সারা ক্যাম্পবেল
৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে টিকে থাকা এক বিবাহের গল্প, যেখানে প্রিন্স ফিলিপ ছিলেন রানীর প্রকাশ্য সহায়ক এবং ব্যক্তিগত জীবনে তার সবচেয়ে কাছের মানুষ।
একজন ব্যক্তিগত সচিব একবার বলেছিলেন, “প্রিন্স ফিলিপই একমাত্র ব্যক্তি যিনি রানীকে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে দেখতেন। তিনি একমাত্র যিনি এটি করতে পারতেন।”
প্রেমের ভিত্তিতে গড়া সম্পর্ক
তাদের সম্পর্ক শুরু হয়েছিল ভালোবাসা দিয়ে। তারা একে অপরকে বেছে নিয়েছিলেন। ১৯৩৯ সালে ডার্টমাউথ নেভাল কলেজে তাদের প্রথম সাক্ষাৎ তাদের জীবনের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে।
১৮ বছর বয়সী প্রিন্স ফিলিপ, গ্রিক এবং ডেনমার্কের রাজপুত্র, এবং ১৩ বছর বয়সী প্রিন্সেস এলিজাবেথের প্রথম সাক্ষাৎ ছিল একটি বিশেষ মুহূর্ত। যুদ্ধের সময় তারা চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ বজায় রাখতেন এবং এলিজাবেথ তার ঘরে ফিলিপের একটি ছবি রাখতেন।
একটি অসাধারণ রাজকীয় বিবাহ
১৯৪৭ সালে, রানীর ২১তম জন্মদিনের পর, তাদের বাগদানের ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রিন্স ফিলিপ নিজেই তাদের প্লাটিনাম এবং হীরার বাগদানের আংটির নকশা করেছিলেন।
ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে তাদের বিবাহ হয়, যেখানে ২০০০ অতিথি উপস্থিত ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে এটি একটি বিরল উদযাপনের মুহূর্ত ছিল। তাদের প্রথম সন্তান প্রিন্স চার্লস এবং পরে প্রিন্সেস অ্যানের জন্ম হয়।
একটি নতুন ভূমিকা
১৯৫২ সালে, রাজা জর্জ ষষ্ঠের অকাল মৃত্যুতে, মাত্র ২৫ বছর বয়সে রানী দায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রিন্স ফিলিপ তার নিজস্ব নৌবাহিনীর উচ্চাকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করে রানীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।
একটি সফল যুগল
প্রিন্স ফিলিপ রানীর সাথে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানগুলোতে উপস্থিত থাকতেন এবং পরিবার প্রধান হিসেবে কাজ করতেন। তাদের সম্পর্কের সফলতা ছিল তাদের ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনের ভারসাম্যে।
একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রেমকাহিনী
কোভিড-১৯ মহামারির সময়, তারা উইন্ডসর ক্যাসেলে একসাথে ছিলেন। তাদের দীর্ঘ বিবাহের শেষ দিনগুলোতে তারা একসাথে কাটিয়েছিলেন, অতীতের অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা করার অগণিত সময় ছিল।
৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে একে অপরের জীবনের একমাত্র নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি ছিলেন তারা। প্রিন্স ফিলিপের মৃত্যু রানীর জন্য গভীর এক শূন্যতা সৃষ্টি করেছে।
তাদের সম্পর্ক ছিল নীরব কিন্তু গভীর। এটি একটি চিরন্তন রাজকীয় প্রেমকাহিনী হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
Leave a Reply