সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “চলমান পরিস্থিতিতে সতর্ক থাকতে বলেছে বিএনপি, ধৈর্য ধরতে বলল জামায়াত”
ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘাত, হানাহানিসহ নানা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সবাইকে ‘সজাগ ও সতর্ক’ থাকতে বলেছে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। একই আহ্বান জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামীও। দল দুটির নেতারা মনে করছেন, এসবের পেছনে পতিত স্বৈরাচার এবং দেশের ভেতরে ও বাইরে তাদের দোসররা নেপথ্যে থেকে ষড়যন্ত্র করছে।
কয়েক দিন ধরে রাজধানীতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ, ছাত্র সংঘর্ষ, ঢাকার বাইরে থেকে শাহবাগে লোকজন জড়ো করা, দেশের দুটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্রের কার্যালয় ঘিরে কর্মসূচি পালনের মতো নানা ঘটনায় অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। এর মধ্যেই গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামে আদালত এলাকায় সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় সাইফুল ইসলাম নামের এক আইনজীবী খুন হন। পরপর সংঘটিত এসব ঘটনায় বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা মনে করি, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের যে অর্জন, সেটিকে ম্লান করে দেওয়ার জন্য পরাজিত ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী গভীর ষড়যন্ত্র করছে। এই ঘটনা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে সবাইকে শান্ত থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
নিহত আইনজীবীকে ‘প্রিয় দলীয় সহকর্মী’ হিসেবে উল্লেখ করে এই হত্যার ঘটনার বিচার দাবি করেছে জামায়াতে ইসলামী। এক বিবৃতিতে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরে যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, তা অত্যন্ত জঘন্য এবং নিন্দনীয় অপরাধ। একটি গোষ্ঠী পতিত স্বৈরাচারের পক্ষ নিয়ে বাংলাদেশকে অস্থির করার জন্য ক্রমাগতভাবে দুরভিসন্ধি ও অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশকে অস্থির করে তুলতে চায়।
দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম “আইএমএফ মিশন আসছে ৪ ডিসেম্বর”
আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের তৃতীয় কিস্তি অর্থ ছাড়ের শর্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়ে আলোচনা করতে একটি মিশন আগামী ৪ ডিসেম্বর ঢাকায় আসছে।
মিশনটি নতুন অন্তর্বর্তী সরকার যে আরও অতিরিক্ত ৩০০ কোটি ডলার চেয়েছে তার বিষয়েও আলোচনা করবে। মিশনটি ওয়াশিংটনে ফিরে গিয়ে প্রধান কার্যালয়ে একটি প্রতিবেদন উপম্থাপন করবে। সেই প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করছে চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড় ও বাড়তি সহায়তার পাওয়ার বিষয়টি।
সূত্র জানায়, আইএমএফের এবারের মিশনটি বেশ বড় হচ্ছে। কমপক্ষে ১০ সদস্যের এই মিশনটি এবার ১৪ দিন ঢাকায় অবস্থান করবে। এবারের মিশনে নেতৃত্ব দেবেন আইএমএফের গবেষণা বিভাগের ডেভেলপমেন্ট ম্যাক্রোইকোনমিকসের প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও।
এর আগের মিশনেও তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ওই সময়ে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাংলাদেশ পেট্রোরিয়াম কর্পোরেশনসহ (বিপিসি) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় ও সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করবে।
বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “ন্যূনতম খাদ্য গ্রহণে খরচ করতে হচ্ছে দারিদ্র্যসীমার ব্যয়ের চেয়ে প্রায় ৭০% বেশি”
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে সুস্থভাবে জীবনধারণের জন্য প্রতিদিন যে পরিমাণ খাদ্যশক্তি (২ হাজার ১০০ কিলোক্যালরি) গ্রহণ করতে হয়, তাতে প্রতি মাসে ব্যয় হওয়ার কথা ১ হাজার ৮০০ টাকা। সরকারিভাবে এটিকেই ফুড পোভার্টি লাইন বা খাদ্য দারিদ্র্যসীমা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত এক হিসাব অনুযায়ী, জীবন ধারণের জন্য ন্যূনতম খাদ্যশক্তিসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে এখন প্রতি মাসে মাথাপিছু ব্যয় করতে হচ্ছে ৩ হাজার ৫১ টাকা। সে অনুযায়ী, সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ন্যূনতম খাবার গ্রহণে একজন মানুষের ব্যয় হচ্ছে খাদ্য দারিদ্র্যসীমার চেয়ে ৬৯ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।
টানা ছয় মাস ধরে ১০ শতাংশের ওপরে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার। সর্বশেষ গত মাসেও তা ছিল ১২ শতাংশের বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে প্রচুর মানুষ আছে, যারা দারিদ্র্যসীমার ওপরে বসবাস করলেও অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছেন। অর্থনৈতিক সামান্য ধাক্কা বা অভিঘাতেই তাদের দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে আসার জোর আশঙ্কা রয়েছে। অর্থনীতিবিদদের আনুমানিক হিসাবে এর পরিমাণ অন্তত দুই কোটি। বর্তমান পরিস্থিতিতেও এরাই সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছেন। চিকিৎসা ও পড়াশোনার ব্যয় কমিয়ে তা দিয়ে পুষ্টি ব্যয় নির্বাহের চেষ্টাও করছেন অনেকে। এ পরিস্থিতিতে এখন রোগ-বালাই ও অশিক্ষা বেড়ে গিয়ে সামগ্রিকভাবে সমাজের অর্থনৈতিক উৎপাদন সক্ষমতাও কমে আসার জোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিবিএসের হিসাবে, একজন মানুষের দৈনিক ন্যূনতম ২ হাজার ১০০ কিলোক্যালরি গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় খাবারের সেট বা ফুড বাস্কেট গঠন হয় মৌলিক ১১টি খাদ্যের পরিমিত হিসাব বিবেচনায় নিয়ে। এ ১১ খাদ্যপণ্যের মধ্যে রয়েছে চাল, গম, ডাল, দুধ, ভোজ্যতেল, মাছ, মাংস, আলু, অন্যান্য সবজি, চিনি ও ফল। খানা আয়-ব্যয় জরিপ ২০২২ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ন্যূনতম ক্যালরি অনুপাতে দৈনিক নির্ধারিত পরিমাণে এসব খাবার খেতে হলে একজন মানুষকে কমপক্ষে ১ হাজার ৮০০ টাকা খরচ করতে হবে। এর কম ব্যয়ে একজন মানুষের পক্ষে প্রয়োজনীয় পুষ্টির সংস্থান করা অসম্ভব।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “বিক্ষোভ মিছিল-গায়েবনা জানাজা ঢাবিতে”
ইসকন সমর্থকদের হামলায় চট্টগ্রাম জজ কোর্টের আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। নিহত এই আইনজীবীর গায়েবানা জানাযাও আদায় করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যার খবরে সন্ধ্যার পর থেকেই ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। পরে ছাত্র অধিকার পরিষদ,ইসলামী ছাত্র আন্দোলন,স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংসদসহ বিভিন্ন সংগঠন ইনকিল্যাব মঞ্চের ব্যানারে মশাল মিছিল নিয়ে টিএসতিতে অবস্থান নেয়। বিক্ষোভকারীদের ‘ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দাও রুখে দাও’, ‘উগ্রবাদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’, ‘ইসকন সনাতন এক নয় এক নয়’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই, ইসকনের রক্ষা নাই’, ‘সন্ত্রাসীদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’ স্লোগান দিতে দেখা যায়।
পরে লোহাগাড়া-সাতকানিয়া ছাত্র ফোরামে আয়োজনে সবাই গায়েবানা জানাজায় অংশ নেন। জানাযার শেষে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীর একটি মিছিল ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রশিক্ষণ শেষে ভিসি চত্বরের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।
বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, আজ চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যা করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করছে।দেশকে অস্থিতিশীল করতে পতিত আওয়ামী লীগ ও ভারতীয় ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক আলীফ বলেন, ইসকন একটি উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন।তাদের কর্মকান্ড নিয়ে অনেক অভিযোগ আছে। পৃথিবীর বহু দেশে ইসকন নিষিদ্ধ। এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর দ্রুত বাংলাদেশেও এই সংগঠনকে নিষিদ্ধের দাবি জানান তিনি। তিনি বলেন,সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করে দিয়ে কেউ যদি বাংলাকে উত্তপ্ত করতে চায় তাহলে তাদের বিষ দাঁত উপড়ে ফেলা হবে।
Leave a Reply