নিজস্ব প্রতিনিধি
গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাসান চৌধুরীকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না। সুপ্রিম কোর্ট বারের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভেকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল।
গত ১৯ নভেম্বর সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাসান চৌধুরীকে ছয় মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। গত ২০ সেপ্টেম্বর সীমান্ত পথে পালাতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হন মেহেদী হাসান চৌধুরী। পরে তাকে জুলাই-আগস্টের হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। ৮ আগস্ট অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলের পদ থেকে পদত্যাগ করেন ব্যারিস্টার মেহেদী।
এদিকে আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে আইনি লড়াই করতে চাই। ‘সুযোগ হলে আমি শেখ হাসিনার পক্ষে দাঁড়াবো।’ বৃহস্পতিবার সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরীর জামিন স্থগিত নিয়ে সাংবাদিকের ব্রিফিংয়ের সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। ব্রিফিংয়ের সময় এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, অতীতে আপনি শেখ হাসিনা সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ডের সমালোচনা করেছেন। এখন তার পক্ষে লড়তে চাইছেন।
এটি আপনার আগের অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কি না? উত্তরে জেড আই খান পান্না বলেন, অবশ্যই সাংঘর্ষিক। কিন্তু প্রত্যেক মানুষের আইনি সুবিধা পাওয়ার অধিকার আছে। মানবিক দিক বিবেচনা করেই আমি শেখ হাসিনার পক্ষে লড়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছি। তবে আমি যেকোনো অপরাধের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ডের বিপক্ষে।
গণহারে মামলার সংখ্যা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আগে ছিল গণগ্রেফতার , এখন হচ্ছে গণমামলা। গণমামলা হলে পরে গণগ্রেফতার হবে। এটার ভিকটিম এক সময় আমিও ছিলাম। তবে অকল্পনীয়ভাবে গণমামলা চলছে। এমন এর আগে কখনো হয়নি। একই স্ক্রিপ্টে চোখ নষ্ট হয়ে গেছে, না হয় পা নষ্ট হয়ে গেছে, অথবা গুলি লাগছে একটা, কিন্তু এ জন্যে শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই অন্তর্বতী সরকারের প্রাথমিক এবং একমাত্র দায়িত্ব হচ্ছে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দেওয়া। সেই সঙ্গে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সেই সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। এ সরকারের দায়িত্ব নয় সংস্কার করা, তবে সুষ্ঠু নির্বাচন দেওয়ার দায় রয়েছে।’
Leave a Reply