শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৪ পূর্বাহ্ন

সোনাদিয়া দ্বীপে বেজার ইকো-ট্যুরিজম পার্কের কার্যক্রম স্থগিত

  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪, ৬.৪০ পিএম

নিজস্ব প্রতিনিধি

কক্সবাজারের মহেশখালীর সোনাদিয়া দ্বীপে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) ইকো-ট্যুরিজম পার্ক গড়ে তোলার শর্তে সরকারের অনুকূলে ৯ হাজার ৪৬৭ একর জমির বরাদ্দ স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। মাত্র ১ হাজার ১ টাকা সেলামিতে বেজাকে এ বরাদ্দ দিয়েছিল জেলা প্রশাসন।
এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে বেলার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস হাসানুল বান্না। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন। আদেশের পর হাসানুল বান্না গনমাধ্যমকে বলেন, সোনাদিয়ায় দ্বীপটি ইকোলজিক্যাল এলাকা। আর বেজা সেখানে পর্যটনের নামে অর্থনৈতিক জোন করতে চায়। বেশকিছু গাছপালা কাটা হয়েছে। বিষয়টি নজরে আসার পর গত অক্টোবরে এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিটটি করা হয়। হাইকোর্ট রিটের শুনানি নিয়ে জমির বরাদ্দ কার্যকারিতা ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেছেন।

এর আগে, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এ বিষয়ে রিট দায়ের করে। বেলা জানায়, সোনাদিয়া দ্বীপের ৯ হাজার ৪৬৭ একর জমি ইকো পার্ক নির্মাণের জন্য দেওয়া হয় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে। এটি দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশ এবং অর্থনীতিতে ইতিবাচক অবদান রাখবে বলে মনে করেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী। মহেশখালী উপজেলার এ দ্বীপেই গড়ে তোলা হচ্ছে দেশের বৃহত্তম ইকো-ট্যুরিজম পার্ক। পরিকল্পিত ইকো-ট্যুরিজম পার্ক গড়ে তুলতে তৈরি করা হচ্ছে মাস্টারপ্ল্যান। মাহিন্দ্র ইঞ্জিনিয়ারিং নামে ভারতের একটি প্রতিষ্ঠান এই মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কাজ করছে।
মাত্র ১ হাজার ১ টাকা সেলামিতে বেজাকে এ বরাদ্দ দেয় জেলা প্রশাসন। এক সময় সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর গড়ে তোলার চিন্তা করা হলেও তা থেকে সরে এসে ইকো-ট্যুরিজমের মাধ্যমে দ্বীপটিকে অর্থনৈতিক জোন হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ অনুযায়ী এ দ্বীপের পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এমন কর্মকান্ড নিষিদ্ধ।

দ্বীপটিতে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটাতে দ্বীপবাসীর সম্পৃক্ততায় কমিউনিটিভিত্তিক ইকো-ট্যুরিজমের সুযোগ রয়েছে। তবে মাস্টারপ্ল্যানে দীর্ঘমেয়াদের পর্যটন পরিকল্পনায় সোনাদিয়াকে কীভাবে সাজানো হচ্ছে তার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে বলে জানিয়েছিলেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান।
জানা গেছে, সোনাদিয়া ইকো-ট্যুরিজম পার্ক মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়া, বিজয় একাত্তর ও সমুদ্র বিলাস মৌজায় অবস্থিত। মোট জমির পরিমাণ ৯ হাজার ৪৬৭ একর। বিদেশি পর্যটক আকর্ষণে বেজা টেকনাফ ও মহেশখালী উপজেলায় মোট ১১ হাজার একর জমি নিয়ে তিনটি পর্যটন পার্কের উন্নয়ন কাজ শুরু করে ২০১৬ সালে। এর মধ্যে ৯৬৭ একর জমিতে সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক, ২৭১ একর জমিতে নাফ ট্যুরিজম পার্ক ও ৯ হাজার ৪৬৭ একর জমিতে সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম পার্ক তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এর মধ্যে মাত্র ১ হাজার ১ টাকা সেলামিতে সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম পার্ক তৈরির জন্য বেজাকে ২০১৭ সালে ওই জমি বরাদ্দ দেয় জেলা প্রশাসন। বরাদ্দের শর্তে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ অনুযায়ী এ দ্বীপের পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এমন কর্মকান্ড নিষিদ্ধ করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় পার্ক উন্নয়নের কার্যক্রমও গ্রহণ করে বেজা। এরইমধ্যে গত ২৮ অক্টোবর সোনাদিযায় ইকো ট্যুরিজম পার্ক তৈরির কার্যক্রম চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024