সারাক্ষণ রিপোর্ট
তুহিন তার ইস্কাটনের বাসা থেকে বের হয়ে দ্রুতই চলে আসে ঢাকা মেডিকেলের আউট ডোরে। রবিবারে এত ফাঁকা রাস্তা দেখে তার মনে কোন চিন্তা আসেনি।
অন্যদিকে তেজগাঁও থেকে মোশতাক আহমেদের গাড়িতে বারিধারা অফিস যেতে সময় লাগে মাত্র নয় মিনিট। তিনি কিছুটা আশ্চর্য হয়ে যান। সপ্তাহের প্রথম দিনে রাস্তা এত ফাঁকা কেন।
মোশতাক আহমেদ তার ড্রাইভারের কাছে জানতে চাইলে সে বলে, স্যার ব্যাটারি চালিত রিকসাওয়ালাদের আন্দোলন চলছে। ঢাকায় কোন গাড়ি ঢুকতে পারছে না মনে হয়- তাই এত ফাঁকা।
তুহিন ঢাকা মেডিকেলের সামনে পৌঁছেই ফোন করে মাতুইয়ালে তার ভাই শামসুদ্দিনকে। তারা কত দূর?
শামসুদ্দিন উত্তর দেয়, “ আসার কোন উপায় নেই। বাস, অটো রিকসা কোন কিছুইই ঢুকতে পারছে না। রাস্তা বন্ধ। ব্যাটারি চালিত রিকসাওয়ালারা পথ বন্ধ করে দিয়েছে। রোগি নিয়ে তো আর পাঠাওতে আসা যাবে না। দেখি একটু দেরি করি কী হয়” ?
তুহিন উপায় না দেখে আউট ডোরের বাইরে দাঁড়িয়ে মোবাইলে ইউটিউবে ভিডিও কিলিপস দেখার চেষ্টা করে। সেখানে সে জানতে পারে, ঢাকা চট্টগ্রাম রোডের ঢাকার প্রবেশ পথ বন্ধ। গাবতলীর ভেড়িবাধের ওখান থেকে শুরু করে গাবতলী হয়ে ঢাকার সব প্রবেশ পথ সব আন্দোলনকারীরা বন্ধ করে দিয়েছে।
একটা ভিডিও ক্লিপে সে দেখে ২২ থেকে ২৪ বছরের একটি ছেলে কাঁদছে। সে এক লাখ টাকা সুদে নিয়ে ব্যাটারি চালিত রিকসা কিনেছিলো। ঘরে তার এক বছরের একটা বাচ্চা আছে। স্ত্রী আছে। তার কাছে কোন টাকা নেই। সে এখন বাড়িতে কীভাবে খাবার নিয়ে যাবে? আবার সুদের কিস্তিও তাকে দিতে হবে। সে বলে বাংলাদেশে সব কিছুতে মাফ আছে কিন্তু গরীরের সুদের কিস্তিতে কোন মাফ নেই। এখন সে কীভাবে কিস্তি দেবে আর কীভাবে বাড়িতে খাবার নিয়ে যাবে।
তুহিন সকালে যা নাস্তা করেছিলো তা আর তার পেটে নেই। তাই রোদের সঙ্গে সঙ্গে তারও মেজাজ খারাপ হতে থাকে। এই দুঃখের ভিডিও দেখেও তার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। সে শামসুদ্দিনকে ফোন করে জানিয়ে দেয়, আজ তাহলে সে মেডিকেলের সামনে থেকে চলে যাচ্ছে।
Leave a Reply