকের পুরনো এসব অনুসন্ধান-তদন্ত সময় মতো শেষ না হোক তা অনেক কর্মকর্তাই আগ্রহ প্রকাশ করেন না। এতে নতুন একটি কমিশন আসলে তাদের ঘাড়েই পুরনো অনুসন্ধানের চাপ পড়ে।
সূত্রমতে, এ মুহূর্তে দুদকে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিম্ন আদালতে মোট ৩ হাজার ৩৭৪টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তার মধ্যে ২ হাজার ৯৪৪টি মামলার বিচার কার্যক্রম বর্তমানে চলমান আছে। হাইকোর্টের আদেশে ৪৩০টি মামলার বিচার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। বর্তমানে উচ্চ আদালতের ৭৪৬টি রিট, ৯১৪টি ফৌজদারি বিধির মামলা, ১ হাজার ২৪৫টি ক্রিমিনাল আপিল মামলা ও ৭০৭টি ফৌজদারি রিভিশন মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে।
২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে দুদকে বর্তমানে ৪ হাজার ৪২৮টি অভিযোগ অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। প্রতি বছর প্রায় হাজারখানেক যোগ হয়। চলতি বছরও পাঁচ শতাধিক অনুসন্ধান আমলে নেয়া হয়েছে। অথচ এসব অনুসন্ধানের জন্য নির্ধারিত সময় ৪৫ দিন দেয়া হলেও অনেক কর্মকর্তা দীর্ঘায়িত করেন। ফলে কোনো কোনো অভিযোগের অনুসন্ধান বছরও পার হয়।
বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ২০২২ সালের নিয়োগ পাওয়ার পর উপ-পরিচালক, সহকারী পরিচালক ও উপ-সহকারী পরিচালক মিলিয়ে চার শতাধিক কর্মকর্তা রয়েছেন। যাদের দায়িত্বে রয়েছে কোনো না কোনো অনুসন্ধান-তদন্ত। কিন্তু পর্যাপ্ত জনবল থাকা সত্ত্বেও সঠিক সময়ে কোনো অনুসন্ধান বা তদন্ত কার্যক্রম শেষ হয় না বলে দাবি করেছেন দুদকের উচ্চ পর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দুদকের কর্মকর্তাদের প্রত্যেকেরই মাসে একটি করে অনুসন্ধান প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু ২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য ঘেঁটে দেখা গেছে দুদক বছর জুড়ে ৪০৪টি মামলা করেছে। অর্থাৎ চার শতাধিক কর্মকর্তা গড়ে একটি করে মামলা করেছেন। এর মধ্যে একজন কর্মকর্তাই রয়েছেন যার হাত দিয়ে তিন বা তার বেশিসংখ্যক মামলা হয়েছে।
Leave a Reply