ঢাকার কারওয়ানবাজারে দৈনিক প্রথম আলোর কার্যালয়ের সামনে কর্মসূচি পালন করেছেন একদল মানুষ৷ এর আগে আরেকটি দৈনিক পত্রিকা দ্য় ডেইলি স্টারের সামনেও একই ধরনের কর্মসূচি পালন হয়েছে৷
বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ‘ভারতীয় আগ্রাসন প্রতিরোধে’ প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ‘তওবা করানোর জন্য’ এ জিয়াফত কর্মসূচির আয়োজন করা হয়৷ বাংলা ট্রিবিউন তাদের প্রকাশিত সংবাদে জানিয়েছে, ‘বাংলাদেশের জনগণ’ ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন মাদ্রাসা ও ইসলামিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী৷
কর্মসূচির অংশ হিসাবে রোববার বেলা সাড়ে বারোটার দিকে অংশগ্রহণকারীরা প্রথম আলোর সামনে একটি গরু জবাই করে সেখানেই রান্না করে খান৷
আয়োজনকারীদের দাবি, প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার বাংলাদেশে ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে এবং ইসলামবিরোধী অবস্থান নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করে।
সন্ধ্যায় একাধিক বিক্ষোভকারীকে আটক করে পুলিশের গাড়িতে তুলতে দেখা যায়
দিনব্যাপী এই অবস্থানে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের দেখা গেছে আয়োজনকারীদের ঘিরে অবস্থান নিতে। সন্ধ্যার পর পুলিশ বিক্ষোভকারীদের প্রথম আলোর সামনে থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করলেও তারা রাজি হননি৷ দৈনিক প্রথম আলো তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ‘‘প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনের সড়কে আজ রোববার দিনভর অবস্থান নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে একদল ব্যক্তি৷ এতে রাজধানীর বৃহত্তম কাঁচাবাজারের আড়ত কারওয়ান বাজারের প্রধান সড়কটিতে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বারবার তাদের সরে যাওয়ার অনুরোধ করে।
প্রথম আলোর কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা৷
পরে সন্ধ্যায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে যৌথ বাহিনী তাদের সরিয়ে দেয়। এ সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে৷’’
প্রথম আলো আরো জানিয়েছে, দুপুর ১২টার কিছু আগে ১৫-২০ জনের একটি দল একটি গরু নিয়ে সংবাদমাধ্যমটির কার্যালয়ের সামনে আসার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়৷ বেলা আড়াইটার দিকে তারা আবার প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে আসার চেষ্টা করে এবং পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়ায়৷ এরপর তারা কারওয়ান বাজারের ভেতরের প্রধান সড়কে বসে পড়ে এবং সেখানে একটি গরু জবাই করে৷ এরপর থেমে থেমে প্রথম আলোর বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে। সন্ধ্যা নাগাদ বিশৃঙ্খলাকারীদের সংখ্যা বেড়ে ৫০-৬০ জনে দাঁড়ায়৷
বিক্ষোভকারীরা কারওয়ান বাজারের আম্বর শাহ (রঃ) মসজিদের ভেতরে অবস্থান নেন
বেশ কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলের সরাসরি সম্প্রচারে দেখা গেছে কয়েকজন বিক্ষোভকারী আবার প্রথম আলোর সামনে আসার চেষ্টা করলে পুলিশের লাঠিপেটায় তারা আর সেখানে দাঁড়াতে পারেননি৷
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ডয়চে ভেলের চিত্রগ্রাহক একাধিক বিক্ষোভকারীকে আটক করে পুলিশের গাড়িতে তুলতে দেখেছেন৷ বাংলাদেশ সময় রাত সোয়া আটটার দিকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দলও সেখানে অবস্থানরত পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে যোগ দেয়৷
স্থানীয় সময় রাত নয়টায় বিক্ষোভকারীদের রান্না করা গরুর মাংস ও বিরিয়ানি খাওয়ার জন্য কারওয়ান বাজারের আম্বর শাহ (রঃ) মসজিদের ভেতরে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী৷
কিন্তু এরপরও পুলিশের সাথে আরেক দফা আন্দোলনকারীদের ধাওয়ার ঘটনা ঘটে৷
রাত নয়টার দিকে কারওয়ান বাজারে আসেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী৷ তিনি প্রথম আলো কার্যালয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন৷ প্রায় ৪৫ মিনিট পর তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন৷ এসময় গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে তিনি কোন কথা বলেননি৷
ডিডাব্লিউ ডটকম
Leave a Reply