আর্কাদি গাইদার
সপ্তম পরিচ্ছেদ
‘কাল দেয় নি তো কী হয়েছে, আজ মা কিন্তু অন্যরকম বলে গেছে। যা-যা, তাড়াতাড়ি জামাজুতো পরে নে। দ্যাখ না, কী সুন্দর সকাল। দিদিমা ঠিক তোকে বনে বেড়াতে নিয়ে যাবেন। কত অ্যাবেরি ফল কুড়োতে পারবি। কেমন?’
তানিয়া বুঝল আমি ঠাট্টা করছি না। লাফ দিয়ে বিছানা ছেড়ে উঠল ও। আর আমি যখন জামাজুতো পরায় ওকে সাহায্য করছি তখন বকবক শুরু করল:
‘মা-মণি মত বদলেছে বুঝি? সত্যি, মা-মণি মত বদলালে এত ভালো লাগে! আমি বলি কি, বরিস, লিজ়কা বেড়ালটাকে সঙ্গে নিলে কেমন হয়? আচ্ছা, আচ্ছা, বেড়াল না নিতে চাস তো জুচুকাকে নিই, কী বল! ভারি মিষ্টি কুকুর, না-রে? জানিস, কাল ও না, আমার মুখটা চেটে দিয়েছে। মা-মণি কী বকুনি দিল আমায়। কুকুর মুখ চাটলে মা-মণি না ভী-ষ-ণ রাগ করে। মা-মণি যখন একদিন বাগানে শুয়ে ছিল জুচুকাটা কোত্থেকে এসেই দিল মা-মণির মুখ চেটে। আর মা-মণি ওকে লাঠিপেটা করে তাড়িয়ে দিল।’
এক লাফে বিছানা থেকে নেমেই তানিয়া ছুটল পাশের ঘরের দিকে।
‘এই বরিস, দরজাটা খুলে দে না ভাই। আমার মাথার রুমালটা ওঘরের কোণে পড়ে আছে। আমার প্র্যাম্স্টাও আছে।’
দরজা থেকে ওকে টেনে এনে বিছানায় বসিয়ে দিলুম।
‘ও-ঘরে যাওয়া চলবে না, তানিয়া। একজন অচেনা লোক ওঘরে ঘুমোচ্ছেন। কাল রাত্তিরে এসেছেন উনি। আমি তোর মাথার রুমালটা এনে দিচ্ছি, দাঁড়া।’
‘কোন্ লোক রে?’ ও বলল। ‘আগের বার যেমন এসেছিল তেমনি?’
‘হ্যাঁ, আগের বারের মতো।’
‘কাঠের পা-ওলা?’
‘না, লোহার পা-ওলা।’
‘ওহ, বরিস! আমি লোহার পা-ওলা লোক কখনও দেখি নি। দরজায় চাবির ফুটোটা দিয়ে একবার একটুখানি শুধু উকি মেরে দেখব। পা টিপে টিপে যাব, কেমন?’
Leave a Reply